সপ্তাহান্তেও শব্দবাজির দাপট শহর জুড়ে
কালীপুজো হয়েছে বুধবার। তার পরে কেটে গিয়েছে চারটি দিন। কিন্তু রবিবারেও সন্ধ্যা হতেই বহরমপুরে শব্দবাজির আওয়াজ পাওয়া গেল।
কার্যত এই গোটা সপ্তাহটাই শহরে দাপিয়ে বেড়িয়েছে শব্দবাজি। শহরের প্রবীণ নাগরিকরা জানাচ্ছেন, গানের দৌরাত্ম্য কমেছে। অনেক মণ্ডপে এখনও উচ্চ স্বরে গান বাজানো হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মণ্ডপে অনেক নীচু স্বরে গান বাজানো হয়। তার মধ্যেও বাংলা গানেরই সংখ্যাধিক্য। কিন্তু শব্দবাজির দাপট সেই একই অবস্থায়।
শব্দবাজির বিরুদ্ধে পুজো উদ্যোক্তা থেকে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কালীপুজোর আগে সারমেয় নিয়ে মিছিল শেষ পর্যন্ত কোনও কাজে আসেনি। শব্দদানবের আওয়াজে ভয়ে ঘরের মধ্যে দাপাদাপি করেছে পোষ্যরা। আর আদালতের নির্দেশ কার্যকরী করতে সতর্কতা ও নির্দেশ জারি করেই পুলিশ ও প্রশাসন দায় সেরেছে। বহরমপুরের মহকুমাশাসক অধীরকুমার বিশ্বাস বলেন, “ঘরে বসে বেশ কিছু শব্দবাজির আওয়াজ টের পেয়েছি, এটাও বাস্তব। এটা বাঞ্ছনীয় ছিল না। তা সত্ত্বেও প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে কিছু শব্দবাজি ফেটেছে।”
বহরমপুর জেলা সদর হাসপাতালের সুপার পার্থ দে বলেন, “এই গোটা সপ্তাহটাই শব্দবাজির দাপটে চমকে চমকে উঠেছে হাসপাতাল।” তাঁর কথায়, “শব্দবাজি এখন কেবল কালীপুজোয় সীমাবদ্ধ নেই। যে কোনও অনুষ্ঠান, সে পারিবারিক হোক বা সামাজিক, তাতেও বাজি ফাটানোর চল শুরু হয়েছে। প্রশাসনের উচিত অন্তত হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বাজির প্রকোপ কমাতে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া।” জেলা প্রাণী সম্পদ দফতরের পলিক্লিনিকের পশু চিকিৎসক অভিজিৎ দত্ত বলেন, “কালীপুজোর রাতে নানা বাড়ি থেকে ফোন পেয়েছি। কেউ বলছেন, তাঁর বাড়ির পোষা সারমেয়টি খাটের তলায় ঢুকে পড়েছে, আর বেরোচ্ছে না। বাজির শব্দের ভয়ে খেতেও চায়নি।” কৃষ্ণনাথ কলেজের অধ্যক্ষ সোমেশ রায় বলেন, “এমন কিছু বাজি আতসবাজি বলে বিক্রি হচ্ছে, যার শব্দ প্রচণ্ড। আমার বাড়ি নতুন হাসপাতালের কাছে। সেখানেও কিন্তু খুব বাজি ফাটানো হয়েছে।”
বহরমপুরের প্রবীণ নাগরিক সাবিত্রীপ্রসাদ গুপ্তও বলেন, “শব্দবাজি তো ফেটেছে। সেই সঙ্গে যে কোনও উৎসব-পার্বণীতে উচ্চস্বরে গানের শব্দেও পাড়া-প্রতিবেশীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। ওই আওয়াজও শব্দদূষণের মধ্যে পড়ে। কিন্তু কোনও লিখিত অভিযোগ হয় না বলে এর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায় না বলে পুলিশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়।” তবে কালীপুজোর পরে আতসবাজির আলোয় শহরের সন্ধ্যা রঙিন হয়ে গিয়েছে।
কোনও পুজো কমিটি চালতিয়া বিলে, কেউ আবার এনসিসি ময়দানে, কোনও পুজো কমিটি আবার জোড়া পুকুরে, এমনকী ভাগীরথীর উপরেও আতসবাজির প্রদর্শনীর বন্দোবস্ত করেছে এক পুজো কমিটি। স্যান্টাফোকিয়া কালীপুজো কমিটির কর্তা অতীশ সিংহ (কাল্টু) বলেন, “আমাদের আতসবাজি প্রদর্শনীর সময়ে প্রায় শ-খানেকরও বেশি পুলিশ প্রহরা ছিল। আইন মেনেই আতসবাজির প্রদর্শনী হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “তবে কালীপুজোর সময়ে শব্দবাজি তো অবশ্যই ফেটেছে।”
বহরমপুর থানার আইসি প্রমোদরঞ্জন বর্মণ অবশ্য দাবি করেছেন, “শব্দবাজি ফাটানোর ব্যাপারে আমরা লাগাম দিতে চেয়েছি। ফলে অন্য বারের তুলনায় এ বার কম শব্দবাজি ফেটেছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.