মুর্শিদাবাদকে ভেঙে দুটি পৃথক স্বাস্থ্যজেলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
আগামী আর্থিক বছর থেকেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। জঙ্গিপুর ও লালবাগ মহকুমার ব্লকগুলি নিয়ে রঘুনাথগঞ্জকে সদর কেন্দ্র করে এই নয়া স্বাস্থ্যজেলা গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলাভাগের ব্যাপারে প্রাথমিক পর্যায়ে কাজও শুরু হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে বহরমপুরে জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্যের উপ-স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন সতপতি জানান, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, রাজ্যের মধ্যে ৫০ লক্ষের বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট মোট ৭টি জেলা যথা বর্ধমান, বাঁকুড়া, দুই ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুরেও পৃথক স্বাস্থ্যজেলা গড়া হচ্ছে।
আগামী আর্থিক বছর থেকেই এই নয়া স্বাস্থ্য প্রশাসন চালু হয়ে যাবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সাজাহান সিরাজ বলেন, “কাজের সুবিধার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে মুর্শিদাবাদে। জঙ্গিপুর ও লালবাগ মহকুমাকে রাখা হবে নয়া স্বাস্থ্য জেলায়। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “গত ১৩ জুন কলকাতায় স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মতোই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে। তামিলনাড়ুতে এই ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে হেল্থ কমিশনের অধীনে কাজ করে এই স্বাস্থ্য জেলা। এ রাজ্যেও সেই ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ শুরু হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলায় পৃথক স্বাস্থ্যজেলা গঠন তারই পরিণতি। এটা কার্যকর হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মনিটরিং ব্যবস্থা আরও ভাল হবে। কারণ সঠিক মনিটরিং-এর অভাবেই জেলায় টিকাকরণ ৬১ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাচ্ছে না।”
মুর্শিদাবাদে নয়া স্বাস্থ্যজেলা গঠনের জন্য জমির সমস্যাও সে ভাবে দেখা দেবে না। জঙ্গিপুরের এসডিও এনাউর রহমান বলেন, “জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে যে জমি রয়েছে সেখানেই নয়া স্বাস্থ্যজেলার পরিকাঠামো তৈরি করা যাবে। তা ছাড়া সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অফিসটিকেও সম্প্রসারণ করা সম্ভব। বর্তমানে সরকারি ভবনটিতে স্থান সঙ্কুলানের জন্য বহুতল বানিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নয়া স্বাস্থ্যজেলার ক্ষেত্রেও সে ভাবেই বাড়ি তৈরি করে সেটা করা সম্ভব। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যভবন থেকে কর্তারা এসে দেখেও গেছেন।”
মুর্শিদাবাদের বর্তমান স্বাস্থ্য কাঠামোকে ভেঙে দু’ টুকরো করলে নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত হবেজঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার শাশ্বত মণ্ডল এ কথা স্বীকার করে বলেন, “এর ফলে জঙ্গিপুরের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর চেহারাটাই বদলে যাবে। জেলা হাসপাতাল তো হবেই, ঠিক হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সরকারের যৌথ উদ্যোগে সুপার স্পেশ্যাল কোয়ালিটির একটি অত্যাধুনিক সুবিধা-সহ হাসপাতালও গড়া হবে জঙ্গিপুরে। এর জন্য সরকার নিজের জমিতে ঘর তৈরি করে দেবে। স্বাস্থ্যজেলা হলে জঙ্গিপুরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অনেক বদল হবে। জঙ্গিপুর এমনিতে স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অনেকটাই পিছিয়ে। গত বছর রাজ্যের মধ্যে যে ক’টি পোলিও শিশুর দেখা মিলেছিল তার ৯০ ভাগই জঙ্গিপুরের।” তবে তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি নির্দেশ আসেনি। জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো উদ্যোগ শুরু হয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ে।”
মুর্শিদাবাদে পৃথক স্বাস্থ্যজেলা গড়ার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে জেলা সিপিএম-ও। দলের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “ভাল কাজ, তাই সমর্থন রয়েছে দলের। জঙ্গিপুর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যথেষ্ট পিছিয়ে রয়েছে। তাই নয়া ব্যবস্থা হলে এখানকার মানুষ উপকৃত হবেন। কিন্তু জেলা ভাগ করে দুটো অফিস গড়লেই তো হবে না। উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলেই জেলা ভাগ করা উচিত। নচেৎ কোনও ফল হবে না।”
রাজ্যের কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা ও এলাকার বিধায়ক মহম্মদ সোহরাব বলেন, “নিঃসন্দেহে ভাল হবে এই ব্যবস্থা। তবে তার আগে উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলে কর্মী নিয়োগ করা দরকার। এর আগে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে আইসিইউ গড়তে কোটি টাকা পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সাংসদ প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সুপারিশেই ওই টাকা এসেছিল। পরিকাঠামো না থাকায় তা ফেরত পাঠানো হয়েছে। ওই সংস্থার দেওয়া বহু যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে জঙ্গিপুর হাসপাতালে পড়ে আছে। জঙ্গিপুর স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যথেষ্ট পিছিয়ে। কাজেই স্বাস্থ্যজেলা হিসাবে পরিকাঠামো গড়ে উঠলে অবশ্যই স্বাগত জানাব।”
|
থানার উদ্যোগে শুশ্রূষার প্রশিক্ষণ |
কোনও দুর্ঘটনায় রাস্তায় কেউ আহত হলে বা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাথমিক পর্যায়ে কী ভাবে তাঁর শুশ্রূষার প্রয়োজন, সে বিষয়ে রবিবার ক্যানিং থানার উদ্যোগে ‘বেসিক লাইফ সাপোর্ট’ নামে এক অনুষ্ঠান হয়ে গেল ক্যানিং মার্কেট কমপ্লেক্সের প্রেক্ষাগৃহে। উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক শেখর সেন, এসডিপিও অবধেশ পাঠক, বিডিও রাজদীপ দত্ত, চিকিৎসক পারভিন বানু, সুমিত পোদ্দার প্রমুখ।
|
রক্তের সঙ্কট
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
রক্তসঙ্কটে ভুগছে আসানসোল হাসপাতাল। বৃহস্পতিবার অপরীক্ষিত ৩০ ইউনিট রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানান। হাসপাতালের সুপার নিখিল দাস বলেন, “প্রায় দশ হাজার ইউনিট রক্ত প্রতি বছর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সংগ্রহ করে। কিন্তু গ্রীষ্ম ও উৎসবের সময়ে রক্তদান শিবির হয় না। আমরা চাই, উৎসব দিনেও শিবির হোক।” |