বাজারে অনিশ্চয়তা থাকলেও শেয়ার সূচক বাড়বে। নববর্ষ সম্বৎ ২০৬৮-এর সূচনার দিন মুরত লেনদেন শেষে এই আশাই ব্যক্ত করেছেন শেয়ার লেনদেনকারীরা। এমনকী তাঁদের আশা, সপ্তাহ চারেকের মধ্যে সেনসেক্স ছুঁয়ে ফেলতে পারে ২০ হাজারের ঘর। তবে পাশাপাশি তাঁদের আশঙ্কা, তার পরেই বড় মাপের পতন আসতে পারে বাজারে।
বুধবার মুরতের সন্ধ্যায় ৯০ মিনিটের বিশেষ লেনদেনে সেনসেক্স বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। তবে এই বৃদ্ধিকে বাজার চাঙ্গা হওয়ার কোনও ইঙ্গিত বলে অবশ্য মানতে নারাজ ব্রোকাররা। শেষ পর্যন্ত সেনসেক্স দাঁড়িয়েছে ১৭,২৮৮.৮৩ অঙ্কে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই সূচক বেড়েছিল ৩১৫ পয়েন্ট।
কীসের ভিত্তিতে বাজার বাড়বে বলে মনে করছেন, এই প্রশ্নের উত্তরে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)-এর সদস্য ও পরিচালন পর্ষদের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিক বলেন, “বাজারের মৌলিক উপাদানের ভিত্তিতে সূচক বাড়বে বলে আমি মনে করছি না। তবে বড় লেনদেনকারীরা নিজেদের স্বার্থেই বাজার বাড়াবে বলে আমার বিশ্বাস।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “বর্তমানে বিশ্ব বাজারের যা হাল, সে দিকে তাকিয়েই নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাজারে এখন চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা চলবে, এবং সূচক ওঠার পরই বড় মাপের পতন হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে।” |
বিএসই-তে মুরতের সূচনায় মহিমা চৌধুরী। ছবি: পিটিআই |
চলতি আর্থিক বছরে অর্থাৎ ২০১১-’১২ সালে বাজারের হাল ফেরার তেমন কোনও সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন না প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে। তিনি বলেন, “যত দিন বিশ্ব বাজার, বিশেষ করে ইউরোপের হাল না ফিরবে, তত দিন ভারতের বাজারে অনিশ্চয়তা কাটার কোনও সম্ভাবনা আছে বলে আমি মনে করছি না।”
ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি তো শেয়ার কিনছে। তা হলে বাজারের হাল ফেরার অসুবিধা কোথায়? উত্তরে অজিতবাবু বলেন, “অন্য কোনও দেশের বাজারে এখন লগ্নি করার মতো অবস্থা নেই। তাই ওই সব সংস্থা বাধ্য হয়েই ভারতের বাজারে লগ্নি করছে। কিন্তু তা স্বল্প মেয়াদের জন্য। অল্প কিছু মুনাফা হলেই শেয়ার বিক্রি করে তা ঘরে তুলে নিচ্ছে তারা। আর এর ফলেই বাজারে ওঠা-নামার বহর দ্রুত বেড়ে গিয়েছে।”
এই অবস্থায় সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের কী করা উচিত? অজিতবাবু বলেন, “এখন শেয়ার কিনে নিশ্চিন্তে বসে থাকলে চলবে না। বাজারের ওঠা-পড়ার উপর নজর রেখে শেয়ার কেনাবেচা করলে মুনাফা মিলতে পারে। তবে ভাল শেয়ারে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে লগ্নি করলেও মুনাফার মুখ দেখার সম্ভাবনা আছে।”
এ দিকে সিএসই-র মাধ্যমে খুব শীঘ্রই ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত শেয়ারের লেনদেন শুরু হতে চলেছে। সিএসই-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর বি মাধব রেড্ডি জানান, আগামী মাসের শেষ থেকেই ওই লেনদেন যাতে শুরু করা যায়, সেই ব্যবস্থা তাঁরা করছেন। এটা হলে সিএসই-র দৈনিক লেনদেনের পরিমান প্রায় ৫০০ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রেড্ডি। সিএসই-র মাধ্যমে বিএসই-তে লেনদেন আগেই চালু হয়েছে। বর্তমানে সিএসই-র সি-স্টার ব্যবস্থায় এবং বিএসই মিলে প্রায় ৭০ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে।
সিএসই-র হাল ফেরাতে অন্য ছোট স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত সংস্থা যাতে সিএসইতেও নথিভুক্ত হয়, সেই ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। রেড্ডি জানান, এর জন্য তাঁরা পুণে, ভুবনেশ্বর, গুয়াহাটি এবং কোয়েম্বত্তুর স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। |