পরিস্রুত পানীয় জল থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, সেচ, প্রায় সব ক্ষেত্রেই পরিষেবা অমিল হয়ে পড়েছে। তাতেই ক্ষোভ বাড়ছে শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ২ নম্বর বিধাননগর পঞ্চায়েত এলাকায়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামোন্নয়নে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হলেও পঞ্চায়েত, প্রশাসনের বাস্তব পরিকল্পনা ও সদিচ্ছার অভাবে গ্রামগুলিতে উন্নয়ন ঘটছে না।
এলাকায় যে উন্নয়ন থমকে রয়েছ তা স্বীকার করে নিয়েছেন বিধাননগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের জগদীশ সিংহ। জগদীশবাবুর দাবি, “পঞ্চায়েতের সীমিত ক্ষমতায় আমরা যতটা পেরেছি কাজ করেছি। করছিও। তবে এলাকার বেশির ভাগ সংসদ এলাকাতেই অনেক সমস্যা আছে। উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে না। এর জন্য আমরা প্রশাসনকে দায়ী করছি। প্রতি বছরে বিভিন্ন উন্নয়মূলক কাজে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রস্তাব ও পরিকল্পনা জমা দিয়ে থাকি। তার বেশির ভাগই ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে থাকে। বাসিন্দাদের কাছে আমাদের নানা জবাবদিহি করতে হয়।”
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সংসদ সংখ্যা ১৪। ছোট-বড় মিলে অন্তত ৬০টির উপর গ্রাম রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সব গ্রামেই বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। বুকধোলা, মেজমানগছ, মালাগছ, বিজলিমণি, খারুডাঙ্গি এলাকায় স্থানীয় বালাসন নদীতে সেতুর খুবই দরকার। প্রশাসনে বহুবার দাবি জানিয়েও সেতু হচ্ছে না। সেতু না থাকার ফলে নদীর দুই পাড়ের কয়েকটি গ্রামের মানুষের পারাপারে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। সমস্যায় পড়ছে স্কুল পড়ুয়ারা।
পানীয় জলের জন্য ভোটের আগে বিজলিমণি এলাকায় শিলিগুড়ি মহকুমার তরফে ‘সজলধারা’ করা হবে বলে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। সে কাজ এখনও শুরুই হয়নি। এলাকার কোথাও সেচের সেচের ব্যবস্থা নেই। কিছু কিছু কৃষি প্রধান এলাকায় নদী থেকে জল উত্তোলন করে সেচের ব্যবস্থা করা হলেও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের ওই সব প্রকল্পও অকেজো হয়ে পড়ে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে।
এলাকায় মাত্র তিনটি মাত্র উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র তার উপর নির্ভর করে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের গ্রামের সাধারণ মানুষকে ওই কেন্দ্রগুলিতে ছুটতে হয়। এলাকার কোথাও বাংলা মাধ্যম হাইস্কুল নেই। একমাত্র একটি মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র ছাড়া আর কোথাও নেই মাধ্যমিক কেন্দ্র নেই। নতুন করে কোথাও কোনও পাকা রাস্তা হয়নি। পঞ্চায়েত-প্রশাসনে বহুবার দাবি জানিয়েও ডাঙাপাড়া এলাকায় পাকা রাস্তা হয়নি। কয়েকটি গ্রামের চলাচলের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে ভেঙেচুরে গিয়ে বেহাল পড়ে। |