কোথাও জঙ্গলমহল, কোথাও গা ছমছমে পরিবেশে পোড়ো বাড়ি, কোথাও বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশত বার্ষিকী কোথাও আবার বীজদানার প্রতিমা সব মিলিয়ে দুর্গাপুজোর মতোই বাগনানের কালীপুজোর আয়োজনও হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্যময়।
মণ্ডপ তৈরিতে বাগনান ইউথ ক্লাব প্রতিবছর অভিনবত্ব আনে। এ বারের থিম ‘জঙ্গলমহলে অশান্তির আগুনে ঝরে পড়ুক শান্তির বারি’। এটাতে বোঝাতে মডেলের সাহায্যে এক দিকে দেখানো হয়েছে জঙ্গলমহলে রক্তক্ষয়ী লড়াই। |
অন্য দিকে দেখানো হয়েছে, শান্তির জন্য আবেদন জানাচ্ছেন এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা। ক্লাব কর্মকর্তাদের বক্তব্য, অনেক হয়েছে আর নয়। এ বারে জঙ্গলমহলে ফিরে আসুক শান্তি। প্রতিমাও আকর্ষণীয়। দোতলা পোড়ো বাড়ি। কার্নিসে জন্মে গিয়েছে আগাছা। ভিতরে মাকড়শার জাল। প্লাস্টার ক্ষয়ে পড়েছে। এইরকম একটি মণ্ডপ হল এ বারে বাগনান অগ্রদূত সঙ্ঘের কালীপুজোর থিম। খুঁটিয়ে দেখলেও আসল-নকল বোঝা মুশকিল। গা-ছমছম পরিবেশ। এই বাড়ির ভিতরে রয়েছে কালীঠাকুরের মূর্তি। সব মিলিয়ে এই মণ্ডপে এলে অন্য রকম চিন্তার খোরাক পাবেন দর্শনাথীরা এমনটাই দাবি সঙ্ঘের কর্মকর্তাদের। আলোকসজ্জা করা হয়েছে মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। প্রতিমা আসছে কুমারটুলি থেকে।চলতি বছরটি স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশত বার্ষিকী। সে কথা মনে রেখে খাদিনান বিবেকানন্দ সঙ্ঘের এ বারের থিম হল ‘বিবেকানন্দ।’ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। মণ্ডপের প্রবেশপথে সার দিয়ে রাখা হয়েছে বিবেকানন্দের ছবি ও বাণী। প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হবে শিকাগোতে বিবেকানন্দ যে ঐতিহাসিক বক্তৃতা দিয়েছিলেন তার অনুকরণে তৈরি ছবি। এ ব্যাপারে পুজো কমিটি সাহায্য নিয়েছে শ্যামপুরের বেলাড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের। |
শালপাতার বাটি, থালা, দইয়ের চামচ এবং পুঁথি। এই সব উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। ঘোড়াঘাটার নবাসন শিশু সঙ্ঘের এ বারের কালীপুজোর বৈশিষ্ট্য শুধু মণ্ডপেই সীমাবদ্ধ নেই। প্রতিমা তৈরিতেও রয়েছে বিশেষত্ব। প্রতিমা তৈরি হয়েছে বীজ দানা দিয়ে। প্রতিমায় কোনও রঙ ব্যবহার করা হয়নি। বিভিন্ন রঙের বীজদানা ব্যবহার করেই প্রতিমাকে রঙিন করা হয়েছে। মণ্ডপ বানাচ্ছেন ক্লাবের সদস্যরাই। মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার শালপাতার বাটি থালা ও ৩০ হাজার দইয়ের চামচ। প্রতিমা অবশ্য আসছে ফুলেশ্বর থেকে। ওই এলাকার শিল্পীই তৈরি করেছেন বীজদানার প্রতিমা।
|
ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় |