আলোর উৎসব ও শক্তির আরাধনায় বুধবার মেতে উঠল আসানসোল শিল্পাঞ্চল। বস্তুত মঙ্গলবার রাত থেকেই আলোর মালায় সেজে উঠেছে শহর। এক দিন আগেই শিল্পাঞ্চলের পুজো মণ্ডপগুলি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। বুধবার দীপাবলির রাতে আরও মোহময়ী হয়ে উঠবে শহর।
শিল্পাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী তথা ঐতিহাসিক কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের কালীপুজো দেখতে বুধবার রাতে প্রায় কয়েক হাজার ভক্ত সমাগম হয়। এ দিন সকাল থেকেই মন্দিরে পুজো দেওয়ার লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষেরও ঢল নামে। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্ত শহর বরাকরে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের দেবীকে ঘিরে বহু পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। সেই সব কাহিনী বিশ্বাস করে মানুষজন বিশেষ করে কালীপুজোর দিন এখানে দেবী দর্শনে ছুটে আসেন। সারা রাত ধরে মন্দিরের প্রবেশ দ্বার খুলে রাখা হয় ভক্তদের জন্য। এ বারও রাতভর ভক্তরা মন্দিরে এসেছেন দেবী আরাধনার জন্য। প্রদীপ ও আলোর মালায় সাজানো হয় মন্দির। |
কোর্ট মোড়ের শ্মশানকালী মন্দিরে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
আসানসোলের ধাদকা এলাকায় দক্ষিণেশ্বরী কালী মন্দিরের শ্যামাপুজা উপলক্ষে বহু মানুষের সমাগম হয়। বিশাল এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই মন্দিরটি দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের আদলে তৈরি। বুধবার রাতে আলোর মালায় মন্দিরটি সাজানো হয়। ভাবগম্ভীর মনোরম পরিবেশে ভক্তরা পুজোর ডালি নিয়ে এসে শক্তির আরাধনা করেন। শিল্পাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের কালীপুজোর তালিকায় অবশ্যই প্রাচীনতম বুধা গ্রামের কালী মন্দির। কয়েকশো বছরের পুরনো এই মন্দিরে প্রতি বারের মতো এ বারও দীপাবলির রাতে কয়েক হাজার ভক্তের আগমন হয়। এলাকার বাসিন্দারাই শুধু নন, আশপাশের বহু অঞ্চল থেকে ভক্তরা এখানে পুজো দিতে আসেন।
বিশেষ উদ্দীপনা দেখা গিয়েছে, আসানসোলের হাটন রোড কালীবাড়ির দেবীর আরাধনায়। এখানে নিত্য পুজো হয়। কিন্তু এই বিশেষ দিনে প্রতিমা দর্শন, আরাধনার জন্য দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন। এ বারও তার অন্যথা হয়নি।
শিল্পাঞ্চলের বেশ কয়েকটি সর্বজনীন শ্যামা পুজো এ বারও অভিনব মাত্রায় আত্মপ্রকাশ করেছে। আসানসোলের গোপালপুর সর্বজনীন পুজোর কালী মূর্তি নিজেদের বর্ষপূর্তি সংখ্যার উচ্চতায় বানানো হয়। তাঁরা কালীমূর্তি বানিয়েছেন ৪২ ফুট। পুজো উপলক্ষে একটি মেলাও বসিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
আসানসোলের রামসায়র ময়দানের কালীপুজোর প্রধান বৈশিষ্ট্য এখানকার বিশাল কালীমূর্তি। এখানে মেলা বসে। এবারও মণ্ডপ সজ্জায় অভিনবত্বের ছোঁয়া এনেছেন নিয়ামতপুর সর্বজনীন কালীপুজোর উদ্যোক্তারা। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে মণ্ডপ, মূল আকর্ষণ আধুনিক আলোকসজ্জা।
চিত্তরঞ্জনের বন্ধুমহল সর্বজনীন কালীপুজোর মণ্ডপ এ বারও রেল শহরের পুরনো ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। পুজো উপলক্ষে মেলা বসেছে। বরাকরের ব্যবসায়ীদের সর্বজনীন কালীপুজো উপলক্ষে দীপাবলির রাতে আলো ও আতসবাজির বন্যায় ভেসে গিয়েছে এই শহর। |