টুকরো খবর
গ্রামের থিমে কালী পুজো
কয়েকটি গৃহস্থ বাড়ি। এককোণে ঢেঁকিতে ধান ভাঙছেন এক মহিলা। ধান ক্ষেতে কাজ করছেন এক কৃষক। জাল নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছেন এক বাসিন্দা। গরুর গাড়ি চলছে গ্রামের আলপথ ধরে। ধানের গোলা অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। এক বৃদ্ধ হুঁকো টানছেন মনের সুখে। গাছের সারি। চারদিকে এক মনোরম নিস্তব্ধতা। কী মনে হচ্ছে? এক গ্রামের কথা। খুব বেশি দূর নয়, শিলিগুড়ি শহরের সুভাষপল্লিতে গেলেই দেখতে পাবেন এমনই এক গ্রামের। নিউ রয়্যাল স্পোর্টিং ক্লাব এবারে গ্রাম-বাংলার পরিবেশকে ‘থিম’ করে মণ্ডপ তৈরি করেছেন। পুজো কমিটির সম্পাদক কাঞ্চন দে বলেন, “আমারা মণ্ডপের জায়গায় প্রচুর গাছ রয়েছে। আমাদের ‘থিম’কে যা ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। দর্শনার্থীরা মণ্ডপ থেকে গ্রামের অনুভূতি নিয়েই ফিরবেন।” এবারে ৩৪ বছরে পড়ল রয়্যাল স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো। প্রত্যেক বছরই আলাদা বিশেষত্ব রাখা হয় রয়্যাল স্পোর্টিং ক্লাবের। গত বছর আন্দামানের আদিবাসীদের জীবনযাত্রা তুলে ধরা হয়েছিল। তার আগে তারাপীঠের শ্মশান। এবারে গ্রামের চিত্র। তা ফুটিয়ে তুলতে কাশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তিনটি ঘর। ধান গাছ লাগিয়ে খেত তৈরি করা হয়েছে। ধানের গোলা তৈরি হয়েছে। রাখা হয়েছে ঢেঁকি, গরুর গাড়ি, মাছ ধরার সরঞ্জাম। পরিবেশ জীবন্ত করে তুলতে ৯ জন ‘স্ট্যাচু’ থাকবে। জীবন্ত স্ট্যাচুর মধ্যে ২ জন মহিলা ও ৭ জন পুরুষ থাকবে। হালকা আলো রাখা হবে মণ্ডপে। মাইকে কুকুর, পাখি, শেয়ালের ডাকের আওয়াজ থাকবে । পুজো কমিটির সদস্য অমিত ঘোষ বলেন, “দর্শনার্থীরা খুশি হবেন বলে আশা করছি।”

আলোয় ভাসল ময়নাগুড়ি
চোখ ধাঁধানো আলোর ওড়না জড়িয়ে রূপসী ময়নাগুড়ি। সড়ক পার হয়ে পাড়ার গলি যে দিকে পা বাড়াবেন থিমের ছড়াছড়ি। আলোকমালায় লেখাপড়া। প্রকৃতিপাঠ। সম্পদসংরক্ষণ শিক্ষা। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে একাধিক মেলা। অপেক্ষার বাঁধ মানল না। মঙ্গলবার রাত থেকে ময়নাগুড়িতে শুরু হয়ে গেল দীপাবলি উৎসব। আলোর রোশনাইয়ে ভাসল গোটা জনপদ। বুধবার বিকেলের পর থেকে দর্শনার্থীরা রাস্তায় নামলেন। নতুন বাজার থেকে দুর্গাবাড়ি মোড়, সার্ক রোড, ময়নাগুড়ি-শিলিগুড়ি রোড, পার্ক রোড কোলাহল মুখর। নতুন সাজে ময়নাগুড়ি। মাইক দাপাদাপি নেই। নেই শব্দবাজির দৌরাত্ম্য। আলোর আলপনায় খুশির ছোঁয়া। তোরণের পর তোরণ। ফুচকা ও ‘ফাস্ট ফুড’-এর দোকানে লম্বা লাইন। রাজনৈতিক দলগুলি ভিড়ের সুযোগে জনসংযোগ বাড়াতে স্টল খুলেছে। বুধবার উদ্বোধন হয় ময়নাপাড়ায় আয়োজিত মুনলাইট ক্লাবের পুজো মণ্ডপের। ওই পুজোর এ বারের থিম ‘দেখব পুজো ওদের চোখে’। রাতে উদ্বোধন হয় জাগরণী ক্লাবের ‘ইঁদুর দৌড়ে ক্লান্ত সমাজের’ থিমে তৈরি পুজো মণ্ডপের। সাগরদ্বীপ ক্লাবের মণ্ডপে প্রকাশিত হয় বার্ষিক পত্রিকা ‘তৃষি’। থিমের বাইরে থাকা অগ্রদূত সঙ্ঘ, আরআরএ, ইয়ং স্টার আন্যাসোসিয়েশনের পুজোর উদ্বোধন হয় রাতে। বাবুপাড়ায় বৌদ্ধ গুম্ফার আদলে তৈরি মাতৃ সঙ্ঘের মণ্ডপ ঘুরে দেখেন ময়নাগুড়ি বৌদ্ধ বিহারের সন্ন্যাসীরা। পুলিশ-প্রশাসন থেকে পুজো আয়োজকরা মনে করছেন বৃহস্পতিবার বাইরের দর্শনার্থীরা ময়নাগুড়িতে ভিড় করবেন। রাতভর পুজো দেখায় যেন তাঁদের সমস্যা না হয় সে জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।

আলোয় ভাসল ধূপগুড়ি
আলোয় সেজেছে গোটা ধূপগুড়ি। পুজোর দিন সকাল-বিকাল মণ্ডপসজ্জা শেষ করতে চরম ব্যস্ততা ছিল উদ্যোক্তা ও শিল্পীদের মধ্যে। সন্ধ্যা নামতে দর্শনার্থী ঢল নামতে শুরু করে। এসটিএস ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদ সভাপতি দীপ্তি দত্ত। মন্দির-সহ কেদারনাথ মন্দিরের পাহাড় যেন কেটে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈরাতিগুড়ির আঙ্কোরভাট মন্দিরে ঢোকার বনের পথটি এতটাই ভয়ঙ্কর যে অনেকে অনেকে শিউরে ওঠেন। দেওয়াল খোদাই করে ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছে প্রাচীন দেবদেবীর মূর্তি। পুকুরে ১০১ টি প্রদীপ-সহ দেবী মূর্তির কোলাজ দেখে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শনার্থীরা। হাসপাতাল পাড়ার সুহৃদ সংঘের মাঠে রাজস্থানের মরুভূমি আর সেখানকার অধিবাসীদের গ্রাম ও তাঁদের সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। রেজিস্ট্রি অফিস পাড়ার এভারগ্রিন ক্লাবের থিম নাগাল্যান্ড। নেতাজিপাড়া কালচারাল ক্লাবের ১৬তম পুজোয় টালি দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপ। ইয়ং অ্যাসোসিয়েশনের ৩৩০০টি নানান রঙের গামছা দিয়ে সাজানো মণ্ডপ ও গামছা দিয়ে মণ্ডপের গায়ে তৈরি মূর্তি দর্শনার্থীদের মন কাড়ে। থানা রোডের শান্তি সংঘের শিসমহল দেখতে প্রথম দিন ভিড় উপচে পড়ে। বিধান সঙ্ঘের সদস্যরা পুজো মণ্ডপ উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণতহবিলে ৫০০১ টাকা দেবার কথা জানিয়ে দেন। সন্ধ্যা থেকে ভিড় বাড়তে শুরু করে করে প্রাচীন মায়ের থান মন্দিরটিতে। এলাকার লোকজন পুজো দর্শনে বেরোলে একবার মায়ের এই পুজোয় দর্শন করবেন, এ রীতি আজও অব্যাহত। ধূপ গুড়ি থানার গাছে এ বার ভোগপ্রসাদে দেওয়ার কাঁচা কাঁঠাল মিললেও পুজোর দিন বিকাল পর্যন্ত পাকা কাঁঠাল না মেলায় হতাশ সকলে।

শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে মোম-মিছিল
বিজনবাড়ি সেতু কাণ্ডে মৃতদের শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানাতে মোমবাতি নিয়ে মিছিল করল সিপিএমের দার্জিলিং জেলা যুব সংগঠন। বুধবার কালী পুজোর সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবন থেকে মিছিল শুরু হয়। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ডিওয়াইএফআই, এসএফআই এবং পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির সদস্যরা মিছিল করেন। মিছিলটি হিলকার্ট ধরে হাসমি চক হয়ে মহানন্দা সেতু লাগোয়া এলাকা থেকে ফের অনিল বিশ্বাস ভবনে গিয়ে শেষ হয়।
বিজনবাড়িতে সেতু দুর্ঘটনায় সিপিএমের যুব সংগঠনের মোমবাতি মিছিলে
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যও। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
মিছিলে ডিওয়াইএফআইয়ের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর ঘোষ, পার্থ মৈত্র সহ নেতারা ছিলেন। অশোকবাবু বলেন, “মর্মান্তিক ঘটনায় বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে। এখনও অনেকে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। উৎসবের সময়ে এরকম ঘটনায় আমরা মর্মাহত। তাই তাঁদের উদ্দেশে মোমবাতি মিছিল করা হল।”

পরিদর্শনে গৌতম দেব
কালী পুজোর দিন বিজনবাড়ি সেতু দুর্ঘটনায় জখমদের দেখতে হাসপাতালে গেলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার সকালে বের হয়ে তিনি প্রথমে শিলিগুড়ি শহরের তিনটি নার্সিংহোমে যান। সেখানে রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন। এরপর তিনি যান উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে গিয়েও রোগীদের খোঁজখবর নেন তিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “জখমরা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। তাঁদের যত্ন সহকারে চিকিৎসা করছেন চিকিৎসকরা। উৎসবের দিনে তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করতেই সবার সঙ্গে দেখা করেছি।”

রেল কর্মীদের পুজো
৫০ বছরে পড়ল রেলের টিকিট চেকিং স্টাফদের কালী পুজো। ট্রেনের যাত্রীদের ও নিজেদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই কালী পুজো হয় বলে জানান পুজো উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটির সভাপতি সুদীপ কুমার রাহা জানান, আলিপুরদুয়ার জংশন রেল স্টেশনের সামনে রেল পুলিশ ফাঁড়ির পিছনে তাঁরা এই পুজো করেন। পুজোয় শব্দবাজি পোড়ানো হয় না। এ বছর রাজ্য জুড়ে লোডশেডিং চলায় আলোর এই উৎসবে অতিমাত্রায় আলোকসজ্জা করবেন না। এ বছর বিশেষ থিম হিসেবে বাঁশ খড় দিয়ে গ্রাম বাংলার খন্ডচিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।

হোগলাপাতার মণ্ডপ
হোগলা পাতা দিয়ে দিল্লির অক্ষরধাম মন্দির তৈরি হচ্ছে আলিপুরদুয়ার জংশনের সুবজ সংঘের পুজোয়। কমিটি সম্পাদক তপেন কর জানান, এ বছর তাঁদের শ্যামা পুজো ৩১ বছরে পড়ল। প্রায় এক ট্রাক হোগলা পাতা দিনহাটা থেকে আনা হয়েছে। ৭০ ফুট বাই ৮০ ফুট মণ্ডপে পৌরাণিক কাহিনি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।

৫১ বছরে সারদা সঙ্ঘ
৫১ বছরে পড়ল আলিপুরদুয়ার জংশনের সারদা সংঘের পুজো। এ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধ জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে রেল দফতরের অনুকরণে প্লাইউড ও কাঠ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর সাংস্কৃতিক এক্সপ্রেস ট্রেন তৈরি হয়েছে। পুজো কমিটির সদস্য সম্বরণ গুহ চৌধুরি জানান, এ বারে ডাকের সাজে মুর্তি।

পুজো ৪৭ বছরে
আলিপুরদুয়ার কলেজ হল্ট ক্লাবের কালী পুজো ৪৭ বছরে পড়ল। ক্লাব-সদস্য সঞ্জয় দাস জানান, অন্য বারের থেকে এ বছর বড় পুজো করা হচ্ছে। ৫০তম বছরে আরও বড় মাপের পুজো হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.