কথা ছিল প্রতিমার উচ্চতা ২২ ফুটের মধ্যে থাকলে আড়ং বা রাসের শোভাযাত্রার সময় শহর বিদ্যুৎহীন হবে না। সেই মতো রাসের উদ্যোক্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ২২ ফুটের বেশি লম্বা প্রতিমাগুলি রাসের পরের দিন শোভাযাত্রায় অংশ নেবে না। বেশি উচ্চতার প্রতিমা বিকেলেই চক্রপথে পরিক্রমা সেরে নেবে।
এই নিয়েই শহরের মতামত এ বার দু’রকম। শহরের বাসিন্দাদের একাংশ চান, বছরে একবারই রাসের শোভাযাত্রা হয়, তাই সেই দিনটা শহর নিষ্প্রদীপ থাকলে তা নিয়ে আপত্তি করার অর্থ হয় না। তাঁদের মতে, শহরের ঐতিহ্যকে স্বীকার করে শহরের মানুষ একদিন একটু কষ্ট করতেই পারেন। কিন্তু বাসিন্দাদের মধ্যে আর একটি অংশের মত হল, জনজীবনকে এই ভাবে বিপর্যস্ত করে উৎসব হতে পারে না। উৎসব মানে আনন্দ। সেখানে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়লে শহরে জল থাকবে না, আলো জ্বলবে না, পাখা চলবে না। এই অবস্থায় উৎসবের স্বাদ পাবেন কী করে মানুষ? তার চেয়ে বরং প্রতিমার উচ্চতা কিছু কমানো হোক। কোনোও বারেই শহরের এই দু’রকম মতের মধ্যে কোনও সমঝোতা সূত্র বার করা যায়নি। সম্প্রতি নবদ্বীপের রাস সুষ্ঠু ভাবে উদ্যাপনের জন্য রাসের উদ্যোক্তা কেন্দ্রীয় কমিটি এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্তাদের বৈঠক হয়েছে। সদর মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি বলেন, “কিছু মানুষের আনন্দের জন্য গোটা শহর দুর্ভোগে পড়বে, তার কোনও মানে হয় না।” তাঁর বক্তব্য, “২২ ফুটের চেয়ে উঁচু প্রতিমাগুলি বিকেলে তিনটের মধ্যে শোভাযাত্রা করলে সন্ধ্যার আগেই শহরে বিদ্যুৎকর্মীরা প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফেলতে পারবেন।” নবদ্বীপ বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদের আধিকারিক অমিত সাহা বলেন, “কতটা অনুকূল পরিবেশ পাওয়া যাবে, তার উপরেই নির্ভর করছে শহরের বিদ্যুতের অবস্থা কেমন থাকবে। তবে আশা করছি এ বার আমরা রাধাবাজার, পোঘাট, বৌবাজার, শ্রীবাসঅঙ্গন ইত্যাদি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখতে পারব। তবে শোভাযাত্রার সময় প্রশাসনের কথা মানতে হবে।” |