|
|
|
|
নিখোঁজ খণ্ডঘোষের ছাত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
হুইল চেয়ারে বসে ভাইদের কপালে ফোঁটা দিতে দিতে কেঁদে ফেললেন বিমলাদেবী।
শুক্রবার কাটোয়ার খাজুরডিহি গ্রামের আনন্দ নিকেতনের বৃদ্ধাশ্রমে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান হয়। ওই বৃদ্ধাশ্রমে ১৫ জন বৃদ্ধ ও ১০ জন বৃদ্ধা রয়েছেন। আনন্দ নিকেতন হোমের মানসিক ভারসম্যহীন শিশুরাও এ দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল।
|
নিজস্ব চিত্র। |
বিমলা চক্রবর্তীর বাড়ি জামশেদপুরে। শিক্ষকতা করতেন। গত আট বছর ধরে তাঁর ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম। তাঁর কাছ থেকে যাঁরা ফোঁটা নিলেন সেই ভাইয়েরাও ওই বৃদ্ধাশ্রমেরই বাসিন্দা। বিমলাদেবী বলেন, “ভাইফোঁটা নিয়ে অনেক টুকরো টুকরো স্মৃতি চোখের সামনে ভসে ওঠে। সেই স্মৃতি অবশ্য কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান না তিনি। তিনি মনের কথা মনের ভিতরেই রাখতে চান। বর্ধমানের বাসিন্দা প্রদীপ বিশ্বাস শিক্ষক ছিলেন।
এখন তিনি বৃদ্ধাশ্রমেই থাকেন। তাঁর কথায়, “এই ধরনের অনুষ্ঠান হলে বাড়ির একটা অনুভূতি পাই, যা বেশ ভাল লাগে।” দশ দিন ধরে নিখোঁজ বর্ধমানের এক স্কুলছাত্র। বর্ধমান পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রের নাম সন্দীপ চক্রবর্তী। গত ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যে থেকে সে নিখোঁজ। তার বাবা, খণ্ডঘোষ থানার তোড়কোনার বাসিন্দা দিলীপ চক্রবর্তী জানান, সন্দীপ তোড়কোনা স্কুলের শিক্ষক রমেশ ভুঁইয়ার বর্ধমানের ছোট বালিডাঙার ভাড়া বাড়িতে থাকত। ১৮ অক্টোবর গ্রাম থেকে সে বর্ধমান শহরে যায়। কিন্তু পরের দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সে দেশের বাড়ি যাচ্ছি বলে বেরোয়। তার পর থেকে সন্দীপের খোঁজ তাঁরা পাননি বলে জানান দিলীপবাবু।
যে শিক্ষকের বাড়িতে সন্দীপ থাকত, সেই রমেশবাবু বলেন, “যে দিন থেকে সন্দীপ নিখোঁজ, আমি সে দিন বাড়িতে ছিলাম না। থাকলে ওকে সন্ধ্যায় বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরোতে দিতাম না। সন্দীপ লেখাপড়ায় বেশ ভাল। মাধ্যমিকে ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল সে। একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার পরীক্ষাতেও প্রায় ৮৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলোতেও যোগ দিত। কী ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না।” সন্দীপের মা সবিতাদেবী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমরা শুধু চাই, ছেলে যেখানেই থাকুক যেন ফিরে আসে।” বর্ধমান থানায় গত ২৪ অক্টোবর ছেলের নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন দিলীপবাবু। দেখা করেছেন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের সঙ্গেও। তিনি বলেন, “প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ, ছেলেটি নিজেই কোথাও লুকিয়ে রয়েছে। তাকে খোঁজার ব্যাপারে সিআইডি-র সঙ্গে যোগাযোগ করছি। নিখোঁজ হওয়ার সময়ে তার সঙ্গে একটি মোবাইল ফোন ছিল। সেই ফোনের কলগুলি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|