‘অটোপসি সার্জন’-এর অভাব
ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেতে হয়রান মৃতের পরিবার
য়না -তদন্তের রিপোর্ট পেতে নাজেহাল হচ্ছেন মৃতের আত্মীয়েরা। এমনই অবস্থা চলছে উলুবেড়িয়া মহকুমার সাতটি এবং হাওড়া সদর মহকুমার দু’টি থানা এলাকায়। আইনানুযায়ী ময়না -তদন্ত হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে মৃতের আত্মীয়দের হাতে রিপোর্ট তুলে দেওয়ার কথা। বাস্তবে রিপোর্ট পেতে সময় লেগে যাচ্ছে কমপক্ষে এক মাস। অনেক সময় এই রিপোর্ট পেতে ছয় মাসও সময় লাগছে বলে অভিযোগ।
উলুবেড়িয়া মহকুমার উদয়নারায়ণপুর, আমতা, জয়পুর, বাগনান, শ্যামপুর, উলুবেড়িয়া, বাউড়িয়া এই সাতটি এবং হাওড়া সদর মহকুমার পাঁচলা সাঁকরাইলের আংশিক এলাকায় যে সব অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে সেই সব দেহের ময়না তদন্ত হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। আইনানুযায়ী, ময়না -তদন্ত হয়ে যাওয়ার পরেই সংশ্লিষ্ট থানা থেকে মৃতদেহের সঙ্গে যে কনস্টেবল যান তাঁর হাতেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক রিপোর্ট লিখে দিয়ে দেবেন। মৃতের আত্মীয়েরা পুলিশের কাছে আবেদন করলে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে সেই রিপোর্ট। সব মিলিয়ে সময় লাগার কথা দু’দিন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা হয় না বলে অভিযোগ।
মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, রিপোর্ট পেতে তাঁদের যে শুধু দেরি হয় তা নয়, পুলিশ এবং হাসপাতাল এই দু’টি জায়গায় যাতায়াত করতে গিয়ে তাঁদের হয়রানও হতে হয়। তবে রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ার জন্য অনেকাংশে হাসপাতালকেই দায়ী করেছেন মৃতের পরিবারের লোকজন। তাঁরা জানান, থানায় রিপোর্ট আনতে গেলে তাঁদের জানানো হয় হাসপাতাল থেকে সেগুলি আসেনি। তার ফলেই রিপোর্ট দেওয়া যাচ্ছে না।
সময়মতো রিপোর্ট না -পাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ মামলায় ময়না -তদন্তের রিপোর্ট প্রয়োজন হলে মৃতের আত্মীয়েরা তা সময়মতো দাখিল করতে পারেন না। শুধু তাই নয়, ময়না -তদন্তের রিপোর্ট না -মেলায় পাওয়া যায় না পঞ্চায়েত বা পুরসভা থেকে ‘ডেথ সার্টিফিকেট।’ ফলে মৃতের আত্মীয়দের বিমার টাকা পেতে দেরি হয়। প্রসঙ্গে উলুবেড়িয়ার এসডিপিও তন্ময় সরকার বলেন, “ময়না -তদন্তের রিপোর্ট যাতে দ্রুত দিয়ে দেওয়া হয় তার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা নিয়মিত বৈঠক করি। তবে হাসপাতালেরও কিছু সমস্যা রয়েছে।”
অন্যদিকে, উলুবেড়িয়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে কোনও ‘অটোপসি সার্জন’ নেই। সমস্যা হচ্ছে সেই কারণেই। ‘অটোপসি সার্জন’-এর কাজ হল শুধুমাত্র ময়না -তদন্ত করা। তাঁদের চিকিৎসা সংক্রান্ত অন্য কোনও কাজ করতে হয় না। ফলে সময়মতো তাঁরা রিপোর্টও দিয়ে দিতে পারেন। মাঝে একবার অটোপসি সার্জন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বছরখানেক আগে তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়। ফলে বর্তমানে হাসপাতালে ‘অটোপসি সার্জন’ না -থাকায় অন্য চিকিৎসকদের দিয়ে ময়না -তদন্ত করানো হয়। তাঁরা আবার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত থাকেন। বেশিরভাগ সময়ে ময়না -তদন্ত করার পরেই তাঁদের ছুটতে হয় হাসপাতালে। ফলে সময়মতো তাঁরা ময়না -তদন্তের রিপোর্ট লিখতে পারেন না। ময়না -তদন্ত করে সঙ্গে সঙ্গে যাতে চিকিৎসকেরা রিপোর্ট লিখতে পারেন সেই কারণে মর্গেই রাখা হয়েছে চেয়ার টেবিল। কিন্তু সেটি ফাঁকাই পড়ে থাকে।
হাসপাতালের সুপার গৌরাঙ্গসুন্দর জানা বলেন, “যে সব চিকিৎসক ময়না -তদন্ত করতে আসেন তাঁরা বহির্বিভাগ বা জরুরি বিভাগও সামলান। ফলে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট তাঁরা লিখতে পারেন না। অটোপসি সার্জন নিয়োগ করা হলে তবেই এই সমস্যা মিটবে।” অটোপসি সার্জন চেয়ে ইতিমধ্যেই উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সুপার জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.