ভ্রমণ সংস্থার কাছ থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে গত শুক্রবার সুন্দরবন বেড়াতে যাচ্ছিলেন মার্কিন মহিলা এডমন জোনস্ এবং ক্রিস্টিয়ানো বা ভারভো টাভ। সন্দেশখালির রাজবাড়ি এলাকায় তাঁদের গাড়ি আটকে এক হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগে শনিবার পুলিশ মাহাবুব মোল্লা নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে। ওই এলাকায় তাঁর একটি দোকান রয়েছে। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার রাজবাড়ির কাছে দুই মার্কিন মহিলার গাড়ির সঙ্গে একটি মোটরবাইকের ধাক্কা লাগে। বাইকের ক্ষতি হয়েছে, এই দাবি করে আরোহী আকবর মোল্লা এবং তাঁর আত্মীয় মাহাবুব মোল্লা ক্ষতিপূরণ চান। দুই বিদেশিনির সহযাত্রী সৌরভ ঘোষের সঙ্গে বাইক আরোহীদের বচসা বাধে। তাঁরা সৌরভবাবুকে ধাক্কা মারেন এবং গাড়ির চালককে মারধর করেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বিদেশিনিরা। ঘটনার কথা জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা খতিয়ে দেখে স্বরাষ্ট্রসচিবকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এর পরেই মাহাবুবকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে রবিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন। |
এসডিপিও (বসিরহাট) আনন্দ সরকার বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গাড়িতে ধাক্কা মারার অভিযোগে একটি গাড়ি আটকে ক্ষতিপূরণ নেওয়া হয়। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে পুলিশের কাছে লিখিত কোনও অভিযোগ হয়নি। তবুও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা খতিয়ে দেখে পুলিশ একটি অভিযোগ দায়ের করে এক জনকে গ্রেফতার করেছে। বিশদ জানতে তদন্ত চলছে।”
সৌরভবাবুর দাবি, “আমাদের গাড়ির সঙ্গে সে দিন কোনও বাইকের ধাক্কা লাগেনি। তা সত্ত্বেও মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের গাড়ি আটকানো হয়। প্রথমে দুর্ঘটনায় এক শিশু আহত হয়েছে বলা হয়। তার পরে বলা হয় এক বৃদ্ধ আহত হয়েছেন। চিকিৎসার জন্য তিন হাজার টাকা চাওয়া হয়। শেষে কালীপুজোর চাঁদা বাবদ ১০০০ টাকা চায় ওরা। সেই টাকা দিয়ে মুক্তি পাই।”
অভিযোগ অস্বীকার করে মাহাবুব বলেন, “গাড়ির ধাক্কায় উল্টে পড়ে আহত এবং মোটরবাইকের ক্ষতি হওয়ার ঘটনা ঘটে। তার জন্যই গাড়ি আটকানো হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা চাওয়া হয়েছিল। কাউকে মারধর করা হয়নি।”
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তারা ওই দুই বিদেশিনির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঁদখালিতে সাংবাদিকদের ওই মার্কিন মহিলারা পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় তাঁরা সন্তুষ্ট। আজ, সোমবার মহাকরণে গিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাবেন। সুন্দরবন ঘুরে তাঁরা অভিভূত। তাঁদের দাবি, ঘটনার দিনে তাঁদের গাড়ি কোনও দুর্ঘটনায় না পড়া সত্ত্বেও কিছু মানুষের ভূমিকা ভাল ছিল না। তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলে গাড়ির চালকের কাছ থেকে টাকা নেয়। |