|
|
|
|
স্ত্রীকে মেরে আত্মহত্যার চেষ্টা স্বামীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হরিশ্চন্দ্রপুর |
এক হাজার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে খুনের পরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন স্বামী। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মিহাহাট এলাকায় শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সায়েদা বিবি (৩০)। স্বামী ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। বিষক্রিয়ায় অসুস্থ স্বামী তজিবুর রহমানের চিকিৎসা চলছে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে। পুলিশের উদ্যোগেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তজিবুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি বিপুল বন্দোপাধ্যায় বলেন, “টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে তজিবুর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তজিবুর খানিকটা বখাটে প্রকৃতির। তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে।’
পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রতুয়ার আইলপাড়ার বাসিন্দা সায়েদা বিবির সঙ্গে ৮ বছর আগে তজিবুরের বিয়ে হয়। তাদের ৩ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। আদতে মিহাহাটের বাসিন্দা হলেও তজিবুরের বাবা, মা সহ প্রত্যেকেই কয়েক বছর ধরে কিশনগঞ্জে বসবাস করেন। পেশায় দিনমজুর তজিবুর নিয়মিত কাজ না করায় বিড়ি বেঁধে কোনও ক্রমে সংসারের হাল সামলাতেন সায়েদা বিবি। তজিবুরের এক দাদা মিহাহাটে স্ত্রীকে ছেড়ে দীর্ঘদিন আগেই পালিয়ে গিয়েছেন। আর এক ভাই নিজের শ্যালককে খুনের অভিযোগে জেল খাটছেন। তজিবুরও স্ত্রী সায়েদা বিবির উপর টাকা পয়সা চাওয়া-সহ নানা কারণে নিয়মিত অত্যাচার চালাত বলে মৃতার পরিবারের অভিযোগ। বেশির ভাগ সময় ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করত তজিবুর। তবে গত এক বছর ধরে সে বাড়িতেই ছিল। কাজকর্মও সেরকম করত না। মাঝেমধ্যেই স্ত্রীর কাছে টাকা চাইত। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, সায়েদার কাছে বিড়ি বেঁধে রোজগারের ১২০০ টাকা রয়েছে জানতে পেরে এদিন সকালে কাজ রয়েছে বলে তার মধ্যে থেকে এক হাজার টাকা চায় তজিবুর। সায়েদা বিবি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। তা নিয়েই দুজনের তর্ক বেঁধে যায়। এরপরই উত্তেজিত হয়ে ঘর থেকে ধারাল অস্ত্র নিয়ে এসে স্ত্রীর বুকে বসিয়ে দেন তিনি। স্ত্রীর চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। ওই সময় চোখের সামনে স্ত্রীকে নিস্তেজ হয়ে যেতে দেখে নিজেও ওই ধারাল অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তজিবুর।
প্রতিবেশীরা গিয়ে তাকে ধরে অস্ত্র কেড়ে নেয়। তখন দৌড়ে ঘরে ঢুকে পড়েন তিনি। বাসিন্দারা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন কীটনাশক খেয়ে লুটিয়ে পড়েছে তজিবুর। ওই সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশও। গাড়িতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। মৃতার বাবা আব্দুল হাই বলেন, “বিয়ের পর থেকেই টাকা চেয়ে মেয়ের উপর নানা ভাবে নির্যাতন চলত। মেয়েটা মুখ বুজে সব সহ্য করত। ওকে যে এ ভাবে তজিবুর খুন করবে তা ভাবতেই পারছি না।” |
|
|
|
|
|