তিন দুর্ঘটনায় দু’জেলায় মৃত ৮
হাসপাতালে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত সন্তানসম্ভবা
প্রসবযন্ত্রণা ওঠায় অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন মা। উল্টো দিক থেকে আসা বাসের ধাক্কায় মা-মেয়ে সহ মৃত্যু হল অ্যাম্বুল্যান্সের ৪ জনের। গুরুতর জখম ৩ জন।
মঙ্গলবার সকালে হুগলি জেলার গোঘাটের বালিবেলায় ওই দুর্ঘটনায় মৃতেরা হলেন আসন্নপ্রসবা ভারতী দাস (২০), তাঁর মা দুর্গা সিংহ (৪৫), ভারতীর বোনের শাশুড়ি ছবি দাস (৪৮) এবং অ্যাম্বুল্যান্সের চালক সুমন্ত মোকামি (২২)।
গোঘাটের নবাসন গ্রামে বাপের বাড়ি ভারতীর। শ্বশুরবাড়ি গোঘাটেরই সন্তোষপুর গ্রামে। দুর্গাপুজোর সময় থেকে তিনি ছিলেন বাপের বাড়িতে। মঙ্গলবার ভোরে ভারতীদেবীর বাপের বাড়ির লোকজন যোগাযোগ করেন গ্রামের আশা প্রকল্পের কর্মী বাসন্তী মালিকের সঙ্গে। তিনি স্থানীয় কামারপুকুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ‘নিশ্চয় যান’ আনানোর ব্যবস্থা করেন। প্রসবের ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে বাড়ি থেকে হাসপাতাল যাওয়ার জন্য নিখরচায় অ্যাম্বুল্যান্স (নিশ্চয় যান) পাওয়া যায়। ওই গাড়িতে চেপেই ভারতীকে নিয়ে তাঁর মা দুর্গাদেবী এ দিন সকালে রওনা দেন আরামবাগ হাসপাতালের উদ্দেশে। সঙ্গে ছিলেন ছবিদেবী, আর এক আত্মীয় মনোরঞ্জন পরামানিক, বাসন্তীদেবী এবং চালকের পরিচিত হারাধন রায় নামে এক ব্যক্তি।
দাদপুরে এই গাড়ি দুর্ঘটনার ফলেই মারা গিয়েছেন দু’জন। মঙ্গলবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার দিক থেকে পর্যটকদের নিয়ে আরামবাগ-রামজীবনপুর রাস্তা ধরে কামারপুকুরে যাচ্ছিল একটি বাস। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বালিবেলায় অ্যাম্বুল্যান্সটির সঙ্গে বাসের ধাক্কা লাগে। বিকট শব্দে ছুটে আসেন আশপাশের মানুষ। ভারতীদেবী, তাঁর মা ও ছবিদেবী ঘটনাস্থলেই মারা যান। মনোরঞ্জনবাবু এবং বাসন্তীদেবীকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাসিন্দা হারাধনবাবু আরামবাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হারাধনবাবু বলেন, “ওই প্রসূতি খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন সুমন্ত।” ভারতীদেবীর স্বামী শ্রীমম্ত পেশায় কৃষিজীবী। তিনি বলেন, “আমি সরাসরি হাসপাতালে পৌঁছে অপেক্ষা করছিলাম। বাবা হতে চলেছি বলে মনে খুব আনন্দ হচ্ছিল। কিছু ক্ষণের মধ্যেই শুনি, হাসপাতালের বাইরে হট্টগোল। দেখি, আমারই স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় আনা হচ্ছে। সঙ্গে শাশুড়ি-সহ জখম আরও কয়েক জন।” ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অভয় কুণ্ডু জানান, অ্যাম্বুল্যান্সটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। একটি লরিকে পাশ কাটিয়ে রাস্তার বাঁক ঘুরতে গিয়েই বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে।
বাসটি আটক করেছে পুলিশ। চালক পলাতক। বাসের যাত্রীদের পরে অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।
গোঘাটের দুর্ঘটনায় দুমড়ে যাওয়া অ্যাম্বুল্যান্স। মঙ্গলবার। ছবি: মোহন দাস
এ দিনই বেলা ১১টা নাগাদ হুগলির দাদপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’জনের। কালীপুজো উপলক্ষে পাণ্ডুয়ার গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন কলকাতার তালতলার বাসিন্দা আনন্দমোহন কুমার (৭৫)। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বৌদি ও ও এক নাতি। দাদপুরের মহেশ্বরপুর মোড়ে একটি ট্রেলার পিছন দিকে থেকে আনন্দবাবুর গাড়িতে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যান বৃদ্ধ। মৃত্যু হয় গাড়ি চালক শক্তিবালি সিংহেরও (৫৫)। আহতদের চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার গোবিন্দপুরেও এ দিন সকালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কলকাতা থেকে শিলিগুড়িগামী বাস উল্টে দু’জন মারা গিয়েছেন। পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন, বিশ্বজিৎ ওঁরাও (৩৫) ও জ্যোতিষ রায় (৩৬)। দু’জনেরই বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.