অবরোধ-বন্ধের রাজনীতি মানুষ আর পছন্দ করছেন না। রাজ্যে শাসন ক্ষমতারও ‘পরিবর্তন’ হয়েছে। এই ‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে বাম শ্রমিক নেতাদের বলতে হচ্ছে উৎপাদন বন্ধ করে আন্দোলন নয়!
সব শ্রমিক সংগঠন একযোগে আগামী ৮ নভেম্বর, মঙ্গলবার ‘জেল ভরো’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। শুক্রবার সিটুর রাজ্য সম্পাদক কালী ঘোষ বলেন, “ওই দিন দুপুর ১ টায় রানি রাসমণি রোডে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। কাজের দিন। কলকারখানা সব খোলা। কাজ বন্ধ করে কেউ আন্দোলনে যোগ দেবেন না। যাঁরা জমায়েতে আসবেন, তাঁরা ছুটি নিয়ে আসবেন।”
ওই দিন কলকাতায় ৩৫-৪০ হাজার মানুষের জমায়েত হবে বলে কালীবাবুদের দাবি। জমায়েতের পর আইন অমান্য করবেন আরও ৭/৮ হাজার। ৯ দফা দাবিতে সর্বভারতীয় স্তরে বাম-অবাম সব শ্রমিক সংগঠনই ওই আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এ দিন সিটু অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে বাম নেতাদের সঙ্গে রাজ্য আইএনটিইউসি নেতা রমেন পাণ্ডেও ছিলেন।
বারবার অভিযোগ উঠলেও ফ্রন্টের আমলে সিটু বড় জমায়েত ডাকলে অনেক সময়েই কাজ বন্ধ করে শ্রমিকরা অংশ নিতেন। বিশেষত, আধা সরকারি ও সরকার অধিগৃহীত সংস্থায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধ-অবরোধের রাজনীতি বন্ধ করতে ‘সক্রিয়’ হয়েছেন। জানিয়েছেন, উৎপাদন ব্যাহত করে কোনও আন্দোলন করা যাবে না। সিটু নেতৃত্বও বুঝতে পারছেন, উৎপাদন ব্যাহত করে জমায়েত আমজনতা ভাল চোখে দেখবে না। কালীবাবুর অবশ্য দাবি, “বাম আমলে উৎপাদন বন্ধ করে শ্রমিকরা জমায়েতে যোগ দেননি। এ বারও দেবেন না।”
তবে উৎপাদন বন্ধ না-করে জমায়েতে আসতে হলে সংগঠিত শ্রমিকদের বড় অংশই আসতে পারবেন না। ফলে জমায়েতের মূল ভরসা অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকরা। কালীবাবু জানান, কলকাতা-হাওড়া-হুগলি-উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে শ্রমিকরা কলকাতায় জড়ো হবেন। প্রত্যেক জেলা সদর ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরের চার জায়গা এবং বীরভূমের তিন জায়গায় আইন অমান্য হবে। ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতি, শ্রম-আইন লঙ্ঘন, ঠিকা শ্রমিক ব্যবস্থা বন্ধ করা, ১০ হাজার টাকা নূন্যতম মজুরি, লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নীকরণ বন্ধের দাবিতে ‘জেল ভরো’-র ডাক দেওয়া হয়েছে। |