জমি নিয়ে বিবাদকে ঘিরে দুটি এলাকার সংঘর্ষে গুরুতর জখম হয়েছেন ৭ জন। দুটি এলাকাতেই হানা দিয়ে পুলিশ উদ্ধার করেছে দু’রাউন্ড গুলি-সহ একটি ওয়ান সাটার বন্দুক, ৬টি তাজা বোমা, তির-ধনুক-সহ ধারাল অস্ত্র। গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে। মালদহের চাঁচলের মালাহার ও ধন্জনা এলাকায় রবিবার ওই ঘটনা দুটি ঘটে। মালাহারে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে বেলাল হোসেন ও দুলাল হোসেনের মধ্যে। সম্পর্কে তারা সৎ ভাই। ধন্জনায় দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে শ্যালক ও ভগ্নিপতির মধ্যে। সংঘর্ষের সময় ভাইকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করায় বাসিন্দারাই মারধর করে বেলাল হোসেনকে বেঁধে রাখার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। দুটি ঘটনায় জখমদের চাঁচল ও মালতিপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চাঁচলের আই সি সাগর সাহা বলেন, “দুটি এলাকাতেই জমি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের জেরে দু’তরফে সংঘর্ষ হয়। দুটি এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা মজুত করে পরিকল্পিত ভাবেই সংঘর্ষের ছক করা হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে।” পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন প্রথম ঘটনাটি ঘটে মালাহারে। পাশাপাশি বাড়ি দুই ভাই বেলাল ও দুলাল হোসেনের। বাড়িতে ঢোকার রাস্তা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। এদিন তা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পরিবারের সদস্যরা। সংঘর্ষে দুলাল হোসেনের মাথা ফেটে যায়। আবার দুলাল হোসেনের দলবলের মারে বৌদি শেফালি বিবি গুরুতর জখম হন বলে অভিযোগ। স্ত্রীকে মার খেতে দেখে ঘর থেকে ওয়ান সটার বন্দুক বের করে ভাই দুলালকে মারতে যান বেলাল। তাঁর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখে ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা বেলালকে ধরে ফেলেন। তাকে বেঁধে শুরু হয় মারধর। পুলিশ গিয়ে অস্ত্র-সহ বেলালকে গ্রেফতার করে। অন্য দিকে বৌদিকে মারধর করার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে দুলাল হোসেনকেও। জমির দখল নিয়ে শ্যালক, ভগ্নিপতির মধ্যে সংঘর্ষের দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ধন্জনা এলাকায়! ভগ্নিপতি মমতাজ হোসেন শ্যালক মোজাম্মেল হক ও মানুয়ার আলির কাছ থেকে একটি জমি কিনেছিলেন। সেজন্য ৪৫ হাজার টাকার মধ্যে ৮ হাজার টাকা অগ্রিমও দেন। আরও বেশি দাম পেয়ে শ্যালকরা ওই জমি অন্য একজনের কাছে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ। সেকথা ভগ্নিপতি মমতাজ হোসেনের জানা ছিল না। এদিন মমতাজ তার ছেলেদের নিয়ে ওই জমিতে চাষ করতে যান। ওই সময় দুই শ্যালক দলবল নিয়ে ভগ্নিপতির উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন ভগ্নিপতি মমতাজ-সহ তার ছেলে আনেশ আলি, স্ত্রী আনোয়ারা বিবি, জামাই ফরিদ আলি। প্রত্যেককেই চাঁচল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ জমির পাশ থেকে উদ্ধার করে বোমা, তীর-ধনুক ও ভোজালি। ঘটনার পরই দুই শ্যালক এলাকা ছেড়ে পালান। গ্রেফতার করা হয় জাকির হোসেন ও আরিফুল হক নামে ভাড়া করা দুই দুষ্কৃতীকে। |