লিলুয়ায় নিজের বাড়িতে খুন ওষুধ ব্যবসায়ী
লিলুয়ায় নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল এক ওষুধ ব্যবসায়ীর দেহ। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে চামরাইল এলাকার বাঁশতলায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অসীম কোলে (৫৬) নামে ওই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এ দিন ভোর সাড়ে ৬টা নাগাদ অসীমবাবুর দেহ মেলে। ঘটনাস্থল থেকে একটি গামছা, এক জোড়া হাওয়াই চটি পেয়েছে পুলিশ। সেগুলি আততায়ীর হতে পারে বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের কৃষি-বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায় ও ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
অসীম কোলে
পুলিশ জানিয়েছে, বাঁশতলায় রাস্তার লাগোয়া পাশাপাশি দু’টি বাড়িতে থাকেন অসীমবাবু এবং তাঁর ভাই বাবলু কোলে। বাড়ির একতলায় ওষুধের দোকান রয়েছে অসীমবাবুর। শুক্রবার ভাইফোঁটার জন্য তাঁর স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে উদয়নারায়ণপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে একাই ছিলেন অসীমবাবু। বাবলুবাবু বলেন, “শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ আমার মেয়ে দাদাকে রাতের খাবার দিয়ে এসেছিল। তখন তো সব ঠিকঠাকই ছিল।” তিনি জানান, শনিবার ভোরে এলাকার এক বাসিন্দা অসীমবাবুর দোকানে ওষুধ কিনতে যান। দোকান বন্ধ ছিল। সদর দরজা দিয়ে দোতলায় উঠে যান তিনি। দোতলার দরজাও খোলা। বার বার ডাকলেও অসীমবাবুর সাড়া না মেলায় আশপাশের লোকজনকে ডাকেন ওই ব্যক্তি।পুলিশ জানায়, নিজের শোওয়ার ঘরের বিছানার এক কোণে পড়েছিলেন অসীমবাবু। মশারির এক দিক থেকে তাঁর শরীরের কিছুটা অংশ খাটের বাইরে ঝুলছিল। ঠোঁট, নাকের পাশে রক্তের চিহ্ন ছিল। গলায় শ্বাসরোধ করার চিহ্নও দেখা যায়।
বাঁশতলায় অসীমবাবুর বাড়িতে এ দিন পুলিশ কুকুর নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ব্যবসায়ীর শোওয়ার ঘরে উদ্ধার হওয়া হাওয়াই চটির গন্ধ শুঁকে সে নীচে নেমে যায়। এর পর কুকুরটি বাড়ির উল্টো দিকের রাস্তা পেরিয়ে একটি গলির মধ্যে ঢুকে পড়ে। পুলিশ জানায়, কুকুর গলির ভিতরে ঢুকে বেশ কিছুটা যাওয়ার পর একটি বাঁশঝাড়ের কাছে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়। ফেরার সময় একই রাস্তায় এসে কুকুরটি অসীমবাবুর বাড়িতে ঢুকে পড়ে। কুকুরের গতিবিধি দেখে পুলিশের ধারণা, খুনি বা খুনির দল স্থানীয় এলাকারই।
মন্ত্রী এবং বিধায়ক বাঁশতলায় পৌঁছনোর পরে অসীমবাবুর পরিজনেরা তাঁদের ক্ষোভ দেখান। অরূপবাবু বলেন, “ঘটনার তদন্ত হবে। রাজনৈতিক যোগ থাকলেও অপরাধী গ্রেফতার হবেই।” এলাকার বাসিন্দা ও চামরাইলের তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েতপ্রধান সুভাষ রায় বলেন, “অসীমবাবু অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি, ওঁকে কে খুন করতে পারে ভেবে উঠতে পারছি না।”
হাওড়া পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সদর) সুদেশকুমার জৈন বলেন, “এই ঘটনার পিছনে পারিবারিক বিবাদের কোনও ঘটনা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বাড়ির সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।” পুলিশ জানায়, ঘটনার পর থেকে অসীমবাবুর মোবাইল ফোন এবং ওষুধের দোকানের চাবি পাওয়া যাচ্ছে না। সেগুলি আততায়ী নিয়ে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
এই ঘটনার কয়েকটি বিষয়ের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। প্রথমত, আততায়ী এক জন না তার বেশি। দ্বিতীয়ত, অসীমবাবু আততায়ীকে চিনতেন কি না। তৃতীয়ত, শোওয়ার ঘরের দরজা কি অসীমবাবুই খুলেছিলেন না অন্য কেউ। উত্তর খুঁজতে ঘটনাস্থলে যাবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.