দেখতে আর পাঁচটা তুবড়ির মতোই। তবে সেই তুবড়িতে আগুন ধরালেই নানা রঙের আলোর মালার সঙ্গে সাইরেন বাজার শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। এ বার জলপাইগুড়িতে ওই তুবড়ির দেদার কাটতি। বুধবার সকাল থেকে জলপাইগুড়ির দিনবাজার থেকে বেগুনটারি, কদমতলা থেকে ডিবিসি রোড যেখানেই বাজির দোকান সেখানেই ক্রেতারা খুঁজে বেড়ালেন ওই বাজির। লোক মুখে বাজির নামও বদলে গিয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ বাজি। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, ‘পুলিশ’ নামের এই বাজি অন্যান্য সব আতসবাজিকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে। বাজারে পুলিশ বাজির পরেই কাটতি ছিল প্রজাপতির। বাজিতে দেশলাই বা তারাবাতি ছোঁয়ালেই আলোর সঙ্গে বার হয়ে আসবে প্রজাপতি। এদিক ওদিক উড়ে ক্রেতার কাঁধে, মাথায় বসে পড়ছে রঙবেরঙের কাগজের প্রজাপতি। রয়েছে সেনাবাহিনীর কামানের আদলে তৈরি তুবড়ি বাজিও। শব্দ বাজি নিষিদ্ধ হওয়ায় এসব নিয়েই নিয়ে জমে উঠেছে জলপাইগুড়ির দেওয়ালির বাজার। কাটতি ছিল সুর্যোদয় বা ঝর্ণার মতো ব্যতিক্রমী বাজিরও। |
তুবড়ির থেকে যে আগুনের ফুলকি বের হয় তা দেখতে অবিকল সুর্যোদয়ের মতো। এই তুবড়ি জ্বলতে শুরু করলে তৈরি হবে অবিকল একটি অর্ধবৃত্তাকার লাল সূর্য। যেন সবে মাত্র আকাশের কোণে উঁকি দিয়েছে। লম্বা দড়ি দুই দিকে টাঙিয়ে আগুন দিলেই পাহাড়ি ঝর্নার মতো একেবেঁকে নেমে আসবে লাল, সবুজ, নীল, বেগুনি রঙের আলোক রেখা। দিনবাজারের অন্যতম বড় বাজির ব্যবসায়ী আনন্দকুমার কানোরিয়া বললেন, “এ বছর নতুন বাজি এসেছে। আর ক্রেতারাও সেগুলি খুব পছন্দ করছে। এ বছর ক্রেতাদের বাজি কেনার আগ্রহও বেড়েছে। সকলেই চাইছেন সপরিবারে আনন্দ নেওয়ার মতো আতসবাজি। অনান্য বছরের থেকে বেশি পরিমাণে বাজি বিক্রি হচ্ছে।” প্রশাসন নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও চকলেট বোমা, লঙ্কাবাজি, দোদমা যে শহরে পাওয়া যাচ্ছে না এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। কয়েকটি দোকান ছাড়াই সর্বত্রই এ সবের ঢালাও সরবরাহ ছিল বলে অভিযোগ। ভিড় দোকানে নিচু স্বরে বা ইশারা করলেই বাক্সের ভিতর থেকে কালো প্লাস্টিক বা কাগজে মোড়া চকলেট বোমের প্যাকেট হাতে চলে এসেছে। পুলিশের নজর এড়াতে নর্দমার পাশে হেলায় পড়ে থাকা অপরিচ্ছন্ন বস্তা মুড়ে শব্দবাজি রাখা হচ্ছে। খদ্দের এলেই তা বার করে দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “শব্দবাজি নিষিদ্ধ। পুলিশি অভিযান চলছে। যে বাজি থেকে ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ হয় তাও নিষিদ্ধ।” |