গতির আগুনে পুরোহিত, পুজো, মন্ত্র
ঢুকে পড়ছে ফর্মুলা ওয়ানে
তুন গাড়ি কিনেই কালীঘাট বা দক্ষিণেশ্বর। আমাদের চেনা ছবি।
কিন্তু ফর্মুলা ওয়ান রেসে নামার আগে গাড়ির পুজো!
যত বিস্ময়করই শোনাক, এটাই হতে চলেছে ভারতের প্রথম ফর্মুলা ওয়ান রেসের সরকারি প্রথম দিনের একেবারে প্রথম ঘণ্টায়। সুইজারল্যান্ডের দল স্যবার-এর সৌজন্যে। ‘সৌভাগ্যের সন্ধানে’ যারা ভারতীয় গ্রাঁ প্রি-শুরু করছে ‘গাড়ি পুজো’ দিয়ে।
সর্বোচ্চ পর্যায়ের আধুনিক প্রযুক্তির আখড়া বলা হয় যে খেলাটাকে, সেখানেই কি না ভাগ্য দেবীর নজর কাড়তে একেবারে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণে পুজো-পাঠে আস্থা?
কী ভাবে ব্যাখ্যা করা যায় একে? বিশ্বের সবচেয়ে গ্ল্যামারাস মোটরস্পোর্টসের গায়ে ভারতীয়ত্বের পোঁচ? নাকি ভারতের মন পেতে ফর্মুলা ওয়ানের ভোলবদল? যেটাই হোক, গোটা ব্যাপারটাকে ‘‘ওয়ান্ডারফুল আইডিয়া”, বলে মনে করছে স্যবার দল। চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে সহারা ফোর্স ইন্ডিয়াকে যারা তাড়া করেছে ষষ্ঠ স্থান দখলের আশায়।
দলের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মণীষা কালটেনবর্ন নারাং জন্মসূত্রে ভারতীয়। মাত্র আট বছর বয়স থেকে প্রবাসী। অস্ট্রিয়ার নাগরিক বিয়ে করেছেন এক জার্মানকে। থাকেন সুইজারল্যান্ডে। কিন্তু নিজের ভারতীয় শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হননি ফর্মুলা ওয়ান দলগুলোর একমাত্র মহিলা সি ই ও। দলের মাথায় পুজো চিন্তাটা ঢোকানোর পিছনে মণীষার আগ্রহ বড় ভূমিকা নিয়েছে। তবে বুধবার দিল্লি থেকে ফোনে সুইস ফর্মুলা ওয়ান দলের মিডিয়া ম্যানেজার হাইকে হেইনৎজ জানালেন, সিদ্ধান্তটা সর্বসম্মত। ভারতীয় রেসের সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতিকে কী ভাবে মেলানো যায়, তা নিয়ে গোটা দলই বহু দিন ধরে চিন্তাভাবনা করেছে। গাড়ির পুজো সেই চিন্তারই নির্যাস।
হাইকের কথায়, “বুদ্ধ আন্তর্জাতিক সার্কিটে দলগুলো প্র্যাক্টিসে নামার আগেই শুক্রবার ভোরে আমাদের দলের গ্যারাজে পুজোটা হবে।” গলায় রীতিমতো উৎসাহ তাঁর। স্যবার সি ৩০-ফেরারি রেসিং গাড়ি দু’টোর পুজো হওয়ার সময় হাজির থাকবে গোটা দল। কর্তারা তো বটেই, দুই চালক জাপানি কামুই কোবিয়াশি এবং মেক্সিকোর সার্জিও পেরেজও। রীতিমতো পুরোহিত ডেকে, মন্ত্র পড়ে, গাঁদার মালা পরিয়ে, গাড়ির সামনের অংশে সিঁদুরের টিপ এঁকে পুজো হবে। ব্যাপারটা নিয়ে গোটা দলের মধ্যে প্রবল আগ্রহ।
এমনিতে মরসুমের তিনটে রেস বাকি থাকতে সহারা ফোর্স ইন্ডিয়ার থেকে মাত্র ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে নির্মাতাদের চ্যাম্পিয়নশিপে আপাতত সাত নম্বরে স্যবার। পুজোর জোরে ভারতীয় দলকে ভারতের মাটিতে টেক্কা দিতে পারবে কি তারা?
সহারা ফোর্স ইন্ডিয়া কিন্তু পুজোপাঠের ধার ধারছে না। টিম বস বিজয় মাল্য নিজের ঘরের মাটিতে ঐতিহাসিক প্রথম রেসে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে বলেছেন দলকে। সঙ্গে নিজের “স্বপ্ন সত্যি হওয়ার রেসে” মাল্য এক ভারতীয় প্রতিভার সঙ্গে পরিচয় করাতে চান মোটর স্পোর্টস দুনিয়ার। নতুন প্রতিভা তুলে আনতে আঠারো মাস আগে ফোর্স ইন্ডিয়া শুরু করেছিল ‘ইয়াং ড্রাইভার হান্ট’। বুদ্ধ সার্কিটে সেই প্রতিযোগিতার বিজয়ীর নাম জানানো হবে। “শুক্রবার থেকে ভারতীয় মোটর স্পোর্টসের চেহারাটাই পাকাপাকি বদলে যাবে। অসম্ভব গর্ব হচ্ছে,” আবেগে ভাসছেন ভারতের একমাত্র ফর্মুলা ওয়ান দলের প্রধান।
তবে ট্র্যাকে আবেগের কোনও স্থান নেই। সেখানে শুধুই যুদ্ধ। যে যুদ্ধে মাল্যর প্রথম লক্ষ্য স্যবারের সঙ্গে পয়েন্টের ফারাকটা বাড়িয়ে নিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের জায়গা ধরে রাখা। অন্য দিকে, সহারা ফোর্স ইন্ডিয়াকে টেক্কা দিতে মরিয়া স্যবারের।
আগামী রবিবার, বিশ্বকর্মা কার দিকে ঝোঁকেন, সেটাই এখন দেখার।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.