দুর্গার পরে কালী, ঘাট ভর্তি কাঠামোয়
প্রশাসনের জারি করা নির্দিষ্ট সময়ের দু-দিন পরে রবিবার বিভিন্ন পুজো কমিটির কালীপ্রতিমা ভাসান দেওয়া হয়েছে। অথচ বুধবার কালীপুজো শেষে গত শুক্রবার কালীপ্রতিমা বিসর্জনের শেষ দিন ধার্য করে প্রশাসন। কিন্তু ওই নির্দেশ অমান্য করে এখনও মণ্ডপে রয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রতিমা। এদিকে ভাগীরথীর অধিকাংশ ঘাটে এখনও দুর্গাপ্রতিমার কাঠামো পর্যন্ত সরানো হয়নি। এর মধ্যে কালীপুজোর ভাসান হওয়ায় দুর্গার সঙ্গে কালীপ্রতিমার কাঠামো ভাগীরথীর পাড় বরাবর ঘাটগুলিতে পড়ে রয়েছে। এ বার সেখানেই হবে ছট উৎসব।
প্রশাসনের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে এদিনও যে বেশ কিছু মণ্ডপের প্রতিমা ভাগীরথীতে বিসর্জিত হয়েছে, তা প্রশাসনের অজানা নয়। প্রশাসনের এই ‘নীরব’ ভূমিকার সমালোচনা বহরমপুরের নাগরিকদের মুখে। বহরমপুরের মহকুমাশাসক অধীরকুমার বিশ্বাস বলেন, “প্রশাসনের জারি করা নির্দিষ্ট দিনের পরেও বেশ কিছু পুজো কমিটির প্রতিমা বিসর্জিত হয়েছে বলে শুনেছি। যারা নির্দিষ্ট দিনের পরে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছে, আগামী বার পুজো আয়োজনের সময়ে তাদের সতর্ক করে দেওয়া বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অর্থ-জরিমানা করা যায় কিনা সে ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।”
সেই সঙ্গে ভাসানের পরে ঘাট পরিষ্কার নিয়েও পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়ে গিয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে প্রতিটি পুজোর আগে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে বৈঠক ডেকে অন্য বিষয়ের সঙ্গে ঘাট পরিষ্কার নিয়েও আলোচনা হয়ে থাকে। অথচ পুজো শেষে প্রতিমা ভাসানের সঙ্গেই যাবতীয় দায় সেরে ফেলেন পুজো উদ্যোক্তারা। সেখানে প্রতিমা থেকে কাঠামো সাফ-সুতরো রাখার বিষয়টি তাঁদের কাছে গুরুত্ব পায় না।
লালদিঘি পাড়ার এক পুজো কমিটির কর্তা শেখর রায় বলেন, “আমাদের প্রতি বছর একই কাঠামোয় প্রতিমা নির্মিত হয় বলে ভাসানের পরেই কাঠামো তুলে নিয়ে এসে শিল্পীর ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়। আর পুজোর যাবতীয় উপকরণ পুরসভার নির্দিষ্ট জায়গাতেই ফেলা হয়।” তাঁর কথায়, “তবে প্রতি বছর পুজোর আগে বৈঠক করে ঘাট পরিষ্কার থেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনের তরফে নির্দেশ জারি করা হলেও তা কার্যকরী করার ব্যাপারে এক শ্রেণির পুজো উদ্যোক্তাদের সচেতনতার অভাব থেকে গিয়েছে, এটা অস্বীকার করা যায় না।”
ওই সচেতনতার অভাব কাটাতে প্রশাসনের তরফে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ বা মোটা অঙ্কের অর্থ-জরিমানা করার পক্ষে সওয়াল করেন বহরমপুরবাসী। কেননা, ভাগীরথীর পাড় বরাবর রাধারঘাট, গোপালঘাট, গোয়ালপাড়া ঘাট, কালীপাড়া ঘাট, ভৈরবতলা ঘাট, জগন্নাথ ঘাট, কৃষ্ণনাথ কলেজ-সহ বেশ কিছু ঘাটের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। রাধারঘাটের স্নানঘাটটি পরিষ্কার থাকলেও ঠিক তার পাশেই পড়ে রয়েছে প্রতিমার কাঠামোর স্তুপ। গোয়ালপাড়া ঘাটে আবার ভাসানের প্রতিমার কোমরে দড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে, যাতে প্রতিমার কাঠামো ভেসে যেতে না পারে।
আবার নতুনবাজার ও গোপালপাড়া ঘাটের মাঝামাঝি কালীপাড়া ঘাটের স্নানঘাটের বাঁ দিকে পড়ে রয়েছে দুর্গার কাঠামোর সঙ্গে কালীপ্রতিমার কাঠামো। জগন্নাথ ঘাটেরও একই অবস্থা।
পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য অবশ্য বলেন, “পুরসভার কর্মীদের দিয়ে দুর্গা পুজোর পরে কাঠামো থেকে যাবতীয় উপকরণ ঘাট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু কালীপুজোর পরে ফের ঘাটগুলি দৈন্যদশায় পরিণত হয়েছে। তবে পুজোর আগে দূষণের হাত থেকে ভাগীরথীকে রক্ষা করতে যে আবেদন রেখেছিলাম, তাতে সাড়াও পেয়েছি। তবে পুজো উদ্যোক্তা থেকে সাধারণ মানুষের আরও বেশি করে সচেতনতার প্রয়োজন। নয়তো দূষণ রোখা যাবে না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.