ছাউনি ছাড়িয়ে বাইরে সারি সারি সাইকেল ও মোটরবাইক দাঁড়িয়ে রয়েছে। রোদ-বৃষ্টির মধ্যে এ ভাবেই বছরের পরে বছর ধরে বাঁকুড়া রেল স্টেশন চত্বরে যাত্রীদের সাইকেল ও মোটরবাইক পড়ে থাকে। এ নিয়ে যাত্রীরা রেল কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষুদ্ধ। কিন্তু, স্টান্ডের ছাউনি বাড়ানো বা অন্যত্র ছাউনি সরানো হয়নি।
বাঁকুড়া রেল স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে রয়েছে সাইকেল ও মোটরবাইক স্ট্যান্ড। স্টেশনে গাড়ি রেখে যাত্রীরা ট্রেনে চাপেন। এ জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে রেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি সংস্থা ভাড়া আদায় করে। দৈনিক সাইকেল পিছু তিন টাকা ও বাইক পিছু পাঁচ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। বেশ কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ছাউনির নীচেই যাত্রীদের সাইকেল ও বাইক রাখা যেত। কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরে সাইকেল ও বাইকের সংখ্যা বেশ বেড়ে গিয়েছে। ছাউনির বাইরে এখন কয়েকশো সাইকেল ও বাইক থাকে। ভাড়া দিয়েও খোলা আকাশের নীচে সাধের গাড়ি রেখে যেতে হচ্ছে। ঠাঠা রোদে কিংবা ভরা বৃষ্টিতে গাড়ি পড়ে থাকে। এ নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। |
রেলের নিত্যযাত্রী রঞ্জিত রানা, দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, “বাড়ি থেকে মোটর সাইকেলে চেপে ট্রেন ধরতে আসি। স্ট্যান্ডে বাইক রাখার জন্য আমাদের মাসে ১০০ টাকা করে ভাড়া গুনতে হয়। কিন্তু দুঃখের কথা, ছাউনিটি এত ছোট যে, সেখানে বাইক রাখার জায়গা হয় না। বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নীচেই রেখে যেতে হয়। রোদে বাইকের রং চটে যাচ্ছে। বৃষ্টির জলে বাইকের যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে।” তাঁদের আক্ষেপ, রেল কর্তৃপক্ষের সব জেনেও চুপ করে বসে রয়েছে। তাঁদের দাবি, ছাউনি বাড়ানো হোক নতুবা অন্য একটি স্ট্যান্ড চালু করা হোক। স্ট্যান্ডে সাইকেল রেখে ট্রেনে যাতায়াত করেন গৌতম গোস্বামী। তাঁর অভিযোগ, “সাইকেল পিছু দিনে তিন টাকা করে ভাড়া নেয়। অথচ পরিষেবা কিছুই পাই না। রোদ, ঝড়, বৃষ্টিতে পড়ে থাকে সাইকেল। এটা একটা সমস্যা। রেল কর্তৃপক্ষের মাথা ঘামানো উচিত বিষয়টি নিয়ে।”
সাইকেল স্ট্যান্ডের কর্মী রাজু দাস বলেন, “ছাউনির মধ্যে আমরা খুব বেশি হলে ১০০টি মোটর সাইকেল ও ২০০টি সাইকেল রাখতে পারি। তার বেশি হলেই ছাউনির বাইরে রাখতে হয়।” তিনি জানান, সমস্যার কথা আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে বহু বার জানিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। যে জায়গাজুড়ে সাইকেল ও বাইক রাখা থাকে তার তিন ভাগের এক ভাগ জায়গাতেই ছাউনি নেই। অথচ নিত্যযাত্রীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বাঁকুড়ার স্টেশন ম্যানেজার সত্যেন্দ্রনাথ মৈত্র বলেন, “সমস্যার কথা আমরা জানি। দ্রুত অন্য একটি স্ট্যান্ড তৈরি করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি আমরা। এখনকার স্ট্যান্ডটির ছাউনি বাড়ানো সম্ভব নয়। তবে নতুন স্ট্যান্ডটি হলে বর্তমান স্ট্যান্ডটির উপর থেকে চাপ অনেকটাই কমবে।” যদিও কত দিনের মধ্যে নতুন স্ট্যান্ড নির্মাণ করে চালু করা যাবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি সত্যেন্দ্রনাথবাবু। তাই এই ভোগান্তি কবে শেষ হবে ধোঁয়াশা রয়েই গেল। |