শুক্রবার সারা দিন একটা দমকা হাওয়া বয়ে গেল কলকাতার উপর দিয়ে। মাঝেমধ্যেই মেঘ এসে ঢেকে দিচ্ছিল সূর্যকে। হাওয়া আর মেঘলা আকাশে শীতের উঁকিঝুঁকি। চামড়ায় ধরছে টান।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের রেকর্ড জানিয়েছে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ২০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা এ সময়ের স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থেকে দুই ডিগ্রি কম। শীতপ্রেমী শহরবাসীর তাই প্রশ্ন, এ বার কি তা হলে কলকাতায় শীতটা আগেভাগেই এসে পড়ল?
দুর্গাপুজোর আগে থেকেই বৃষ্টি কমে এসেছে দক্ষিণবঙ্গে। বর্ষাও বিদায় নিয়েছে নির্ঘণ্ট মেনে। গত কয়েক বছরের মতো তা আর অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এগোয়নি। ফলে বাতাসে জলীয় বাষ্প কমে এসেছিল অনেকটাই। লক্ষ্মীপুজোর পরে একের পর এক নিম্নচাপ অক্ষরেখা আর ঘূর্ণাবর্তও তেমন বৃষ্টি নামাতে পারেনি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এ বছর বাতাস বেশ কিছুটা আগেই শুকনো হয়েছে। কালীপুজোর ঠিক আগেই তাই পরিমণ্ডলে হাজির শীত-শীত ভাবটা। ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি আবহাওয়া পরিবর্তনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। পুজোর পর থেকেই বাজারে দেখা যাচ্ছিল ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলো। তার জোগান বেড়েছে। এসে গিয়েছে শীতের অন্য সব্জি বিন এবং শিমও। হাজির ধনেপাতাও। তবে, স্থানীয় বিট-গাজর এখনও অমিল। |
কালীপুজোর রাতে ঘন কুয়াশা পড়েছিল কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায়। শুক্রবার সকালে ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দুও শীতের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল। গত বছরের তুলনায় এ বার অক্টোবরের এই সময়টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যে দ্রুত নামছে, তা স্বীকার করলেও এখনই কলকাতায় শীত পড়ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আবহবিদেরা। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশের উপরে একটা ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। তার জন্য আকাশে মেঘ ঢুকছে মাঝে মাঝে।
মেঘের কারণ না হয় জানা গেল। কিন্তু এ দিন দুপুরে কলকাতার উপর দিয়ে যে দমকা হাওয়া বেশ কিছু ক্ষণ ধরে বয়ে গেল, তার কারণ কি ওই ঘূর্ণাবর্তই? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “ঘূর্ণাবর্তের হাওয়া নয়। উত্তর ভারত থেকে জোরালো উত্তুরে বাতাসও এখনও এসে পৌঁছয়নি। এটা স্থানীয় ভাবে তৈরি হওয়া একটা হাওয়া।”
আবহবিদদের ব্যাখ্যা, ওই হাওয়াটা ছিল একেবারেই সাময়িক। শীতের সঙ্গে তার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তা হলে কি শীত এখনও অধরাই থাকছে কলকাতাবাসীর কাছে? গোকুলবাবু কিন্তু খুব একটা নিরাশ করেননি মানুষকে। তিনি বলেন, “সোমবার থেকে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে শুরু করবে কলকাতার। ঠান্ডাটা তখন আরও একটু ভাল ভাবে অনুভব করা যাবে। ‘আসল’ শীত আসতে সেই নভেম্বরের শেষ।” |