ব্যারেটো-জাদুতেও অস্বস্তির নাম ডেম্পো
ব্যা-ও জুটির যুগলবন্দি, না বহুচর্চিত ‘বাবলুর কপাল’কার সৌজন্যে শুক্রবার জিতল মোহনবাগান? ম্যাচের পর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই বাড়ি ফিরে গেলেন দর্শকরা।
বহু দিন পর আই লিগের শুরুতে পরপর দু’ম্যাচ জিতে গোয়া সফরে যাচ্ছে গঙ্গাপারের ক্লাব। তবে যাওয়ার আগের ম্যাচে বাগান যে ভাবে জিতল, তাতে স্বস্তির চেয়ে অস্বস্তির কাঁটাই থেকে গেল বেশি। স্বস্তি--ভাগ্যদেবীর কৃপাবর্ষণ এবং দুই মহা-তারকার গোলের মধ্যে থাকা। অস্বস্তিকঙ্কালসার রক্ষণ, অসংখ্য মিস পাস, উইং প্লে-র দৈন্য এবং সুনীল-আনোয়ারদের জঘন্য পারফরম্যান্স। এবং সবচেয়ে বড় কথা, ডেম্পো ম্যাচের আগে ব্যারেটো-ওডাফার চোট।
চিরাগ কেরল সেই অর্থে কোনও শক্তিই নয় এ বারের লিগে। অজয়ন ছাড়া টিমে কোনও চেনা ফুটবলারও নেই। জনা তিনেক মাঝারি মানের বিদেশি আর কেরলের কিছু নতুন ছেলে। তাদের বিরুদ্ধেই জিততেই এ দিন জিভ বেরিয়ে গেল মোহনবাগানের। এক ঝাঁক চূড়ান্ত ফিট ফুটবলারকে দিয়ে কিক অ্যান্ড রান ফুটবল খেলালেন কেরলের শ্রীলঙ্কান কোচ পাকির আলি। পাহাড়ি দলগুলোর মতোই দৌড়াল তাঁর টিম। দলের গোলকিপার শরথ না ডোবালে ‘বিড়াল প্রায় মেরেই’ ফেলেছিলেন পাকির।
তুমিই বাঁচালে। ব্যারেটোকে সুব্রত। যুবভারতীতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
শরথের হাত থেকে বেরোনো বলেই ওডাফা ফাঁকায় গোলটি করে গেলেন। সেটাও সামলে নিয়েছিল কেরল। অস্ট্রেলীয় ফুটবলার মাইকেল ১-১ করেও দিয়েছিলেন। কিন্তু তবুও যে শেষ পর্যন্ত সুব্রতর টিম হাঁটি হাঁটি পা পা করেও তিন পয়েন্ট পেয়ে গেল, সেটা স্রেফ ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের ঝলকেই। সংগ্রাম নিজে অন্তত দুর্দান্ত তিনটে সেভ করলেন। সাত মিনিট বাকি থাকতে ব্যারেটো-বর্শার সৌজন্যে হল ২-১। দুর্দান্ত একটা ফ্রি কিক থেকে ঠিকরে বেরোল ব্রাজিলিয়ান জাদু। প্রায় একার কৃতিত্বে এর আগেও ব্যারেটো বহু বার ফুল ফুটিয়েছেন বাগানে। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই গেল চৌত্রিশের ‘বুড়ো হাড়ে’ আর কত দিন ভেল্কি দেখাবেন সবুজ-তোতা?
স্টিভ ডার্বির ফেলে যাওয়া জুতোয় পা গলিয়ে টিমটার হাল কী, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন সুব্রত-প্রশান্তরা। কথা বলতে বলতে হতাশা বেরিয়েও আসছে। পরিবর্তনের বাজারে আপাতত পরিবর্তিত মোহনবাগান টিডি ম্যাচের পর প্রেস কনফারেন্স করতে পাঠাচ্ছেন কোচ প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ এফ সি-র কোচিং লাইসেন্স নেওয়ার সময় কোচেদের নিতে হয় মিডিয়া সামলানোর পাঠ। প্রশান্ত সেটা দারুণ রপ্ত করলেও তাঁর মুখ থেকেও ম্যাচের পর যা বেরোল তাঁর নির্যাসচাদর যদি ছোট হয় তা হলে গায়ের সব ক্ষত ঢাকা সম্ভব কি? আর বাড়ি ফেরার পথে সুব্রতর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “তিন পয়েন্ট দরকার ছিল। পেয়েছি। এখন পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবছি।”
পরের ডেম্পো ম্যাচের কথা ভেবে সুব্রতর রাতের ঘুম যে নষ্ট হবে সেটা বলাই বাহুল্য। মোহনবাগানের শিরে যে সংক্রান্তি! মন্দার বাজারেও যাঁর পা থেকে দু’ম্যাচে চার গোল এসেছে সেই ওডাফা ওকোলিই তো কুঁচকির পুরনো চোটের জন্য অনিশ্চিত। আজ শনিবার তাঁর এম আর আই হবে। খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ। অনিশ্চিত ব্যারেটোও। ইনজুরি সময় ধরে নয় মিনিট মোহনবাগান খেলল দশ জনে। খোঁড়াতে খোঁড়াতে বেরিয়ে আসা ব্যারেটো মাঠে নামতে চাইলেও রাজি হননি সুব্রত। আগেই তিন জন বদল হয়ে যাওয়ায় ব্যারেটোর বদলি নামানোর সুযোগ ছিল না। তা সত্ত্বেও মোহন-টিডি ঝুঁকি নিয়েছিলেন। ব্যারেটো দ্বিতীয়বার নামতে চাইলে সুব্রত তাঁকে প্রায় ঠেলেই বসিয়ে দেন বেঞ্চে।
কলকাতার টিমগুলোর মধ্যে প্রথম এ এফ সি-র গাইডলাইন মেনে নিজেরাই নিজেদের ম্যাচ সংগঠন করছে মোহনবাগান। টিকিট বিক্রি থেকে ম্যাচের যাবতীয় কাজ তারা নিজেরাই করছে। ম্যাচের আগে ফুটবলারদের সঙ্গে পরিচিত হলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কুমারশঙ্কর বাগচি এবং সচিব অঞ্জন মিত্র। ম্যাচ সংগঠনের দিক দিয়ে এ দিন অন্তত আই এফ এ-কে টেক্কা দিলেন মোহন-কর্তারা।
কিন্তু দোসরা নভেম্বর, মারগাওতে মোহনবাগানের ‘টেক্কা’ কী? ‘বাবলুর কপাল’ ছাড়া আর কিছুই তো দেখা যাচ্ছে না।

মোহনবাগান: সংগ্রাম, ধনরাজন, আনোয়ার, কিংশুক, নবি, হাদসন (গৌরাঙ্গ), মুরলী (অসীম), জুয়েল রাজা, ব্যারেটো, ওডাফা (রাকেশ), সুনীল।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.