বিশ্বব্যাপী বড় শহরের দূষণ রোখার উদ্যোগে যুক্ত হচ্ছে কলকাতা।
কলকাতার দুর্গাপুজো বা মক্কার হজ যে কোনও বড় শহরেই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অল্প সময়ে বহু মানুষ একত্রিত হলে পরিবেশে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে। তা কমাতে অনুষ্ঠানগুলিকে পরিবেশসম্মত করার কাজ করছে ‘গ্রিন পিলগ্রিম সিটিজ নেটওয়ার্ক’। কলকাতাকেও তারা এর অন্তর্ভুক্ত করতে চায়।
প্রতিমায় সিসাহীন রং থেকে পরিবেশসম্মত বিসর্জনের ব্যবস্থা করে দুর্গাপুজোকে যে ভাবে পরিবেশবান্ধব করে তোলার চেষ্টা হয়েছে, তা দেখেই আগ্রহী ওই আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক। যে কোনও পুর-এলাকার পরিবেশসম্মত স্থায়ী উন্নয়ন চায় তারা। ওই নেটওয়ার্ক মূলত বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলিতেই জোর দিচ্ছে। শহরে দুর্গাপুজোর সময়ে পরিবেশ বাঁচানোর উদ্যোগ দেখে ওই নেটওয়ার্কের পক্ষে ধন্যবাদ জানিয়ে পুরসভায় চিঠি আসে। রবিবার ইতালিতে শুরু হয়েছে ‘গ্রিন পিলগ্রিম সিটিজ নেটওয়ার্ক’-এর আন্তর্জাতিক সম্মেলন। নেটওয়াকের্র পক্ষ থেকে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারকে সেখানে আমন্ত্রণও জানানো হয়। তিনি অবশ্য যাচ্ছেন না।
এই বছর পুজোর সব অনুষ্ঠানই পরিবেশসম্মত ভাবে করার দিকে নজর রাখা হয়েছে। সেই উদ্যোগে পুরসভা, পরিবেশ দফতর এবং ‘এনভায়রনমেন্ট গভার্নড ইন্টিগ্রেটেড অর্গানাইজেশন’ নামে একটি সংগঠন সামিল ছিল। সেরা নির্মল পুজো বাছাই করে পুরস্কারের ব্যবস্থাও করে পরিবেশ দফতর। গোটা উদ্যোগেই নজর ছিল ওই নেটওয়ার্কের।
কিন্তু পুজোয় দূষণ নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে বড় কাজ হয়েছে পুরসভার উদ্যোগে। তাদের করা নির্মল বিসর্জনের আয়োজন ছিল নজিরবিহীন। বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গে গঙ্গা থেকে প্রতিমা তোলা ও কাঠামোগুলি জড়ো করে দ্রুত সেগুলি ধাপায় ফেলার ব্যবস্থা, সবই হয়েছে পুরসভার উদ্যোগে। তা ছাড়া পুজোর ফুল ও অন্য পচনশীল সামগ্রী গঙ্গায় না ফেলে বিশেষ জায়গায় ফেলার ব্যবস্থা হয়।
দেবাশিসবাবু বলেন, “দুর্গাপুজোকে পরিবেশসম্মত করতে যে কাজগুলি করেছি, সেগুলি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ায় স্বাভাবতই আমরা খুশি ও উৎসাহিত। আগামী দিনে দুর্গাপুজোকে আরও পরিবেশসম্মত করতে চাই।”
কলকাতাকে আন্তর্জাতিক তীর্থ-শহরের পরিবেশ উন্নয়নের উদ্যোগে যুক্ত করার পাশাপাশি এখানকার দুর্গাপুজোকে পরিবেশবান্ধব করে তুলতেও কলকাতার পাশে দাঁড়াতে চায় ওই নেটওয়ার্ক। তাদের চিঠিতে সেই আবেদনই করা হয়েছে। |