দুর্নীতির অভিযোগ, মতবিরোধ, অন্তঃকলহে বিরক্ত হয়ে শিবিরের কোর কমিটি ঢেলে সাজার ইঙ্গিত দিলেন অণ্ণা হজারে। কোর কমিটির আয়তন বাড়াতে চান তিনি। অণ্ণা হজারের ব্লগার সাংবাদিক রাজু পারুলেকর জানিয়েছেন, অণ্ণা-শিবিরের কোর কমিটির আয়তন খুব শীঘ্রই বাড়ানো হবে। কিন্তু এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি পারুলেকর।
দুর্নীতিতে বিরক্ত হয়ে কোর কমিটি ঢেলে সাজার দাবি তোলেন কমিটিরই দুই সদস্য মেধা পাটকর এবং কুমার বিশ্বাস। আগামিকাল অণ্ণা-শিবিরের কোর কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা গাজিয়াবাদের কোসাম্বিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পাবলিক কজ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অফিসে।
মৌনব্রত পালন করার জন্য বৈঠকে থাকবেন না অণ্ণা হজারে। এ ছাড়া বৈঠকে অংশ নেবেন না মেধা পাটকর এবং কুমার বিশ্বাস। দু’জনেই জানিয়েছেন কোর কমিটি ‘ঢেলে সাজার’ দরকার রয়েছে। মেধা পাটকর বলেন, “আমার মনে হয় না এখানে কোনও মতানৈক্য রয়েছে। কিন্তু অনেকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কোর কমিটির অনেক সদস্যকেই আক্রমণ করা হচ্ছে। তাই কোর কমিটি ঢেলে সাজার দরকার হয়ে পড়েছে।” এর পরই কোর কমিটির আয়তন বাড়ানো হতে পারে বলে জানান পারুলেকর। কোর কমিটির বৈঠকে অংশ নেবেন না সন্তোষ হেগড়েও।
অণ্ণাকে চিঠি লিখে কোর কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন কুমার বিশ্বাস। চিঠিতে কলেজের শিক্ষক এবং কবি কুমার বিশ্বাস লিখেছেন, “অণ্ণা-শিবিরকে ক্রমাগত আক্রমণ করা হচ্ছে এবং অণ্ণা-শিবিরের সদস্যরা তার ব্যাখা
দিয়ে যাচ্ছেন। অণ্ণা-শিবিরের মূল বিষয় থেকে যাঁরা দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন, এই সব ঘটনা তাঁদের শক্তিশালী করছে। তাই আমার অনুরোধ কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা আরও বাড়ানো হোক।” তাই দুর্নীতি-মুক্ত নতুন ভারত গড়ার জন্য কোর কমিটি ভেঙে দিয়ে তা নতুন করে সাজার জন্যও চিঠিতে অণ্ণাকে অনুরোধ করেছেন তিনি। এর পরই অণ্ণা কোর কমিটির আয়তন বাড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়ায় ব্যাপারটিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। পারুলেকর আরও জানান, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য অণ্ণা একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ার কথাও ভাবছেন।
অণ্ণা শিবিরের বিরুদ্ধে আক্রমণও জারি রয়েছে। এ দিন অণ্ণা-শিবিরের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সদ্য শিবির ছেড়ে যাওয়া রাজেন্দ্র সিংহ। তাঁর অভিযোগ, “হিসার উপনির্বাচনে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীকে সমর্থন করে দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলন থেকে বিচ্যুত হয়েছেন অণ্ণা ।” হিসার উপ নির্বাচনে কংগ্রেসকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানান অণ্ণা। রাজেন্দ্রর আরও অভিযোগ, অণ্ণা-শিবির ‘অহঙ্কারী’ লোকেতে ভর্তি। সব চেয়ে ‘বেশি অহঙ্কারী’ কিরণ বেদী এবং অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এর মধ্যেই অণ্ণা হজারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা। অণ্ণার আন্দোলনকে সমর্থন করে আজ দেরাদুনে তিনি বলেন, “দুর্নীতি খুবই বড় সমস্যা আর এটি হিংসারই আর একটি রূপ।” |