বিষয়: বিশ্বের বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
গ্রীষ্ম, ১৯৮০
সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে ক্লাস টুয়েলভ-এর পরীক্ষায় পাশ করেছি। এ বার কলেজ। হ্যাঁ, অবশ্যই সেন্ট জেভিয়ার্স। পার্ক স্ট্রিটের সেই সবুজ গেট। সেই ফুটবল মাঠ। সেই অরুণদার ক্যান্টিন। সেই বাস্কেটবল কোর্ট।
মনে মনে তৈরি। একদম।
অন্য কলেজে অ্যাপ্লাই করার কোনও প্রশ্নই নেই। স্কুলের ফুটবল টিমের ক্যাপ্টেন। বাস্কেটবল টিমের ক্যাপ্টেন। এলোকিউশন এবং ডিবেটে স্কুল টিমের সদস্য। কুইজ টিমের রিজার্ভ-এ আছি। স্কুল ক্রিকেট টিমের উইকেটকিপার। বিজ্ঞান বা অঙ্কের যে কোনও ব্যাপারে ক্লাসে নীচের সারিতে (আমার ব্যাচের সমস্ত বন্ধু সেটা একবাক্যে জানিয়ে দেবে)। কিন্তু এসে লিখতে বলো, কিংবা কিশোর-কবিতা, আমি একেবারে প্রথম সারিতে। আমি বলছি, লিখে নাও। ও হ্যাঁ, অধিকন্তু: ও’ব্রায়েন পরিবারের সন্তান।
কলকাতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কলেজে আরও তিন বছর কাটানোর জন্য টানটান রেডি।
ফর্ম নেওয়া হয়েছে। প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। সফল ছাত্রদের নামের তালিকা বেরিয়েছে।
কোনও ব্যাপারই নয়।
কিন্তু...
‘না, ডেরেক’, আমার বন্ধু রঞ্জন খবরটা ফাঁস করল, ‘আমি মেন নোটিস বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছি, অ্যাডমিশন লিস্টে তো তোর নাম নেই রে!’
আমি পাথর।
তিরিশ বছর পরে আজও আমার রঞ্জনের সেই টেলিফোনের প্রত্যেকটা মুহূর্ত স্পষ্ট মনে আছে।
স্কটিশ চার্চ কলেজকে অশেষ ধন্যবাদ, ওঁরা আমাকে দেরিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দিয়াছিলেন।
ধন্যবাদ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজকেও। আন্তরিক ধন্যবাদ।
ওঁরা আমাকে জীবনের একটা বিরাট শিক্ষা দিয়েছিলেন: কী করে ব্যর্থতাকে গ্রহণ করতে হয়।
অক্টোবর ২০১১

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনেটিকাট প্রদেশের নিউ হেভ্ন-এ গাড়ি নিয়ে ঢুকছি। আমার চোখে জল।
ইয়েল ইউনিভার্সিটি আমাকে দুটি লেকচার দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। একটি আইভি লিগ-এর সেই সব আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ছাত্রছাত্রীর জন্য, যাঁরা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করছেন। অন্যটি সমস্ত ছাত্র, গবেষক এবং মাস্টারমশাইদের জন্য ‘ওপন লেকচার’।
বক্তৃতাপর্ব চুকল। প্রশ্ন-উত্তর শেষ হল। শুনলাম, সবাই খুব প্রশংসা করেছেন। আমি খুব খুশি।
রঞ্জনও খুব খুশি হত। বলত, ‘আরে, তুইই সেই ডেরেক, যার নামটা লিস্টে ছিল না?’
হ্যাঁ, রঞ্জন, হ্যাঁ...


(২০০০ সালের জুলাই মাসে পটনায় এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। রঞ্জন সেই ফ্লাইটে ছিল। কলেজের নোটিস বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে ফোন করার ঠিক কুড়ি বছর পরে ও চলে গেল। তোকে মিস করছি, বন্ধু।)
জানো কি
• অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কে না জানে? ব্রিটেনের অক্সফোর্ড শহরে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম। তবে ইংরেজিভাষীদের দিক থেকে ধরলে এটিই প্রাচীনতম। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা দিবস নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা থাকলেও মোটামুটি ১০৯৬ সাল থেকেই যে এখানে শিক্ষা প্রদান করা হত তার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। ১১৬৭ সালে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় হেনরি এখানকার শিক্ষার্থীদের প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর থেকে ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে শুরু করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

• মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের কেমব্রিজ শহরে রয়েছে আর একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড। এটি একটি বেসরকারি ‘আইভি লিগ’ বিশ্ববিদ্যালয়। এই আইভি লিগ হল একটি আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি গ্রুপ, তৈরি হয়েছিল ১৯৫৪ সালে। ১৬৩৬ সালে ম্যাসাচুসেটস বিধানমণ্ডল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে। উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ডই সব থেকে পুরনো। শুধু তাই নয়, দেশের প্রথম সনদপ্রাপ্ত কর্পোরেশনও হল এই বিশ্ববিদ্যালয়। কর্পোরেশনটির আনুষ্ঠানিক নাম ‘প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ফেলোজ অব হার্ভার্ড কলেজ’। গৌরবময় ইতিহাস, প্রভাব ও প্রতিপত্তির জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে আজ বিশ্বের সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়।

• বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অন্যতম কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। এটি একটি সরকারি গবেষণামূলক বিশ্ববিদ্যালয়। অবস্থিত ব্রিটেনের কেমব্রিজ শহরে। ইংল্যান্ড এবং ইংরেজিভাষীদের দিক থেকে ধরলে এটি দ্বিতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের মধ্যে বেশ কয়েক জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। সংখ্যায় মোট ৬১টি। যা বিশ্বের অন্য যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশি।

• হার্ভার্ডের পাশাপাশি ম্যাসাচুসেটস-এর কেমব্রিজে আরও একটি বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি (এম আই টি)। এই বেসরকারি গবেষণামূলক বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পাঁচটি স্কুল এবং একটি কলেজ আছে। প্রতিষ্ঠানে বিভাগের সংখ্যা ৩২টি যেখানে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত পড়াশোনা ছাড়াও উন্নত গবেষণার ওপরেও জোর দেওয়া হয়। দেশের ক্রমবর্ধমান শিল্পোন্নয়নের জেরে ১৮৬১ সালে স্থাপিত হয় এম আই টি। প্রতিষ্ঠানে কৃতীদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। অতীত ও বর্তমান মিলিয়ে ৭৭ জন নোবেলজয়ী, ৫০ জন ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স প্রাপক এবং ৩৮ জন ম্যাকআর্থার ফেলো যুক্ত থেকেছেন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

• ক্যালিফোর্নিয়ার পালো অল্টোতে ৮,১৮০ একর জুড়ে অবস্থিত রয়েছে লেল্যান্ড স্ট্যানফোর্ড জুনিয়র বিশ্ববিদ্যালয়, যাকে আমরা সাধারণত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বা স্ট্যানফোর্ড বলে চিনি। বিশ্ববিদ্যালয়টি সান ফ্র্যান্সিসকো উপদ্বীপের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সান্টা ক্লারা উপত্যকার ওপর অবস্থিত। এখান থেকে তুমি যদি উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় কুড়ি কিমি এগোও তা হলে পৌঁছে যাবে সান জোস শহরে। আর যদি সান ফ্রান্সিসকো যেতে চাও তা হলে তোমাকে যেতে হবে উত্তর পূর্ব দিকে, প্রায় ৩৭ কিমি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা লেল্যান্ড স্ট্যানফোর্ড ছিলেন রেলপথ নির্মাণকারী বিরাট পুঁজিপতি এবং রাজনীতিবিদ। ষোলো বছরের জন্মদিনের আগে তাঁর সন্তান লেল্যান্ড স্ট্যানফোর্ড জুনিয়র টাইফয়েড রোগে মারা যায়। তার স্মৃতির উদ্দেশ্যেই তিনি এই প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করেন ১৮৯১ সালে।
বলো তো
১ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে উল্কা (অ্যাস্টারয়েড) ৫০৮-এর পুনর্বার নামকরণ করা হয়?
২ হেনরি ডুর্যান্ট কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন?
৩ নিউ ইয়র্ক সিটির এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকরা শহরের বার্ষিক গাইডবুকটি লেখেন, সম্পাদনা করেন এবং প্রকাশনার দায়িত্বে থাকেন। কোন বিশ্ববিদ্যালয়?
৪ সিসিল রোডস-এর নামে চালু রোডস্ স্কলারশিপ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য দেওয়া হয়?
৫ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ইউনিভার্সিটি প্রেস কোনটি?
উত্তর
১) প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় ২) দি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া ৩) কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
৪) দি ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড ৫) দি ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.