‘ব্যবস্থা নেই’, ক্যানসারের
রোগীকে ছুটি দিল এইমস |
একুশ বছরের অলকা তিওয়ারি চেয়েছিলেন মৃত্যুর অনুমতি। কিন্তু সরকার এগিয়ে এসেছিল তাঁর চিকিৎসায়। ক’দিন তাই আশার আলো দেখেছিলেন রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত তরুণী। কানপুরের পারমত এলাকার এক বস্তিতে আশায় বুক বেঁধেছিলেন ভাই ব্রজেশ। কিন্তু ২১ দিন পর আবার তাঁরা অথৈ জলে।
কারণ, দেশের সেরা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম এইমস-ই জানিয়েছে, অলকার চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই তাদের কাছে। ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজে সেই ব্যবস্থা আছে। তাই সেখানে তাঁকে ভর্তি করানোর পরামর্শ দিয়ে এইমস অলকাকে ছুটিও দিয়ে দিয়েছে বুধবার।
টানাটানির সংসার। এর মধ্যে চিকিৎসার খরচ জুটবে কী করে? এই সব ভেবেই কানপুরের এক আদালতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক আর্জি পেশ করেছিলেন অলকা। “হয় সরকার তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করুক, নয়তো অনুমতি দিক স্বেচ্ছামৃত্যুর।”
স্বাভাবিক ভাবেই প্রথম পথটিই বেছে নিয়েছিল সরকার। গত ৫ অক্টোবর অলকাকে ভর্তি করানো হয়েছিল এইমসে। এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছিলেন কানপুরের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সোয়াল। তিনিই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদকে চিঠি লিখে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, যাতে অলকাকে লখনউয়ের সঞ্জয় গাঁধী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস থেকে এইমসে পাঠানো যায়।
সেই এইমস-ই ফিরিয়ে দেওয়ার পর ব্রজেশ ভেলোরের চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বোনকে দেখানোর একটা তারিখও পেয়েছেন তিনি। ১ নভেম্বর। কিন্তু ভেবে পাচ্ছেন না, কী ভাবে কী হবে। এইমসে চিকিৎসা হচ্ছিল সরকারি খরচে। কিন্তু তাদের ‘সাধ্য’ নেই অলকার চিকিৎসা করে। আবার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও তার বিশাল খরচ জোগানোর সাধ্য নেই তাঁদের। ভেলোরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে খরচ কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা। সরকারি কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যাপারে তাঁরা কিছু করতে পারবেন না। যদিও অলকাকে ভেলোরে নিয়ে যাওয়া হলে বিষয়টি তাঁরা দেখবেন, এমন কথাও তাঁরা বলেছেন ব্রজেশকে।
বোনকে বাঁচাতে ব্রজেশ এখন দোরে দোরে ঘুরছেন। এই বারও অবশ্য এগিয়ে এসেছেন, কয়লামন্ত্রী তথা কানপুরের সাংসদ শ্রীপ্রকাশ। ভেলোরে যাতে অলকার ঠিকঠাক চিকিৎসা হয়, তার জন্য ফের স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবিকে অনুরোধ জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। হামিরপুরের বসপা সাংসদ গঙ্গাচরণ রাজপুত আবার ভেলোরে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পুরো ২০ লাখ টাকাই নিজের সাংসদ তহবিল থেকে দেওয়ার জন্য অনুমতি চেয়েছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনসারির কাছে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে এই মুহূর্তে কিছুতেই যোগাযোগ করতে পারছেন না দিশাহারা অলকার দাদা। ফোন বেজে যাচ্ছে। |