নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট ও রায়গঞ্জ |
দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের পরে জ্বর ছড়াল গঙ্গারামপুরের বাসুরিয়া এলাকায়। শুক্রবার শিশু ও কিশোর সহ জ্বরে আক্রান্ত মোট ৪ জনকে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুদীপ দাস বলেন, “তাঁদের রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। তবে রিপোর্ট এখনও আসেনি।” তপনের চকহোসেন এলাকার জ্বরে আক্রান্ত ১৩ জনের মধ্যে মোট ৬ জনের রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু মিলেছে। ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত ১ জন মালদহ জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদিকে, রায়গঞ্জের শীতগ্রাম এলাকায় অবশ্য নতুন করে আরও কোনও বাসিন্দার রক্তে ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এলাকায় শিবির করে ২৬ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৪ জন মুম্বইতে দিন মজুরির কাজ করতেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত মণ্ডল বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আক্রান্তদের থেকে নতুন করে যাতে রোগ না ছড়ায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” মাস দুয়েক আগে তপনের চক হোসেন, কড়ই চেঁচরা, বজরা পুকুর গ্রাম থেকে যুবকের দল গুজরাতে শ্রমিকের কাজ করতে যান। গত সোমবার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সেখানকার ভুজ হাসপাতালে মারা যান তোফাজ্জল মণ্ডল। ভয়ে গ্রামে ফিরে আসেন ২৭ জন যুবক। তাঁদের মধ্যে এ পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন। গুজরাত থেকে জ্বর নিয়ে আগামী এক-দু’দিনের মধ্যে তপন এলাকায় বাড়ি ফিরবেন আরও ৮ জন। এদিন চক হোসেন এলাকায় গিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা ১০০ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করলেও রোগ প্রতিরোধে কোনও ব্যবস্থা করেননি বলে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মহেশ অভিযোগ। তিনি বলেন, “মশা মারার তেল ও ডিডিটি স্প্রে-এর জন্য স্বাস্থ্য দফতরে বলা হয়েছে।” অন্যদিকে, রায়গঞ্জের শীতগ্রামে ৩৫৩ জনের রক্ত পরীক্ষা করে স্বাস্থ্য দফতর। তাঁদের মধ্যে ওষুধ বিলি করা হয়। উত্তর দিনাজপুরের উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় চক্রবর্তী বলেন, “নতুন করে ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার জীবানু পাওয়া যায়নি। কারও জ্বর হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রায়গঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন।” ব্লক প্রশাসনের তরফে শীতগ্রামে মশা নিরোধক তেল ও জীবানুনাশক পাউডার ছড়ানো হয়েছে। মাইকিং করে এদিনও বাসিন্দাদের মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আজ, শনিবার ওই গ্রামে মশারি বিলি করবেন রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, “মশা থেকেই ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া ছড়ায়। এই জন্য গরিবদের মধ্যে মশারি বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” সম্প্রতি মুম্বইয়ে দিনমজুরি করতে গিয়ে শীতগ্রাম এলাকার ২০ জন যুবক জ্বরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়ি ফেরার পর ২ জনের মৃত্যু হয়। মালদহে মৃত্যু হয় আরও ১ জনের। বাকি ১৭ জনের মধ্যে ১৪ জনের রক্তে প্লাসমেডিয়াম ফ্যালসিফেরামের জীবাণু মেলে। বুধবারও বৃহস্পতিবার তাদের রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার থেকে শীতগ্রামে রক্ত পরীক্ষা শুরু করে। শীতগ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য আফতাব আলম বলেন, “আরও কয়েকদিন রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি ওছুধ বিলি করা হবে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।” |