|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
সুরাহা কবে |
তৃষিত প্রতীক্ষা |
দেবাশিস দাস |
মাত্র একটি জলাধার। আর তার উপরেই নির্ভরশীল চারটি পুর ওয়ার্ডের অধিকাংশ বাসিন্দা। ফলে পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছেন এলাকার মানুষ।
টলিনালার পশ্চিম পাড়ে কলকাতা পুরসভার ১১ নম্বর বরোর ১১১, ১১২, ১১৩ এবং ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ন্তগত এই বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। সমস্যা এক এক সময় এত বেড়ে যায় যে বাসিন্দাদের অতিরিক্ত পয়সা দিয়ে জল কিনতে হয়। পুরসভার জলের গাড়ি নিয়মিত পাঠিয়ে এবং অন্যান্য বিকল্প ব্যবস্থা করেও পানীয় জল সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলা করা যাচ্ছে না গড়িয়ার বোড়াল আতাবাগান থেকে কুঁদঘাট পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায়। বাসিন্দা আলপনা সরকারের কথায়: “প্রতি বার ভোটের আগে সব রাজনৈতিক দলের তরফ থেকেই জলের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই হয় না।” শুধু এই চারটি ওয়ার্ডই নয়, এই এলাকা লাগোয়া রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রান্তিক ওয়ার্ডগুলিতেও পানীয় জলের সমস্যা তীব্র বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। |
|
এই চারটি ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধিদের দাবি, রাজনৈতিক বিরোধ দূরে সরিয়ে বাসিন্দাদের জলের সমস্যা নিয়ে একাধিক বার পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করেছেন তাঁরা। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া সমস্যা সমাধানের অন্য কোনও রকম সুনির্দিষ্ট ইঙ্গিত পুরসভার কাছ থেকে মেলেনি। কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “পুরসভার তরফ থেকে গার্ডেনরিচ জল প্রকল্পের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তা বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ কলকাতা এবং শহরতলির অধিকাংশ এলাকাতেই পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
এলাকায় ঘুরে জানা গেল, পরিস্রুত পানীয় জল নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সমস্যা রয়েছে বোড়াল, আতাবাগানের বি ও ডি ব্লক, বিবেকানন্দ পার্ক সংলগ্ন এলাকা, ঘোষপাড়া, কামডহরি বোস পাড়া, বিধানপল্লি, রামকৃষ্ণনগর, লস্করপুর, গড়িয়া বাসডিপো সংলগ্ন এলাকা, এইচ এল সরকার রোড, রায়নগর, রানিয়া, চাকদহ, বাঁশদ্রোণী, কুঁদঘাট সংলগ্ন এলাকায়। বিস্তীর্ণ এই এলাকার কোথাও ট্যাপ কলে টিপটিপ করে জল পড়ে, কোথাও বা নলকূপ ভাঙা, কোথাও আবার জলের গাড়ি বা কলের সামনে বাসিন্দাদের লম্বা লাইন। এই সব এলাকার বসিন্দাদের অভিযোগ, পানীয় হিসেবে যতটুকু জল তাঁরা পান তা অনেক সময় লালচে হয়। ফলে সেই জল অধিকাংশ সময়েই খাওয়া যায় না। |
|
কিন্তু কেন এই হাল? কলকাতা পুরসভার ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্য বলেন, “এই সমস্ত এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জলের সঙ্কটের জন্য তিনটি কারণ দায়ী। প্রথমত, এই সব এলাকায় জনসংখ্যা আগের চেয়ে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেলেও পরিস্রুত পানীয় জলের বিষয়টি কার্যত একটি জলাধারের উপরেই নির্ভরশীল। দ্বিতীয়ত, গার্ডেনরিচের জল এলাকার সর্বত্র পৌঁছয় না। তৃতীয়ত, বাণিজ্যিক কারণে ভূগর্ভস্থ জল যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করায় মাটির নীচের জলস্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে। ফলে বৃষ্টি হলেও এলাকার অধিকাংশ পুকুরে জল থাকে না।”
পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহে যে সমস্যা রয়েছে তা স্বীকার করেছেন ১১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান এবং ১১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর গোপাল রায়। তাঁর কথায়: “পুরসভাকে এই এলাকায় আরও একটি জলাধার তৈরির প্রস্তাব দিয়েছি। এখন গার্ডেনরিচের যে পরিমাণ জল আমার পাচ্ছি তার থেকে আরও এক মিলিয়ন গ্যালন জল বাড়ানোর জন্য পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|