হাউয়ের আড়ালে বিকিয়েছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি
শব্দে অতিষ্ঠ শহর
নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না-করে কালীপুজোর রাতে আকাশে হাউয়ের সঙ্গে বিকট শব্দে টানা শব্দবাজি ফাটানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিলিগুড়িবাসী। বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, ‘চকলেট বোম’ জাতীয় শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত হলেও আকাশে উঠে ফাটবে এমন শব্দবাজির দূষণ মাত্রা মাপা হয়নি বলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও স্বীকার করেছে। স্বভাবতই রাতভর আকাশ জুড়ে হাউয়ের মধ্যে থাকা শব্দবাজি বিকট শব্দে ফাটায় অতিষ্ঠ হয়েছেন শিলিগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। দেওয়ালির পরের রাতেও এভাবে বিকট শব্দে বাজি ফাটার ঘটনার কথা পৌঁছেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছেও। পুলিশ-প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ, পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলির তরফে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এত শব্দবাজি সাম্প্রতিক অতীতে শিলিগুড়িতে দেওয়ালির সময়ে ফাটেনি বলে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে জানিয়েছেন। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী বলেছেন, “এমন নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর প্রবণতা বাড়ছে কেন সেটা দেখা দরকার।” রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক দফতরের আধিকারিক গৌতম পাল বলেন, “দু রাত ধরে আমাদের বিশেষ টিম এলাকা ধরে ধরে পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছে। কন্ট্রোল রুমেও টেলিফোনে অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন। শব্দবাজি পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। বিশেষ করে আকাশে ফাটা আতসবাজি থেকে যে শব্দ হয়েছে তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।” ওই ধরনের আতসবাজি রুখতে কী করা যায় তা অবশ্যই দেখা হবে বলে গৌতমবাবু জানিয়েছেন। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির গাঁধী ময়দান, চম্পাসারি, সেবক রোড, খালপাড়া, হাকিমপাড়া, আশ্রমপাড়া, দেশবন্ধুপাড়া, শক্তিগড় এলাকায় দেদার শব্দযুক্ত হাওয়াই ফেটেছে। প্রথম দিনই পুলিশকে ১৩টি মামলার করার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানিয়েছে। বহু ক্ষেত্রে পর্ষদের কর্তারা এবং পুলিশ দেখেছে বহুতলের ছাদ থেকেই ওই আতসবাজি ফাটানো হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে অভিযোগ পেয়ে এলাকা পৌঁছাতে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি এলাকায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে অবশ্য কিছু সুফল মিলেছে।
সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া এই প্রবণতা বন্ধ করা পুরোপুরি কোনও মতই সম্ভব নয় বলে মনে করছেন শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি। তিনি বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণ পষদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েই আমরা এলাকাগুলিতে পৌঁছেছি। পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি ঠিকই তবে চেষ্টার ত্রুটি রাখা হয়নি। শিলিগুড়ি এবং প্রধাননগর মিলিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১২০০ কেজি শব্দবাজি আটকও করা হয়েছে। সচেতনতা বাড়লেই শব্দবাজি বন্ধ হবে।” গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় বেশি পরিমাণে শব্দবাজি এবং শব্দ যুক্ত হাউই ফেটেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, শুধু বাসিন্দা, রোগী বা বয়স্ক লোকজন নয়। মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে রোগীদের অনেককেই রাতে জেগে কাটাতে হয়েছে। পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “শব্দবাজি তো বটেই আকাশে উঠে ফাটা হাওয়াই থেকে একযোগে পর পর যা আওয়াজ হয়েছে তা ভাবা যায় না। বহু মানুষ রাতভর শব্দ দূষণে রাতে ঘুমোতে পারেননি। আকাশে ওঠার সময়ে অনেক ক্ষেত্রেই আতসবাজির ফুলকি গাছপালায় পড়েছে। মনে রাখতে হবে, শহরের বড় বড় গাছে বহু পাখি থাকে। সব দিক ভেবেই এ ধরনের শব্দবাজি রুখতে হবে। পুলিশ-প্রশাসনকে আরও কড়া মনোভাব দেখাতে হবে। দলমত নির্বিশেষে সকলকে সচেতন হতে হবে।”

প্লাস্টিক বন্ধে পুর-অভিযান
প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধে ফের অভিযানে নামল রায়গঞ্জ পুরসভা। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে কাউন্সিলর ও আধিকারিকরা গত এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালাচ্ছেন। এর মধ্যেই শহরের লাইন বাজার ও দেবীনগর বাজারে প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগ ব্যবসায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৫০০ টাকা করে জরিমানা করেছেন। ১৫ কেজি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ ধরে ওই অভিযান জারি রাখবে পুরসভা। ভাইস চেয়ারম্যান রণজকুমার দাস বলেন, “পুজোর সময়ে ব্যবসায়ীদের একাংশ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ পাই। এর পরেই অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা করা হয়েছে। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবসা থেকে সরে না আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, “ব্যবসায়ীরা যাতে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবসা থেকে সরে আসেন তার জন্য শীঘ্রই সংগঠনের তরফে সচেতনতার কাজে নামা হচ্ছে।” রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশে ২০১০ সালের মে মাসে ক্যারিব্যগ বিরোধী সচেতনতায় নামেন পুর কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ীদের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবসা বন্ধে পরামর্শ দেওয়া হয়। তাতে কাজ না হওয়ায় ওই বছরই ১৫ জুলাই থেকে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ অভিযানে নামেন পুর কর্তৃপক্ষ। ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ১৫ কুইন্টাল ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করা হয়। জরিমানা বাবদ ৬৩০০০ টাকা আদায় হয়। পুরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক সুদেব দাস বলেন, “বিধানসভা ও পুরসভা নির্বাচনের জন্য কয়েক মাস নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বিরোধী অভিযান সে ভাবে হয়নি। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মজুত করে ফের চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। তাই অভিযান শুরু হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.