ভাবমূর্তি, কর্মপন্থা নিয়ে সম্মেলনে জেলা তৃণমূল
মাওবাদী মোকাবিলায় দল কোন পথে এগোবে। কী ভাবেই বা দলীয় কোন্দলে ছেদ পড়বে। এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আজ, সোমবার মেদিনীপুরে সম্মেলন করছে জেলা তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৯টি ব্লক থেকে আড়াই হাজার দলীয় সদস্য সম্মেলনে যোগ দেবেন। উপস্থিত থাকার কথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়, রাজ্য সভাপতি তথা পূর্তমন্ত্রী সুব্রত বক্সীর।
মাত্র ক’মাস হল শাসনক্ষমতায় এসেছে দল। এরই মধ্যে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে দলের অন্দরে। জেলার জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের প্রভাব উত্তরোত্তর বাড়ছে। দলের বিধায়ক, কর্মীদের বিধায়কপদ, দল ছাড়ার হুমকি দিয়ে পোস্টার দেওয়া হচ্ছে। জঙ্গলপথে বিস্ফোরক, মাইন উদ্ধারের ঘটনাও অশান্তির আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনিক উদ্যোগ ছাড়াও রাজনৈতিক কর্মসূচিরও যে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, সেটা ক্রমেই বেশি করে উপলব্ধি করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তার পরেও জঙ্গলমহলের ‘রাশ’ ধরে রাখা নিয়ে দলের মধ্যেই সংশয় রয়েছে।
পাশাপাশি, জেলার বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এখনও দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে তোলা আদায়, জোর-জুলুমের অভিযোগ আসছে। কোথাও আবার সিপিএম সমর্থক পরিবারকে বয়কট করা হচ্ছে। কোথাও বিরোধী কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার ঘটনাও ঘটছে। দলে সদ্য যোগদানকারীদের ‘দাপটে’ কোথাও কোথাও কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন পুরনো কর্মীরাও। অনেকের বিরুদ্ধে আবার ‘জীবনযাপনের ধরন’ সংক্রান্ত নানা অভিযোগও উঠেছে। ক’মাসেই বিড়ম্বনায় শাসকদল। দলে শৃঙ্খলার অভাব নেতৃত্বের একাংশকেও উদ্বেগে রেখেছে। বস্তুত, গোড়াতেই প্রশ্নের মুখে ‘শাসক’দলের ভাবমূর্তি।
চলছে সভার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
দলের এক সূত্র জানাচ্ছে, সোমবার নতুন করে কোনও কমিটি গঠন হবে না। তবে, প্রতিটি ব্লকের একাধিক প্রতিনিধি রেখে একটি কর্মী-তালিকা তৈরি হতে পারে। এই তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে, তাঁরাই কলকাতায় কয়েক দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় রাজ্যপর্যায়ের দলীয় নির্বাচনে জেলার প্রতিনিধিত্ব করবেন। স্বভাবতই তাঁরাই জেলার ব্লকে ব্লকে দলের আসল ‘মুখ’ হিসাবেও চিহ্নিত হবেন। তবে জেলায় দলে যে পরিমাণ অন্তর্দ্বন্দ্ব এই মুহূর্তে রয়েছে তাতে ব্লক-পর্যায়ে কর্মী-তালিকা তৈরিও সহজ নয়। তালিকা তৈরি থেকে নানা ব্যাপারেই সোমবারের সম্মেলনস্থল উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে আশঙ্কা করছেন জেলা নেতৃত্বেরই একাংশ।
এই কর্মসূচিকে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ঠিক সম্মেলন বলছেন না। ‘দলীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনাসভা’ হিসাবেই তাঁরা উল্লেখ করছেন। এই কর্মসূচির জন্য ছাপা কার্ডেও তেমনই উল্লেখ রয়েছে। একান্তে জেলা তৃণমূল নেতারা জানাচ্ছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জেলায় দলের কাজকর্মের পর্যালোচনা, আগামী দিনের কাজকর্মের রীতি-নীতি ঠিক করতেই মূলত এ দিনের কর্মসূচি। এক নেতার বক্তব্য, “কার্যত এটা সম্মেলনই। তবে আমরা আলোচনাসভাই বলছি।” জনপ্রতিনিধি এবং ব্লক কমিটির সদস্যরা সোমবারের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। নির্দিষ্ট কার্ড ছাড়া সম্মেলন বা সভাস্থলে কারও ঢোকার অনুমতি থাকছে না। শাসক হওয়ার পরে গত পাঁচ মাসে জেলায় তৃণমূলের সদস্য-কর্মী সংখ্যা বেড়েছে লক্ষণীয় ভাবে। সেই নতুনদের অনেকেই সোমবারের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এ বার দলীয় নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত বেশ ‘কড়া’ হাতেই সে পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন। দেদার ‘কার্ড’ বিলি হচ্ছে না। তৃণমূলের মতো দলে সেটাও খানিক অভূতপূর্ব। এক জেলা নেতার কথায়, “এই কর্মসূচিতে কারা উপস্থিত থাকবেন, সে নিয়ে স্পষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। সেই মতোই ব্লক কমিটির কাছে নির্দিষ্ট সংখ্যক কার্ড পৌঁছনো হয়েছে। এখন ভালয় ভালয় যাতে কর্মসূচি উতরোয়, সেটা নিয়েই আমার ব্যস্ত।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.