খাঁচা ফাঁকা, ফিকে হয়েছে খয়েরবাড়ি
পুরুণ্ডি, ঢাড্ডা ঘাসের বনের মধ্যে জ্বলজ্বল করত কয়েক জোড়া চোখ। কখনও একেবারে গাড়ির সামনে হাজির হত চিতাবাঘ। মাঝখানে কাঁটাতারের পুরু জাল। স্পষ্ট দেখা যেত চিতাবাঘ। কখনও দেখা যেত চিতাবাঘের জল খাওয়ার দৃশ্য। পাশাপাশি, সার্কাস থেকে উদ্ধার হওয়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারও আশ্রয় পেয়েছে খয়েরবাড়িতেই। সে জন্য ফালাকাটার অদূরে খয়েরবাড়িতে চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভিড় উপচে পড়ত। রোজ গড়ে ৪০-৫০টি গাড়ির লাইন পড়ত। কিন্তু, চিতাবাঘ ও বাঘ দুই-ই কমায় জৌলুস হারাচ্ছে খয়েরবাড়ি। ৬টি চিতাবাঘ ছিল। বর্তমানে তা কমে হয়েছে ২টি। সেগুলিকে ছাড়া হয় না প্রায় ১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি কৃত্রিম বনে। খাঁচায় থাকায় পর্যটকেরা গিয়ে দেখতে পান না। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যাও কমেছে। যে গুলি আছে তাও খাঁচায়। এই ঘটনার কতা দফতরের তরফে বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনের কাছে পৌঁছয়নি।
ফালাকাটার দক্ষিণ খয়েরবাড়ি রেসকিউ সেন্টারে চিতাবাঘ।
বনমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি আমাকে কেউ জানায় নি। খোলা আকাশের নীচে কৃত্রিম বনে চিতাবাঘ রাখা হচ্ছে না কেন তা জানতে চাইব। খয়েরবাড়ির গুরুত্ব অনেক। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখতে বহু মানুষ আসছে। সেন্ট্রাল জু অথরিটি তাদের খাবারের খরচ দেবে না বলায় বাঘগুলিকে ভোপালে পাঠানোর জন্য চিঠি লিখেছিল। আমরা জানিয়ে দিয়েছি, বাঘের খাবারের খরচ আমরা দেব। রাজ্য খরচ মেটাবে। পর্যটকদের কথা ভেবে সব রকম ভাবে উদ্যোগী হব।”
প্রধান মুখ্য বন পাল (বন্যপ্রাণ) সীতাংশু শেখর মণ্ডলের কথায়, “পুরো বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি। নিজেদের মধ্যে মারামারি করে বলে হয়তো এক সঙ্গে তাদের রাখা হচ্ছে না।” বন দফতর সূত্রের খবর, চা বাগান থেকে উদ্ধার করে আনা চিতাবাঘ গুলির জীবন ভর যাতে বন্দি দশায় না-থাকে, সে জন্য কৃত্রিম বন তৈরি হয়। বনে ছাড়লেও যাতে তারা শিকার করে পেট ভরতে পারে সে উদ্দেশ্যে ২০০৩ সালে রাজ্য সরকার দক্ষিণ খয়েরবাড়ি পর্যটন কেন্দ্রের ভেতর শক্ত জাল দিয়ে ঘেরা ১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ওই বন বানায়। তার পরে ব্যাটারি চালিত গাড়ি চেপে ওই বনের চারদিক ঘুরে চিতাবাঘ ও বাঘ দেখার জন্য লম্বা লাইন পড়ত।
ব্যাটারিচালিত গাড়ি
বর্তমানে সেখানে ২ টি বাঘ একটি থাকে খাঁচায় আর অপরটি প্রায় সময় কখন কোন ঝোপে বসে থাকে তার দেখা মেলেনা জন প্রতি ৬০ টাকা খরচ করে ভেতরে গিয়ে শুধু মাত্র খাঁচার ভেতরে থাকা বাঘ দেখে বাইরে বেরিয়ে এসে প্রায় সময় ক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেকে। বন সুরক্ষা কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, খয়েরবাড়িতে অন্যত্র খাঁচার ভেতর ৬ টি লেপার্ডকে রাখা হয়েছে। সে গুলিকে খোলা আকাশের নীচে কৃত্রিম বনে রাখার জন্য বার বার কর্তাদের জানানো হলেও কোন লাভ হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। বন সুরক্ষা কমিটির এক সদস্য জানান, চার বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। কয়েকটি বাঘ চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার কয়েকটি মরেছে। বর্তমানে দুটি অবশিষ্ট রয়েছে। খাঁচার বাঘগুলিকে এখানে ছাড়া হলে ভাল হয়। খয়েরবাড়িতে সার্কাস থেকে উদ্ধার করে আনা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারগুলির মধ্যে কয়েকটি বয়সজনিত কারণে মারা গিয়েছে। এখন ৬ টি বাঘ রয়েছে।

ছবি: রাজকুমার মোদক


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.