ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ মালদহের পরিত্যক্ত বিমানঘাঁটিকে পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব দিয়েছে। পরিত্যক্ত ওই বিমানঘাঁটিকে নতুন করে বিমান পরিষেবা চালু করা নিয়ে কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরির সঙ্গে তাঁরই দলের ইংরেজবাজারের বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর চাপানউতোর শুরু হয়েছে। ওই বিমানঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার প্রস্তাব আসার পরে মালদহের জেলাশাসক শ্রীমতী অর্চনা ৩ নভেম্বর জেলার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। জেলাশাসক, “বর্তমান বিমানবন্দর পুনরুজ্জীবিত করার ব্যাপারে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকের পরই বোঝা যাবে বতর্মান বিমানবন্দর চালু করতে গেলে কতটা জমির প্রয়োজন।” কয়েক মাস আগে ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তার নের্তৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মালদহে বর্তমান বিমানবন্দর ও তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা খতিয়ে দেখেন। ওই প্রতিনিধি দলের বক্তব্য ছিল, পরিত্যক্ত বিমানবন্দরে পুনরায় বিমান নামানো সম্ভব নয়। কেননা, দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত হয়ে থাকার ফলে বিমানবন্দর ঘিরে বহুতল বাড়ি, উঁচু মোবাইল টাওয়ার, ইটভাটার চিমনি গজিয়ে উঠেছে। তবে সম্প্রতি ওই প্রতিনিধি দল মত বদলে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বতর্মান বিমানবন্দরকেই পুনরুজ্জীবিত করে তোলা হবে। এর জন্য বতর্মান বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় ৬১ একর জমি অধিগ্রহণ করে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। আর এখানেই জেলার সাংসদ তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি এবং কংগ্রেস বিধায়কের চাপানউতোর শুরু হয়েছে। ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নতুন করে পাঠানো প্রস্তাবে জেলার সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি সহমত পোষণ করেছেন। কিন্তু আপত্তি জানিয়েছেন ইংরেজবাজারের কংগ্রেস বিধায়ক কুষ্ণেন্দু চৌধুরি। কংগ্রেস সাংসদের বক্তব্য, “বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন যে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন তার সাথে আমি একমত। |
পুরাতন বিমানঘাঁটি সংস্কার করে চালু করা গেলে বহু বির্তক এড়ানো যাবে।” কংগ্রেস বিধায়ক বলেন, “পৃথিবীর কোথাও শহরের মধ্যে বিমানবন্দর নেই। শহরের মধ্যে বিমানবন্দর চালু সম্পূর্ণ অবাস্তব ও অবৈজ্ঞানিক। বর্তমান পরিত্যক্ত বিমানবন্দরে যদি পরিষেবা চালু করা হয় তবে সেখানে ছোট বিমান ছাড়া আর কিছুই চালানো যাবে না। যারা ওই পরিত্যক্ত জমিতে ফের বিমানঘাঁটি চালু করতে চাইছেন তাদের দূরদৃষ্টিতার অভাব রয়েছে।”
বিমানবন্দর চালু করতে যে জমি অধিগ্রহন করার কথা ভাবা হচ্ছে বতর্মানে সেখানে ৮-১০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। তাদের পুনর্বাসন না-দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে কংগ্রেস বিধায়কের বক্তব্য। তিনি জানান, ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কয়েক মাস আগে লক্ষ্মীপুর ও বেহুলা নদীর ধারে বিমান বন্দরের জন্য দুটি জমি দেখেছিলেন। সেখানে বিমানবন্দর গড়ে উঠলে শুধু মালদহই নয়, আশেপাশের জেলার পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে বহু নাগরিক মালদহ থেকে বিমান ধরে সরাসরি কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই যেতে পারবেন। মালদহের আম, লিচু বিমান পথে সরাসরি বিদেশে রফতানি করা যাবে। ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বতর্মানে মালদহ বিমানবন্দরটি খাতায় কলমে ১৫৫ একর জমির উপর থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকায় বেশ কিছু পরিমাণ জমি বেদখল হয়ে গিয়েছে। |