মাত্র চার মাস রাজ্যের ক্ষমতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ৫ শতাংশ শিশুমৃত্যুর হার কমিয়েছে বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিন কয়েক আগে ৩৬ ঘণ্টায় ১০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় ১২টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দু’টি ঘটনাতেই ক্ষোভ রয়েছে শিশুদের আত্মীয়দের। মাস তিনেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, জেলা থেকে রোগী রেফার করার প্রবণতা না কমালে সঠিক পরিষেবা দেওয়া যাবে না। কমানো যাবে না শিশুমৃত্যুর হারও। সেই বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেন তিনি। তার পরেও যে পরিস্থিতি বদলায়নি, দু’টি হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর ঘটনাতে তা পরিষ্কার।
রবিবার সন্দেশখালির আগারআটিতে শ্রীরামকৃষ্ণ মা সারদা স্বাস্থ্য পরিষদ পরিচালিত রঙ্গনাথানন্দ গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগের উদ্বোধন করতে এসে সুদীপবাবু অবশ্য ওই দাবি করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সজাগ। শিশুর জন্মের আগে মায়েদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ভাল খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। তা হলে শিশুমৃত্যুর হার কমবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দফতর
নিজের হাতে রাখেননি। এ থেকেই পরিষ্কার মমতা মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে কতটা চিন্তিত।” এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আরও উন্নতির জন্য কেন্দ্রীয় স্তর
থেকে সাহায্যের চেষ্টার আশ্বাসও দিয়েছেন সুদীপবাবু। |
সন্দেশখালিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগ উদ্বোধনে বিশিষ্টজনেরা। ছবি: নির্মল বসু |
সুন্দরবন এলাকার গরিব মানুষদের অল্প খরচে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষে দেড় বছরে গড়া হয়েছে ২০ শয্যার তিনতলা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। থাকছে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার, এক্স-রে, ফিজিওথেরাপি, রক্ত ও ইসিজি পরীক্ষার ব্যবস্থা। সর্ব ক্ষণের জন্য এক জন চিকিৎসকও থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্যতম উদ্যোক্তা চিকিৎসক সুব্রত মৈত্র। আগেই অবশ্য এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বহির্বিভাগ চালু হয়েছে। ছানি অস্ত্রোপচারও হচ্ছে। এ জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের বহু মানুষ সাহায্য করেছেন জানিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “ইতিমধ্যে এলাকার প্রায় আড়াই হাজার মানুষের স্বাস্থ্যবিমা করে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম-সহ একটি স্পিড বোটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
সুদীপবাবুর সঙ্গেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন স্বামী বিবেকানন্দ পৈতৃক ভিটে ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের সম্পাদক স্বামী শিবময়ানন্দ। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, যুব কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, অভিনেত্রী মুনমুন সেন প্রমুখ। |