সাতটি নৌকা জোড়া লাগিয়ে তৈরি হয়েছে ময়ূরপঙ্খী বজরা। বিশালাকার সেই বজরায় চড়ে ভ্রমণে বেরিয়েছেন মা কালী। এমনই থিম রাজবাড়ি পাড়া স্পোর্টিং অ্যান্ড কালচারাল ক্লাবের পুজোয়। রাজবাড়ি দিঘিতে ভেসে বেড়াবে বজরা। দিঘির পাড়ে থাকবেন দর্শনার্থীরা। বজরাটি বিভিন্ন প্রান্তে ভেসে বেড়াবে। দিঘির পাড়ে দাঁড়িয়ে দেবী প্রতিমা দর্শন করবেন দর্শনার্থীরা। বজরা চালানোর জন্য বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত মাঝিও নিয়ে এসেছেন উদ্যোক্তারা। সাজানো হয়েছে দিঘির পাড়ও। জলপাইগুড়ি শহরের কালী পুজোর আয়োজন বরাবরই বৈচিত্রময়। রাজবাড়ির দিঘিতে বজরায় দেবী প্রতিমার অবস্থানের কিছুটা দূরেই তৈরি হয়েছে ওড়িশার একটি মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। ওড়িশা রাজ্যের লোকশিল্পের নির্দশন পাওয়া যাবে মণ্ডপে। শুধুমাত্র পাটকাঠি আর থার্মোকল দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে রায়কত পাড়া স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশনের। যে ক্লাব শহরে আরএসএ নামেই পরিচিত। বরাবরই শহরের বিগ বাজেটের পুজোগুলির মধ্যে আরএসএ অন্যতম স্থানে রয়েছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। নানাবিধ দূষণে আক্রান্ত শহুরে পরিবেশ থেকে সরিয়ে মণ্ডপের চারপাশে গ্রামের শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ তৈরি করেছেন আরএসএর উদ্যোক্তারা। গ্রাম্য পরিবেশের নিজস্বতা তুলে ধরতেই পাটকাঠি দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। তবে মণ্ডপের ভেতরে দর্শনার্থীদের জন্য চমক অপেক্ষা করে রয়েছে। পাটকাঠি-সহ নানান উপকরণ দিয়ে মণ্ডপের ভেতরে একাধিক হাতির প্রতিকৃতি থাকবে। ভেতরের চারপাশেই থাকবে নানান দৃশ্যপট। নাগরিক জীবনে বন্যপ্রাণিদের গুরুত্ব বোঝাতে মণ্ডপের একদিকে যেমন বনের ভেতরে হাতির পালের প্রতিকৃতি থাকবে তেমনিই অন্যদিকে গ্রামীণ পরিবেশ ফুটিয়ে তুলতে গ্রাম্য জীবনের নানান দৃশ্যরূপ থাকবে। ইসলামপুর থেকে শিল্পীরা এসে মণ্ডপ তৈরি করছে। মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আরএসএর দেবী প্রতিমার রঙও হবে পাটকাঠির আদলে। ছবিতে দেখা জাপানের একঝলক স্বচক্ষে দেখে নিতে পারেন জলপাইগুড়ির স্বস্তিকা ক্লাবের পুজো মণ্ডপে। জাপানের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে মন্ডপ। অতিকায় মণ্ডপের প্রতিটি অংশেই জাপানি সভ্যতার নির্দশন। সেই সঙ্গে বৌদ্ধদের প্রতিদিনকার জীবনের নানান আচার ব্যবহারের খুঁটিনাটি সাজানো রয়েছে স্বস্তিকার মণ্ডপে। কেবল মণ্ডপ বা সাজসজ্জাই নয়, দেবী প্রতিমাতেও জাপানি সভ্যতা তথা বৌদ্ধ সংস্কৃতির ছোঁয়া থাকবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। উদ্যোক্তাদের দাবি, স্বস্তিকার পুজো মন্ডপে এলে এক খন্ড জাপানের স্বাদ দর্শনার্থীরা পাবেন। শহরের বড় পুজো যেমন সঙ্ঘশ্রী, উদয়ন সঙ্ঘেও যেমন পুজোর তোড়জোড় চলছে, সমান তালে পাল্লা দিচ্ছে বামনপাড়া কালী পুজো কমিটি। পুজোর বৈশিষ্ট্য এলাকার ৫৫টি পরিবারের মহিলারা সারা বছর ঘরে টাকা জমিয়ে পুজোর আয়োজন করেছেন। ৫৫ মহিলার ঘট ভেঙে জোগাড় হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা। পুজোর জন্য প্রয়োজন বাকি টাকা স্বেচ্ছায় এলাকার বাসিন্দারা পুজো কমিটির কাছে জমা দিয়ে যাচ্ছেন। চাঁদা আদায়েরও প্রশ্ন নেই। শহরের ৫ নম্বর গুমটি এলাকার এই পুজোর আয়োজনে জমক তুলনামুলক ভাবে কম হলেও আন্তরিকতা রয়েছে সীমাহীন। |