|
|
|
|
অনাড়ম্বর ভাবে সম্মেলন করার নির্দেশ দিলেন বিমান বসু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শুধু রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থা বেহাল নয়। ক্ষমতা হারিয়ে সিপিএমের আর্থিক অবস্থাও সঙ্গীন। এই পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব কম খরচে, অনাড়ম্বর ভাবে সম্মেলন করার নির্দেশ দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু।
গত ৩৪ বছর ধরেই সিপিএমের সম্মেলন মানে পাড়ায় পাড়ায় দেওয়াল লিখন। রক্ত পতাকা। ব্যানার-ফেস্টুন-তোরণ। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ সব থেকে বাধ্য হয়েই নিজেকে গুটিয়ে নিতে চাইছে সিপিএম। বিমানবাবুর কথায় তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, সম্মেলনের জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তোলা যাবে না। অনাড়ম্বর ভাবে সম্মেলন করা হলেও আলোচনার মধ্যে স্থানীয় বিষয়গুলিকে তুলে আনতে হবে।
এ বার সিপিএমে শাখা সম্মেলন হচ্ছে না। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বা পূর্ব মেদিনীপুরের মতো ‘সন্ত্রাস কবলিত’ জেলায় গোপন সম্মেলন, এমনকী একাধিক লোকাল কমিটির সম্মেলন এক সঙ্গে করার নির্দেশও দিয়েছে রাজ্য কমিটি। বস্তুত, জেলার নেতারাই এ ব্যাপারে সওয়াল করেছেন। সব মিলিয়েই অতীতে সিপিএমের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যে ‘সাজ সাজ রব’ দেখা দিত, এ বার আর তা দেখা যাবে না। আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মত ভাবে কমিটি গঠনের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। তিনি বলেন, ‘সম্মেলন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে পার্টিকে রাজনৈতিক, মতাদর্শগত ও সাংগঠনিক ভাবে আরও শক্তিশালী করাই আমাদের লক্ষ্য।’ যে ভাবে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার দুর্নীতি করছে এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন করার কথাও বলেন কারাট।
দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে কারাট কলকাতায় এলেও রবিবার সন্ধ্যায় তিনি আলিমুদ্দিন থেকে চলে যান। সিপিএম সূত্রে বলা হয়েছে, তিনি রাতে বিধাননগরে তাঁর পরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে আমন্ত্রণে যান। আজ, সোমবার সকালের বিমানে তাঁর চলে যাওয়ার কথা। যাওয়ার আগে কারাট রাজ্য কমিটির সদস্যদের বুঝিয়ে যান, ‘বিশ্বে আর্থিক সঙ্কট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। আমেরিকায় শ্রমিক শ্রেণির আন্দোলন দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সরকারের অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে।’ ফলে বামপন্থীদের প্রসঙ্গিকতা বাড়ছে বই কমছে না। ৮ নভেম্বরের জেল ভরো আন্দোলনকে সফল করার আহ্বানও জানান কারাট।
বিগত দু’টি পলিটব্যুরোর বৈঠকে কারাটের সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দেখা হয়নি। কারণ, বুদ্ধবাবু রাজ্যের বাইরে যাচ্ছেন না। এ দিন একান্তে দু’জনের মধ্যে নানা বিষয়ে কথা হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা নিয়েছে। মূলত রাজ্যে বাম কর্মী-সমর্থকদের উপরে সন্ত্রাস এবং মতাদর্শগত দলিল নিয়েই তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
সম্মেলন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিমানবাবু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ব্যক্তিদের কমিটিতে নেওয়ার কথা যেমন বলেন, তেমনই আগামী দিনের কথা মাথায় রেখে আরও যুবদের স্থান দেওয়ার নির্দেশও দেন। দলীয় সূত্রে খবর, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই দলের
মালদহ জেলা সম্পাদক জীবন মৈত্র দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। আজ, সোমবার রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষ হবে। |
|
|
|
|
|