জমিয়ে মিষ্টি খান, হেঁটে ক্যালরি ঝরান
মাঝারি সাইজের একটা ঘিয়ের লাড্ডু পেটে যাওয়া মানেই একলাফে বেড়ে গেল ৩০০ ক্যালরি!
একটা রসগোল্লা ১৫০ ক্যালরি, জিলিপি ২০০ ক্যালরি, কাজু বরফি ১৮৫ ক্যালরি, পেঁড়া ১২০ ক্যালরি, সন্দেশ ১৫০ ক্যালরি। আর একটা জিভে জল আনা শিঙাড়া মানেই ২৩০ ক্যালরি।
এই উৎসবের মরসুমে বঙ্গজীবনের অঙ্গ সেই আদি-অকৃত্রিম মিষ্টিমুখ। দুর্গাপুজো পার হয়ে বিজয়া দশমী কাঁপিয়ে মিষ্টিপরব উত্তুঙ্গে পৌঁছয় ভাইফোঁটায়। জিভের মধ্যে মিশতে থাকা মধুরতায় চুরমার হয়ে যেতে থাকে অতি কষ্টে ধরে রাখা সংযম। কারণ উৎসব মানেই প্লেটে থরে-থরে সাজানো সাক্ষাৎ ক্যালরিরা। তাই বেশি মিষ্টি-ভাজাভুজি খাওয়া অনেক সময়েই একটা ‘অপরাধবোধ’ তৈরি করে মনে।
কিন্তু তাই বলে উৎসব তো আর রসনাবর্জিত হতে পারে না! বিজয়ার মিষ্টিমুখ থেকে শুরু করে ভাইফোঁটার মহাভোজ আক্ষরিক অর্থেই নিয়ম ভাঙার সময় এটা। তবে বেরিয়াট্রিক সার্জন ও এন্ডোক্রিনোলজিস্টদের বক্তব্য, এই ভুরিভোজের মধ্যেও একটু সচেতন থাকলেই অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলা অসাধ্য নয়। যেমন বেরিয়াট্রিক সার্জন সরফরাজ বেগের মতে, প্লেট থেকে একটা বা দু’টো মিষ্টি ছোট ছোট কামড়ে ভেঙে তারিয়ে তারিয়ে খেলে অল্পেতেই মন তৃপ্ত হবে। আর বেশি মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করবে না। তাঁর কথায়, “কথা বলতে-বলতে বেখেয়ালে মুখে টপাটপ মিষ্টি ফেললে স্বাদ ভাল করে মনে ধরবে না। উল্টে ক্যালরিও চড়চড়িয়ে বাড়বে।”
সেই সঙ্গে চিকিৎসকেরা ভাজার বদলে গ্রিল করার উপরে জোর দিচ্ছেন। খাওয়ার আগে দু’গ্লাস জল পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। এতে পেট একটু ভরবে। অতিরিক্ত খাওয়া আটকানো যাবে। খাওয়ার পরে এক জায়গায় বসে আড্ডা বা সিনেমা দেখার বদলে কিছুক্ষণ বাচ্চাদের সঙ্গে হুড়োহুড়ি বা খেলাধুলো করতে পারলে ভাল। এন্ডোক্রিনোলজিস্ট প্রবীর কুণ্ডুর মতে, উৎসবের সময়ে প্রাত্যহিক খাদ্যতালিকায় ভাত-রুটি বা ঘি-মাখন-আলু-ডালডার পরিমাণটা একটু কমানো উচিত। কারণ তখন উল্টোপাল্টা খাওয়াদাওয়া চলে। সেই সঙ্গে দরকার অল্প-অল্প করে বারে বারে খাওয়া। আর প্রতিদিন সকালে অন্তত আধঘণ্টা হাঁটলে বা ঘরের কাজ করলে সমস্যা কমবে।
একই পরামর্শ দিয়েছেন এন্ডোক্রিনোলজিস্ট আশিস বসু। তাঁর কথায়, “উৎসবের সময়ে তো মুখরোচক খেতেই হবে। না হলে জীবনই বৃথা। কিন্তু পরিমাণটা মাথায় রাখতে হবে। এই সময়টায় চা-কফিতে চিনি না খাওয়া বা সুগার ফ্রি ব্যবহার করা যেতে পারে। পাঁঠার বদলে মেনুতে মুরগি আর মাছ রাখা ভাল। ভাত-লুচির বদলে তরকারিটা বেশি খান। আর হাঁটুন। করতে পারলে মিষ্টি একটু বেশি হলেও আপত্তি নেই।” বেরিয়াট্রিক সার্জন বি রমন্নার অবশ্য পরামর্শ, উৎসবটাকে উৎসবের মতোই চেটেপুটে উপভোগ করতে হবে। এক মাস বিনা চিন্তায় কব্জি ডুবিয়ে খেলেও কোনও ক্ষতি নেই, যদি সারা বছর একটু নিয়মের মধ্যে চলা যায়। সুস্থ জীবনধারা, মেপে খাওয়া, রোজ হাঁটা বা ব্যায়ামের মতো কিছুটা শারীরিক পরিশ্রম করলে বিজয়া থেকে ভাইফোঁটা ৩০০ ক্যালরির ঘিয়ের লাড্ডু বা ২০০ ক্যালরির জিলিপি খাওয়া চলতেই পারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.