রাজ্যের পর্যটন-মানচিত্রকে আরও আকর্ষণীয় করতে বেসরকারি উদ্যোগকেও স্বাগত জানাবে সরকার। মঙ্গলবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া, দেশবিদেশের পর্যটকের কাছে সুন্দরবনের পাশাপাশি কলকাতা-দিঘা-দার্জিলিংকে তুলে ধরতে নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সাহায্য। সেজন্য কেন্দ্রের পর্যটন দফতরের প্রতিমন্ত্রী, তৃণমূলের সুলতান আহমেদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কলকাতা-দিঘা-দার্জিলিং ঘিরে তাঁর স্বপ্নের কথা বারবারই স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা বাস্তব করতে আপাতত কয়েকটি প্রকল্প ধরে এগোতে চায় পর্যটন দফতর। আপাতত ঠিক হয়ে যাওয়া প্রকল্প-তালিকায় আছে ডুয়ার্সের জন্য ‘থিম পার্ক’ তৈরির পরিকল্পনা, দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তায় পরিকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে পাহাড়ের ঐতিহ্য ফিরিয়ে দেওয়া, উপকূলবর্তী এলাকার বিধি মেনে দিঘায় আধুনিক তাঁবু (টেন্ট) তৈরি করা, বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার সংযোগ, শহরের উপকণ্ঠে গঙ্গাবক্ষে ‘কলকাতা আই’ এবং ‘মেরিনা’ তৈরি। পর্যটকদের জন্য বহুমুখী কার্ডের পরিকল্পনাও হচ্ছে।
পর্যটন দফতর ঠিক করেছে, আগ্রহী বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে আপাতত কলকাতার পর্যটকদের জন্য ওই ‘মাল্টি মডেল’ কার্ড তৈরি করা হবে। এক বার ওই কার্ড কিনলে সায়েন্স সিটি থেকে নিকোপার্ক, মিউজিয়াম থেকে চিড়িয়াখানাশহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা দ্রষ্টব্যস্থানগুলিতে প্রবেশ করতে আলাদা করে আর কোনও টিকিট কাটতে হবে না। পর্যটন দফতরের মুখপাত্রের কথায়, “একটি কার্ড। কিন্তু তার ব্যবহার বহু।”
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ডুয়ার্সে তিনটি ‘থিম পার্ক’ তৈরি করতে চায় রাজ্য। এগুলো হবে গজলডোবা, কুঞ্জনগর এবং সাইলিতে। এখানে নিজেদের হাতে থাকা জমি দেবে পর্যটন দফতর। বিনোদনের যাবতীয় ব্যবস্থার সঙ্গে থাকবে রাত্রিযাপনের জন্য ‘কটেজ’। সম্প্রতি দার্জিলিং সফরের সময় মিরিকের রাস্তা দিয়ে পাহাড়ে যাওয়ার পথে মুখ্যমন্ত্রীর কিছু খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাঁর পরামর্শেই মঙ্গলবার ওই রাস্তা পরিদর্শন করে শৌচাগার-সহ কিছু পরিকাঠামো তৈরির নকশা তৈরি করেছেন দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক। পাহাড়ের ঐতিহ্য ফেরাতে দার্জিলিংয়ের জিমখানা ক্লাবের থিয়েটার হল, বিলিয়ার্ড রুম সংস্কার করা হবে। সেন্ট অ্যান্ড্রু চার্চ, বক্সা ফোর্ট, প্ল্যান্টারস ক্লাবের অবয়ব বদলের পরিকল্পনাও রয়েছে। পাহাড়ে একটি চায়ের প্রদর্শশালা তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দিঘা, উদয়পুর, শঙ্করপুরে পর্যটকদের থাকার জন্য অস্থায়ী ‘তাঁবু’ তৈরি করা হবে। তাঁবু হবে উত্তরবঙ্গের রাঙামাটি, জয়গাঁও, রাজাভাতখাওয়া, বক্সা ফোর্ট-এ। দিঘার সঙ্গে মন্দারমণিতে থাকবে জলক্রীড়ার নানা আয়োজন। পর্যটন দফতরের পরিকল্পনায় সুন্দরবন, দিঘা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, ডুয়ার্স ও দার্জিলিঙে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়তে হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করতে চায় রাজ্য। |