ফোনটি এসেছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে। বলা হয়েছিল, ‘আমি ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সদস্য। মহাকরণ উড়িয়ে দেব।’
ঘটনাটি গত মঙ্গলবারের। হুমকি-ফোন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অফিসারেরা হতভম্ব হয়ে যান। তাঁরা তড়িঘড়ি বিষয়টি জানান রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে। পরে ওই হুমকির কথা কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়। তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। ওই হুমকি-ফোনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে মুর্শিদাবাদ থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ধৃতের নাম মহম্মদ মোস্তাকিন হোসেন। ওই যুবক আদৌ ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন বা এই ধরনের কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না, শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশকর্তারা নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেননি। পুলিশ জানায়, মোস্তাকিন তার এক আত্মীয়ের মোবাইল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ফোনটি করেছিল। মোবাইলের সূত্র ধরেই তাকে ধরা হয়। কেন সে মোবাইল থেকে ফোন করে মহাকরণ উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিল, পুলিশ এ দিন অবশ্য তা জানাতে পারেনি। পুলিশকর্তারা শুধু জানিয়েছেন, গ্রেফতারের পরেই মোস্তাকিন বলে, তার বুকে ব্যথা হচ্ছে। তাই জেরা না-করেই এ দিন তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
কে এই মোস্তাকিন? মুর্শিদাবাদ পুলিশ এ দিন জানায়, মোস্তাকিন গরিব পরিবারের সন্তান। পড়াশোনা দশম শ্রেণি পর্যন্ত। বাবা মারা গিয়েছেন। তার মা ও ভাই আছেন। ভাই কলা বিক্রি করে সংসার চালান। ‘হামবড়া’ প্রকৃতির জন্য এলাকার বাসিন্দারা মোস্তাকিনকে বিশেষ পছন্দ করেন না। প্রথম পক্ষের স্ত্রী, এক ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে সে কামারিগ্রামে থাকে। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশকে জানিয়েছেন, মোস্তাকিন আগের বিয়ের কথা গোপন করে বছর দুয়েক আগে বেলডাঙা থানার বড়ুয়া মোড় এলাকার এক মহিলাকে বিয়ে করে। দ্বিতীয় পক্ষের একটি সন্তানও আছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার মোস্তাকিন যে-মোবাইল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফোন করে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ, সেই ফোনের সিমকার্ড কেনা হয়েছে সুতি থানার ওমরাপুর এলাকা থেকে। অথচ মোস্তাকিনের বাড়ির ঠিকানা রানিতলা থানা এলাকায়। পরে জানা যায়, ওই সিমটি তার এক আত্মীয়ের। তার পরেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। |