বৃষ্টি হলেই রাস্তার উপর দিয়ে জল বয়ে যায়। কখনও হাঁটু সমান জল কখনও বা কোমর সমান জল ঠেলে রাস্তা পেরোতে হয় বাসিন্দাদের। পাত্রসায়রের গড়ধার থেকে পদুয়া যাওয়ার কাঁচা রাস্তাটির বর্তমানে এমনই অবস্থা। তাই ওই রাস্তাটি অবিলম্বে পিচ করার দাবি জানিয়েছেন আশপাশের গ্রাম-সহ এলাকার বাসিন্দারা।
গড়ধার থেকে পদুয়া যাওয়ার রাস্তার প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন প্রয়োজনে ওই রাস্তা দিয়ে তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। বর্তমানে একদিকে খানাখন্দে ভরা, অন্য দিকে জলে ভরা ওই রাস্তা পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে অসুস্থ মানুষজনকেও। পাত্রসায়র ব্লকের নবাসন, করজবুনি, পদুয়া, মল্লবিঘা, মজুরডাঙা-সহ আশপাশের ১০টি গ্রামের বাসিন্দারা গড়ধার থেকে পদুয়া যাওয়ার রাস্তাটি ধরে জামকুড়ি পর্যন্ত যাতায়াত করেন। ওই সব গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই কৃষিজীবী। ফলে ফসল বিক্রি করতে তাঁদের পাত্রসায়র বাজারে যেতে হয়। গ্রাম থেকে পাত্রসায়র সদরে যাতায়াত করার সোজা পথ এই রাস্তাটি। নবাসন গ্রামের বাসিন্দা পিরু মণ্ডল, করজবুনি গ্রামের কালীপদ বাগদির ক্ষোভ, “একে তো কাঁচা রাস্তা। তার পরে বৃষ্টি হলে রাস্তা জল-কাদায় ভরে যায়। তখন রাস্তার অবস্থা আরও করুণ হয়ে পড়ে। ওই রাস্তাটা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।” তাঁদের আক্ষেপ, “রাস্তা বেহাল বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ফসল কিনতে গ্রামে আসছেন না। ফসল বিক্রি করার জন্য ঘুরপথে পাত্রসায়র বাজারে যাই।” পাত্রসায়রের বাসিন্দা তপন মালাকার, সমীর দে’রা জানান, একটু বৃষ্টি হলেই গড়ধারে ওই রাস্তায় কোমর সমান জল জমে যায়। তখন রাস্তা পেরনো রীতিমতো দুষ্কর হয়ে পড়ে। তবু বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে রাস্তা পেরোতে হয়। মোটরবাইক বা ছোট গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করাই যায় না।” এলাকার বাসিন্দা তথা পাত্রসায়র গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের সুচাঁদ দাস বলেন, “গড়ধার থেকে পদুয়া পর্যন্ত রাস্তাটা পাকা হলে এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের সুবিধা হবে। প্রশাসনের কাছে অনেকবার ওই রাস্তাটি পাকা করার জন্য দাবি জানানো হয়েছে।” পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “রাস্তা পাকা করা তো দূরের কথা, রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি ব্যবস্থা নেয়নি।” রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় বীরসিংহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের লক্ষ্মী মাঝি। তিনি বলেন, “পদুয়া থেকে গড়ধার পর্যন্ত রাস্তাটি পিচের হোক এটা আমাদেরও দাবি। তবে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এটা করা সম্ভব নয়। পিচ রাস্তার বিষয়টি পঞ্চায়েত সমিতিকে জানানো হয়েছে।” তবে প্রধানের দাবি, মাস আটেক আগে ওই রাস্তা আংশিক সংস্কার করা হয়েছিল। পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের দীপালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পদুয়া থেকে গড়ধার পর্যন্ত রাস্তাটির একাংশ খানাখন্দে ভরে গিয়েছে বলে জানি। তবে এই মুহূর্তে রাস্তাটি পিচ করার পরিকল্পনা নেই। সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” |