পথ-দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক দম্পতি। গুরুতর জখম তাঁদের দুই নাবালিকা মেয়ে। রবিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বই রোডে, হাওড়ার চামরাইলের কাছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দিন মুম্বই রোডে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দম্পতি বেলুড়ে এক বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলেন। দুপুরের খাওয়া সেরে বিকেল চারটে নাগাদ নিজেদের গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। একটি ট্রাক তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। পুলিশ পরে ওই ট্রাকের চালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করেছে। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রাথমিক তদন্তের পরে হাওড়া পুলিশের ডিসি (সদর) সুকেশকুমার জৈন বলেন, “লরিচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলাতেই এই দুর্ঘটনা।”
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম দেবাশিস কুণ্ডু (৪০) ও তাঁর স্ত্রী বিদিতা (৩৫)। ঘটনাস্থলেই ওই দু’জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের দুই মেয়ে দীপ্তি (১৪) ও বিশাখাকে (১১) প্রথমে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। পরে সেখান থেকে দু’জনকেই পাঠানো হয় ওই এলাকারই এক নার্সিংহোমে। রাতে দীপ্তির অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার একটি নার্সিংহোমে। |
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়ি চালাচ্ছিলেন দেবাশিসবাবু নিজেই। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি গাড়ি চালাতেন। পাশের সিটে ছিলেন স্ত্রী বিদিতা। আর পিছনের সিটে দুই মেয়ে। তাঁরা বেলুড় থেকে দিল্লি রোডে না গিয়ে মুম্বই রোড দিয়ে ব্যাঁটরার দিকে যাচ্ছিলেন। ওই সময়ে কলকাতামুখী লেনে একটি ফাঁকা ট্রাক প্রচণ্ড গতিতে যাচ্ছিল। মুম্বই রোডের কোনা এক্সপ্রেসওয়ের কাছে ট্রাকচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। ট্রাকটি সোজা রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে প্রায় উড়ে গিয়ে উল্টো দিকের লেনে ওই গাড়িটির গায়ে সজোরে ধাক্কা মারে। যার জেরে গাড়িটি গিয়ে পড়ে রাস্তার পাশে নয়ানজুলিতে। গাড়ির মধ্যেই আটকে থাকেন যাত্রীরা। এলাকার মানুষ গাড়ির দরজা ভেঙে তাঁদের বার করে হাসপাতালে পাঠান। পরে পুলিশ ক্রেন এনে গাড়িটি রাস্তায় টেনে তোলে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, চিকিৎসকেরা দেবাশিসবাবু ও বিদিতাদেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ভর্তি করে নেওয়া হয় তাঁদের দুই মেয়েকে।
দেবাশিসবাবু ওষুধের ব্যবসা করতেন। তাঁর বাড়ি ব্যাঁটরা থানার দেশপ্রাণ শাসমল রোডে। খবর পেয়ে এলাকার বহু মানুষ ঘটনাস্থলে চলে আসেন। দেবাশিসবাবুর দিদি স্বপ্না মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভাই অনেক দিন ধরেই গাড়ি চালায়। ট্রাকচালকের দোষেই এমন হল।” |