সিরিজ শুরুর সময় মনে হয়েছিল এই প্রথম ভারতের মাটিতে ধোনিদের সমানে সমানে টক্কর দিতে পারবে ইংল্যান্ড। কারণ চোটের জন্য বেশ কয়েকটা বড় নামকে দলে পায়নি ধোনি। তরুণদের সামনে বড় সুযোগ ছিল প্রমাণ করার, ভারতীয় ক্রিকেটের মশাল এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা পরিণত হচ্ছে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শেষে মনে হচ্ছে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য সব প্রশংসা প্রাপ্য তরুণদের। দেশের বাইরেও ওদের এখন এই বিশ্বাসটা দেখাতে হবে। যাতে বিশ্বের কাছে এই বার্তাটা পৌঁছে দেওয়া যায়, ভারতীয় ক্রিকেট যথেষ্ট সুস্থ। ইংল্যান্ড সফর শুধু একটা খারাপ অধ্যায় ছিল।
ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে ভারত নিঃসন্দেহে খারাপ খেলেছিল। কিন্তু এক দিনের ম্যাচগুলোয় ধোনিদের পারফরম্যান্স অনেক ভাল ছিল। দুর্ভাগ্যবশত কয়েকটা ম্যাচ জিততে পারেনি ভারত। মূলত বৃষ্টি আর বাজে বোলিংয়ের জন্য। তবে ভারতের মাঠে ইংল্যান্ড যে রকম নাজেহাল হল, সে রকম অবস্থা কিন্তু ধোনিদের হয়নি। এই সিরিজটায় ভারতীয় বোলিংয়ে তীক্ষ্নতা, নিয়ন্ত্রণ এবং বৈচিত্র দেখলাম। যার বিরুদ্ধে ইংরেজ ব্যাটসম্যানরা এত ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিল, দেখে মনে হচ্ছিল ওরা জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে। ব্যাটিং, বোলিং, এমনকী ফিল্ডিংয়েও ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্স হতাশাজনক। ব্যাট করার সময় এক বারও মনে হয়নি নিজেদের ইনিংসের উপর ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণ আছে। উল্টো দিকে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ তৈরি করে ওদের দিয়ে জোর করে ভুল করাতে ব্যর্থ হয়েছে ইংল্যান্ড বোলিং।
ধোনি আরও এক বার দেখিয়ে দিল, এক দিনের ক্রিকেটে ও কত বড় চ্যাম্পিয়ন। মনে হচ্ছে ছ’নম্বরে নামার জন্য ও মানসিক ভাবে নিজেকে তৈরি করে ফেলেছে। ছ’নম্বরে নেমে ধোনি কখনও ম্যাচ জেতাচ্ছে, কখনও বড় শট মেরে বিপক্ষের সামনে বড় টার্গেট রাখছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ওর বিশ্রাম খুব দরকার। যাতে মাস কয়েক পরের অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে ও ঠান্ডা মাথায় ভাবনাচিন্তা করতে পারে। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট এবং জাতীয় নির্বাচকদের অনেক বেশি বিবেচনা করে ক্রিকেটারদের কাজে লাগাতে হবে। বিশেষ করে উমেশ যাদব এবং বরুণ অ্যারনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। যাতে ওরা বিশ্ব ক্রিকেটের পেসারদের কাছে ভারতের জবাব হয়ে উঠতে পারে। বিরাট কোহলিরও সর্বোচ্চ স্তরে ভাল খেলার ক্ষমতা আছে। ওর ব্যাপারেও নির্বাচকদের সতর্ক থাকতে হবে। এক দিনের ক্রিকেটে রবীন্দ্র জাডেজা এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন ম্যাচউইনার হয়ে উঠতে পারে।
মনে হয় দিওয়ালি-পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ায় ওয়ান ডে ম্যাচটার তুলনায় শনিবার ইডেনে অনেক বেশি ভিড় হবে। মাঠের পরিবেশ যে কতটা উত্তেজক হবে বুঝতেই পারছি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইংল্যান্ড এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। আইসিসি-র নতুন টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়েও এক নম্বরে। আশা করি সেটা ইংরেজদের ভাল খেলতে তাতিয়ে দেবে। যদিও ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়, ভারতের মাটিতে ইংরেজদের একটুও জায়গা ছাড়বে না তরুণ ভারতীয় দল। |