|
|
|
|
‘স্বশক্তিকরণ’ প্রকল্পে ব্যর্থ ৩৩টি পঞ্চায়েত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
উন্নত পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করে পঞ্চায়েতগুলির ক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি নিয়েছিল রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। ‘গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাতিষ্ঠানিক স্বশক্তিকরণ’ নামে এই প্রকল্পে পূর্ব মেদিনীপুরের ফল রীতিমতো হতাশাজনক। অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তপূরণ না হওয়ায় প্রকল্প থেকে ছিটকে গিয়েছে জেলার ৩৩টি পঞ্চায়েত। শুধু ২০১১-১২ আর্থিক বছরে নয়, আগামী অর্থবর্ষেও এই প্রকল্পের অধীনে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলি।
স্বশক্তিকরণ কর্মসূচির আওতায় থাকা জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির বেশ কিছু দুর্বলতা রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন তৃণমূল পরিচালিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেনও। তিনি বলেন, “অধিকাংশ পঞ্চায়েত প্রথম কিস্তিতে প্রাপ্ত টাকা খরচ করতে পারলেও বেশ কিছু পঞ্চায়েত নিজেদের ব্যর্থতার জন্য তা পারেনি। এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত সমস্ত পঞ্চায়েতের প্রধানদের নিয়ে আগামী সপ্তাহে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
এই প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থে মূলত গ্রামের রাস্তা তৈরি, খাল সংস্কার, নদীবাঁধ মেরামত, বনসৃজন-সহ পঞ্চায়েত অফিসের পরিকাঠামোর উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। এই খাতে অর্থ পেতে পঞ্চায়েতগুলিকে ৪টি শর্তপূরণ করতে হয়। ১) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিকল্পনা ও বাজেট তৈরি, ২) নিঃশর্ত তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থের সদ্ব্যবহার সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দেওয়া, ৩) গ্রাম পঞ্চায়েত ‘মনিটরিং সিস্টেম’ চালু রাখা ও ৪) হিসেবপত্র যথাযথ রাখা। প্রথম পর্যায়ে রাজ্যের ৯টি জেলার প্রায় এক হাজার পঞ্চায়েতকে বাছাই করে এই কর্মসূচি শুরু করেছিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। এর মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের ১৩২টি পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ২০১১-১২ আর্থিক বছরের অনুদান হিসেবে জেলার ১০৫টি পঞ্চায়েতকে প্রায় ৭ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তপূরণ করে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছিল ১০৫টি পঞ্চায়েত। ২৭টি পঞ্চায়েত প্রথম কিস্তির বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে পারেনি। আবার প্রথম কিস্তির যোগ্যতা অর্জনকারী ১০৫টি’র মধ্যে ৬টি পঞ্চায়েত দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে পারেনি। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৩৩টি পঞ্চায়েত চলতি আর্থিক বছরে এই প্রকল্পের আওতা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি আগামী আর্থিক বছরে অর্থ বরাদ্দের ন্যূনতম যোগ্যতাও অর্জন করতে পারেনি ওই পঞ্চায়েতগুলি। এগুলির মধ্যে রয়েছে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ৪টি, কাঁথি-১ ব্লকের ৩টি, কাঁথি-৩ ও নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ১টি করে মোট ২টি, ভগবানপুর-২ ব্লকের ৩টি পঞ্চায়েত। এ ছাড়াও আছে মহিষাদল ও তমলুকের ৩টি করে ৬টি, খেজুরি-১ ও ২, ময়না এবং নন্দকুমার ব্লকের ২টি করে মোট ৮টি, কোলাঘাটের ২টি, পাঁশকুড়া-১, রামনগর-১ ও ২, দেশপ্রাণ ও মাতঙ্গিনী ব্লকের ১টি করে মোট ৫টি।
পঞ্চায়েত দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী এই ৩৩টি পঞ্চায়েতের অধিকাংশেরই বাজেট জমা পড়েনি অথবা নিঃশর্ত তহবিল থেকে বরাদ্দ অর্থের সদ্ব্যবহার সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়া হয়নি। আবার কিছু পঞ্চায়েতে ‘মনিটরিং সিস্টেম’ নেই। ফলে উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দের সুযোগ থাকলেও এই পঞ্চায়েত এলাকাগুলির বাসিন্দারা বঞ্চিত হচ্ছেন। |
|
|
|
|
|