মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনঘন উত্তরবঙ্গ সফরকে ঘিরে নানা ধরনের উন্নয়নের আশায় বুক বাঁধছেন দার্জিলিং ও লাগোয়া সমতলের মানুষ। এ বার উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও লাগোয়া সমতলে উন্নয়নে গতি আনার
প্রক্রিয়ায় সামিল হলেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীও।
বিজনবাড়িতে সাম্প্রতিক সেতু দুর্ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রীর দার্জিলিং সফরে সঙ্গী ছিলেন রেলমন্ত্রীও। সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড় ও লাগোয়া সমতলের নানা রেল প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে বিশদে আলোচনা করেন। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন উত্তরবঙ্গের জন্য একাধিক রেল প্রকল্পের কাজ শুরু করিয়েছেন মমতা। এ বার রেলমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় সেই সব রেল প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার উপরে জোর দেন তিনি। রেলের নানা প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চালু হলে অস্থায়ী ভাবে প্রচুর স্থানীয় কর্মসংস্থানের বিষয়টিও আলোচনায় ওঠে। এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাব বুঝে এক জন অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (এডিআরএম) নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। রেলমন্ত্রীর কথায়, “আমরা দার্জিলিং পাহাড় এবং লাগোয়া সমতলে রেল প্রকল্পগুলির কাজে আরও গতি আনতে চাইছি। সে জন্যই ওই নিয়োগের সিদ্ধান্ত।”
এ ছাড়া, টয় ট্রেনের লাইনের রক্ষণাবেক্ষণ, নিউ জলপাইগুড়িতে (এনজেপি) রেলের অ্যাক্সেল তৈরির কারখানা এবং সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত লাইন পাতার মতো একাধিক প্রকল্পের কাজ তরাণ্বিত করা এবং যাত্রী পরিষেবার মান বাড়ানোর জন্যও রেল-কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন দীনেশবাবু। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এক কর্তা জানান, ওই সব প্রকল্পের কাজে বা যাত্রী পরিষেবার মান বৃদ্ধিতে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলেও রেলমন্ত্রী তাঁদের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি, কোথায়, কী পরিমাণ রেলের জমি দখল হয়ে রয়েছে তা চিহ্নিত করার ব্যাপারেও তৎপর হয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। রেলমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দার্জিলিঙে রেলের তরফে রোপওয়ের কাজ তাড়াতাড়ি সম্পূর্ণ করার উপরেও জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ওই প্রকল্পটিকেও।
|
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা রেলমন্ত্রীর
আরও যে সব প্রকল্পে জোর
|
• পাহাড়ে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের ক্যাম্প অফিস।
• শিলিগুড়ি জংশন-সুকনা ব্রডগেজ লাইন।
• তিনধারিয়ায় ডিজেল লোকোর আধুনিকীকরণ ও ফিল্টার তৈরির কারখানা।
• কার্শিয়াঙের রেলের ছাপাখানার পুরুজ্জীবন ও একটি আইটিআই চালু। |
|
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রের খবর, এনজেপি সেকশনে আগে এক জন এডিআরএম ছিলেন। কিন্তু বছর দু’য়েক আগে ওই পদটি তুলে দেয় কাটিহার ডিভিশন। এখন পাহাড় ও
লাগোয়া সমতলে একাধিক প্রকল্পে গতি আনা এবং সুষ্ঠু ভাবে প্রকল্পগুলি পরিচালনার জন্য এডিআরএম পযমর্যাদার এক জন অফিসার থাকার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ফের ওই পদটি চালু হওয়ায় পাহাড় ও সমতলের রেল প্রকল্প ও পরিষেবার কাজে বাড়তি গতি আসবে বলে অনেক রেলকর্মীই আশা করছেন। সোমবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে রেল-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে এডিআরএম নিয়োগের নির্দেশ দেন রেলমন্ত্রী। তার পরেই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার কেশব চন্দ্র এক জন এডিআরএম-কে এনজেপি-র দায়িত্বে থাকার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দিয়েছেন।
|