|
|
|
|
বিদ্যুৎ সংযোগ না মেলায় বিপত্তি |
সেচ-সঙ্কট, আশঙ্কা বাড়ছে খরিফ চাষে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জলাভাবে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে খরিফ চাষে। স্বভাবতই দুশ্চিন্তায় পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষকেরা। এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না জেলা পরিষদ থেকে কৃষি দফতরও। জেলায় এ বার খরিফ চাষে ফলন বেশি হওয়ায় সমস্যা আরও জটিল হচ্ছে।
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, বেশিরভাগ জমিতেই ধান এখনও পাকেনি। এখনও জমিতে জলের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত জল না থাকলে ফসল নষ্ট হতে পারে। সেচের জন্য জেলা জুড়েই চাষিরা এই সময়ে অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ নেন। এ জন্য জল-অনুসন্ধান দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট কৃষককে শংসাপত্র নিতে হয়। অভিযোগ, এই শংসাপত্র দিতে গড়িমসি করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জেলা সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “এই সময়ে জমিতে পর্যাপ্ত জল না থাকলে ধান নষ্ট হতে পারে। বিদ্যুৎ দফতরেরই উচিত ব্যবস্থা নেওয়া।”
পশ্চিম মেদিনীপুরে সব মিলিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ ৪৪ হাজার ৯৮৪ হেক্টর জমিতে খরিফ চাষ হয়। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার সব মিলিয়ে চাষ হয়েছে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮৪৪ হেক্টর জমিতে। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাতেই এখনও মাঠে ধান রয়েছে। নদী সংলগ্ন নিচু এলাকায় জলাভাব না থাকলেও অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় জল-সঙ্কট চলছে। অথচ চাষের এই শেষ পর্যায়ে পর্যাপ্ত জল পাওয়া না গেলে ধান নষ্ট হতে পারে।
এ দিকে, সেচের জলও সর্বত্র পৌঁছয় না। জলের চাহিদা মেটাতে এই সময় বিদ্যুৎ দফতরের কাছ থেকে অস্থায়ী সংযোগ নেন কৃষকেরা। এ জন্য এককালীন অর্থ জমা দিতে হয়। কিন্তু এখন অর্থ দিয়েও সংযোগ মিলছে না। জল-অনুসন্ধান দফতরে শয়ে শয়ে আবেদনপত্র পড়ে রয়েছে।
গত বছর জেলায় খরা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন চাষিরা। গভীর ও অগভীর নলকূপের জন্য অবিলম্বে অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া হলে এ বারও লোকসানের আশঙ্কায় কৃষকেরা। খড়্গপুরের গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা ফণিভূষণ চক্রবর্তীর কথায়, “চাষের এই শেষ পর্যায়ে স্রেফ জলাভাবে ফসলের ক্ষতি হলে দুঃখের শেষ থাকবে না। দু’-তিন দিন বৃষ্টি হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা তো নেই।” আর এক চাষি শেখ মসলেমের অভিযোগ, “সর্বত্র সেচ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠাতেই এই পরিস্থিতি।”
চাষিদের দ্রুত অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের জেলা নেতা অজিত মাইতি বলেন, “চাষিদের কথা প্রশাসনের সব স্তরেই জানিয়েছি। পর্যাপ্ত জলের অভাবে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হতে পারে।” এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ দফতরের জোনাল ম্যানেজার (মেদিনীপুর) নিরঞ্জন সাহার বক্তব্য, “পুরো পরিস্থিতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
|
|
|
|