|
|
|
|
মহিলাদের সমবায় ব্যাঙ্ক চম্পাসারিতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
স্বামীর মুদি দোকানটা দাঁড় করাতে শেফালি বিশ্বাসের মাত্র পাঁচ হাজার টাকা ঋণ দরকার। সরকারি ব্যাঙ্কে সেই ঋণ আদায় করতে গিয়ে নাকাল হতে হয়েছে শেফালি দেবীকে। বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রতি মাসে সুদ দিতে হবে জেনে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। বেসরকারি ব্যাঙ্কের সুদের হার চড়া হওয়ায় বাসন্তী দে বাড়ির ছাদ পাকা করার জন্য কয়েক হাজার জোগাড় করতে পারছেন না। টাকার জন্য আর কারও হাতেপায়ে না-ধরে নিজেরাই একটি ব্যাঙ্ক গড়ে তুললেন শিলিগুড়ির চম্পাসারির সমরনগর এলাকার শেফালি বিশ্বাস, বাসন্তী দে, জিতারানি রায়, রাধা সরকার, অনিতা রায়, ডলি সরকারেরা। সোমবার অনুষ্ঠান করে এলাকার ২৭৫ জন মহিলা মিলে চালু করলেন মহিলা সমবায় ব্যাঙ্ক। তাঁরাই ব্যাঙ্ক পরিচালনা করবেন। ঋণও পাবেন এলাকার মহিলারাই। এদিন শিলিগুড়ি মহিলা কোঅপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড নামে ওই ব্যাঙ্কের উদ্বোধন করেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার নিতাই কার্জি। অনুষ্ঠানে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক অনিরুদ্ধ বসু, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য খগেন রায়-সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। ব্যাঙ্কের সভাপতি জিতারানি রায় বলেন, “নানা ধরনের বেসরকারি ব্যাঙ্কের সুদ মেটাতে গিয়ে মহিলারা সমস্যায় পড়ছেন। সেই জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই এই ধরনের একটি ব্যাঙ্কের কথা ভাবা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এলাকার মহিলাদের সমবেত করা গিয়েছে। আশা করি, এই ব্যাঙ্ক এলাকার বহু মহিলার আর্থিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারবে।” এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যও মহিলাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য হিসাবে এলাকার মহিলাদের ঋণ সংগ্রহের সমস্যার বিষয়টি আমরাও কিছুটা জানা। এই ধরনের উদ্যোগ যাতে সফল হয় সেই জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও আমরা সমস্ত রকম ভাবে সাহায্য করব।” জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্ক অনুমোদিত মহিলাদের এই ব্যাঙ্কের ২৭৫ জন সদস্যা ২৫০ টাকা করে শেয়ার নিয়েছেন। এ ছাড়া সদস্য হিসাবে ১১ টাকা করে চাঁদা দিয়েছেন। প্রাথমিক মূলধন বলতে এটাই। ঋণ নেওয়া ছাড়াও মহিলারা রেকারিং, সেভিংস এবং ফিক্সড ডিপোজিট প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে পারবেন। ঋণ নিতে গেলে মহিলাদের বছরে সাধারণ ব্যাঙ্কের চেয়ে দশমিক পাঁচ শতাংশ হারে কম সুদ দিতে হবে। টাকা জমা দিলে সাধারণ ব্যাঙ্কের চেয়ে দশমিক পাঁচ শতাংশ হারে বেশি সুদ মিলবে। অনিতা দেবী বলেন, “চিটফাণ্ডের মতো ব্যাঙ্ক ঋণের ফাঁদে জড়ানোর ভয় নেই। টাকা মারের ভয়ও নেই। আরও মহিলাদের যাতে এই ব্যাঙ্কে সামিল করতে পারি সে চেষ্টা করব।” |
|
|
|
|
|