মিষ্টিমুখের উৎসবে বাধ সেধেছে সেই মিষ্টিই। ভাইফোঁটার দিন সকাল থেকেই বেলডাঙার মিষ্টির দোকানগুলোয় লম্বা লাইন। তবে সাধ্য মতো দাম দিয়েও মনপসন্দ মিষ্টি পাওয়া যাচ্ছে না। রংবাহারি-রকমারি ভাইফোঁটার বিশেষ মিষ্টির পসরা তো দুর অস্ত, রোজকার সাধারণ মিষ্টিও মিলছে না দোকানে। ব্যবসায়ীদের সাফাই, ছানার দাম বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা থাকলেও ভাল ও বেশি মিষ্টি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না।
হলদিয়া থেকে ভাইফোঁটা দিতে বেলডাঙা এসেছেন মালবিকা সরকার। মিষ্টির দোকানের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, “১৩ বছর পরে আমি ভাইফোঁটা দিতে এসেছি। বড় দোকানে এসে মনের মতো একটাও মিষ্টি পেলাম না। ভাইকে এ বার ভাল করে মিষ্টিমুখ করাব ভেবেছিলাম। তার আর সুযোগ কোথায়? রোজকার মিষ্টি দিয়েই ভাইফোঁটা সারতে হবে অগত্যা।” |
বেলডাঙার বিখ্যাত মনোহরা, কড়া পাকের ছানাবড়া, ক্ষীরকদম, মৌসুমি, দুর্গাভোগ, সাগরিকার মতো মিষ্টির দেখা নেই বেশির ভাগ দোকানেই। এ ছাড়াও জলভরা তালশাঁস, চিত্রকূট, অমৃতভোগ, মৌতারা, মৌচাকের মতো মিষ্টি বড় দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও প্রতি বছরই ভাইফোঁটা উপলক্ষে বিশেষ মিষ্টি তৈরি হয় প্রতিটি দোকানেই। সেখানে এ বছর ছানার দাম বাড়ায় ভাল মিষ্টির অভাব প্রায় সব জায়গাতেই। এমন কী খুব সাধারণ মিহিদানা, কালাকাঁদেরও দেখা পাওয়া ভার।
মিষ্টি ব্যবসায়ী সঞ্জয় দাস বলেন, “ছানার দাম বেড়ে প্রায় ১৫০ টাকায় ঠেকেছে। তার উপরে উৎসবের এই মরশুমে শ্রমিকও বেশি নেই। যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও কালীপুজো-ভাইফোঁটা উপলক্ষে এক বেলা ছুটি নিয়েছেন। মিষ্টির চাহিদা খুবই। কিন্তু সব মিলিয়ে আমরা যোগান দিতে পারছি না।”
বেলডাঙার আরও এক মিষ্টি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, “এই উৎসবের সময়ে বিভিন্ন মানুষ বেলডাঙায় আসেন। কালীপুজো-ভাইফোঁটার সময়ে মিষ্টির চাহিদা বেশ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তবে সেই অনুসারে ছানার যোগান মিলছে না। তার উপরে ছানার দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা বেশি ছানা কিনতেও পারছি না।” সকাল থেকে মিষ্টির দোকানের লাইনে দাঁড়িয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা শুক্লা পাল বললেন, “একে তো মিষ্টি পাওয়া যাচ্ছে না, তার উপরে যা মিলছে সেই মিষ্টির মান মোটেই ভাল নয়। প্রচুর ভেজাল মেশানো রয়েছে। জিলিপি পাওয়া যাচ্ছে বটে, তবে তা মুখে তোলার যোগ্য নয়।” সব মিলিয়ে ভাইকে মিষ্টিমুখ করাতে সকাল থেকেই দোকানে ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা। মনের মতো মিষ্টি না পেয়ে হা-পিত্যেশ করে ফিরেও যাচ্ছেন তাঁদের বেশির ভাগই। |