মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল রাস উদ্যোক্তারা
ন বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে ঢুকে হামাগুড়ি দিয়ে একটা একটা করে বাঁশ পরীক্ষা করছিলেন মধ্যবয়স্ক মানুষটি। কী খুঁজছেন? বিরক্ত কণ্ঠে উত্তর এল, “দু’বছর আগে বাঁশের গায়ে চিহ্ন এঁকে দিয়ে গিয়েছিলাম। এ বার সেই বাঁশগুলি লাগবে।” এ বারেও কয়েকটি বাঁশে দাগ দিয়ে যাবেন, সেগুলো কাজে লাগবে দু’বছর পরের রাসে। নবদ্বীপের সুবিখ্যাত রাসোৎসবে প্রতিটি খুঁটিনাটি নিয়েই চিন্তা করতে হয় অনেক দিন আগে থেকে। তার মধ্যে বাঁশের ভূমিকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কুড়ি-তিরিশ ফুট উচ্চতার এক একটি বিশালাকার প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা এই উৎসবের অঙ্গ। নবদ্বীপের যোগনাথ তলার বড় গৌরাঙ্গিনী মাতার উদ্যোক্তাদের অন্যতম হরেকৃষ্ণ পোদ্দার বলেন, “বাঁশের কাঠামোর উপরেই ওই প্রতিমা দাঁড়িয়ে থাকে। বাঁশ নরম হলে সব হুড়মুড়িয়ে পড়বে। তাই বাতার বাঁশ থেকে শিকের বাঁশ, সবই খুব যত্ন নিয়ে নির্বাচন করতে হয়। প্রতিমা তৈরি হয় ভালকো বাঁশে। তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রতিমা বহনের বাঁশ।” নবদ্বীপের রাসের বাঁশ প্রধানত আসে বাবলারি, মহীশূরা বা পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুর থেকে। এ বার সেই বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রাস উদ্যোক্তারা। একটি প্রমাণ মাপের প্রতিমার জন্য ৪০ থেকে ৪৫টি বাঁশ লাগে। গৌরাঙ্গিনীর যেমন ৪৬টি বাঁশ লাগে। প্রাচীন মায়াপুরের মহিষমর্দিনীর লাগে ৪৫টি। রাসের অন্যতম উদ্যোক্তা কাউন্সিলর নরোত্তম সাহা রায় বলেন, “বাঁশ থেকে বাজনা, প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। গত বছর ৪৫টি বাঁশের দাম ছিল বিয়াল্লিশশো টাকা। এ বার তারই দাম ৬ হাজার পাঁচশো টাকা। বাঁশের কাঠামো তৈরির মজুরি গত বার দিয়েছি সতেরোশো টাকা। এ বার তা বেড়ে বাইশশো টাকা হয়েছে।” তিনি জানান, প্রতিমা শিল্পীর মজুরি এ বার ১৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে গত বার যে প্রতিমা নির্মাণের খরচ ছিল ৩৫ হাজার টাকা। তারই দাম এখন ৫০ হাজার টাকা। কাত্যায়নী মাতা বারোয়ারি কমিটির সম্পাদক অরূপ সাহা বলেন, “যে ভাবে মাটি বিচুলি দড়ি রং, সব কিছুর দাম বেড়ে গিয়েছে, তাতে আমাদের প্রতিমা তৈরির খরচ এ বার ৬০ হাজারে গিয়ে দাঁড়াবে। গত বার ছিল যা ৪৫ হাজার টাকা।” তাঁর দাবি, “বাঁশের দাম দ্বিগুণ। গত বার ৮০ টাকায় যে বাঁশ কিনেছি, তার এ বার ১৬০ টাকা দাম। কাঠামো নির্মাণের শিল্পী গত বছর নিয়েছিলেন এক হাজার টাকা। এ বার নিচ্ছেন আঠারোশো টাকা। প্রতিমার চাল তৈরি করতে গত বার ন’শো টাকা দেওয়া হয়েছিল। এ বার চাওয়া হচ্ছে ষোলোশো টাকা।” কাঠামো থেকে প্রতিমা নির্মাণ, সব ক্ষেত্রেই দাম বাড়ানো ছাড়া কোনও উপায় নেই বলে জানিয়েছেন শিল্পীরাও। মাটি, তুষ, পাট, কালোমাটি, পেড়েক, দড়ি সবেরই দাম যে বেড়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.