শারদোৎসব, দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে কার্ড বিলির চল আজকের নয়। বিভিন্ন সংস্থা, ক্লাব, ব্যক্তিগতস্তরেও অনেকে পরিচিতদের মধ্যে কার্ড বিলি করেন। কিন্তু, সেই কার্ডে সাধারণত সামাজিক কোনও বার্তা থাকে না। মূলত ব্যক্তিগত কুশল বিনিময়ই সে সব কার্ডের অন্তর্বস্তু। এ বার কিন্তু মেদিনীপুর শহরেরই এক পুজো-কমিটি অন্য ভাবনার স্বাক্ষর রেখেছে তাদের কার্ডে। গাছ লাগানো এবং গাছ বাঁচানোর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে সেই কার্ডে।
পুজো-কমিটিটির সদস্য অনীত ঘোষ, দেবাশিস মিত্রদের বক্তব্য, “শহরে ক্রমশ সবুজ ধ্বংস হচ্ছে। গাছ কেটে বহুতল হচ্ছে। নতুন করে গাছ লাগানোর তেমন উদ্যোগ নেই। এই অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাসযোগ্যই থাকবে না এ শহর। তাই জনসচেতনতা বাড়াতেই এই প্রয়াস।”
শুধু শুভেচ্ছা কার্ডেই নয়, এ বার পুজোতেও পরিবেশ সংরক্ষণ এবং স্বাস্থ্য-সচেতনতার উপরে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল শহরের শরৎপল্লি দুর্গোৎসব কমিটি। পুজো মণ্ডপের এক পাশে ফ্লেক্সে তুলে ধরা হয়েছিল পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়। যেমন, কেন বেশি করে গাছ লাগানো দরকার। |
এক জন মানুষের দিনে কত পরিমাণ অক্সিজেন প্রয়োজন, ইত্যাদি। বহু মানুষ পুজো-প্যান্ডেলের পাশাপাশিই ঘুরে দেখেছেন প্রদর্শনী। শুভেচ্ছা-কার্ডে সেই প্রদর্শনীর ছবি ছাপা হয়েছে। এলাকাবাসী ও শুভানুধ্যায়ীদেরশারদীয়া ও দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে সেই কার্ড বিলি করা হয়েছে।
শরৎপল্লি নাগরিক সমিতির উদ্যোগেই হয় দুর্গাপুজো। সমিতির সভাপতি সুভাষচন্দ্র মাজি, সম্পাদক উত্তম রায়ের কথায়, “এখন আরও বেশি করে গাছ লাগানো জরুরি। কলকারখানা বাড়ছে। দূষণ ছড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে উৎসাহ কমলে পরিবেশেরই ক্ষতি।” সমিতির অন্য এক সদস্যের কথায়, “সীমিত ক্ষমতার মধ্যে থেকে যতটকু সম্ভব, আমরা তাই করছি। এই উদ্যোগ যদি কয়েক জনকেও প্রভাবিত করে, সেটাই আমাদের প্রাপ্তি।” পুজো-কমিটির এমন উদ্যোগের প্রংশসা করেছে বন দফতরও। গাছ লাগানোর জন্য সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতে বছরের নানা সময়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে বন দফতর। অরণ্য-সপ্তাহে চারা গাছ বিতরণ করা হয়। বন দফতরের রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “এ ভাবে বিভিন্ন ক্লাব-সংস্থা এগিয়ে এলে নিশ্চিত ভাবেই পরিবেশ-সচেতনতা বাড়বে।” |