|
|
|
|
বিমা মজুত, প্রচার নেই |
রান্নার গ্যাস থেকে দুর্ঘটনায় ‘প্রথম’ ক্ষতিপূরণ রাজ্যে |
সুনন্দ ঘোষ • কলকাতা |
ব্যবস্থা আছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না!
অথচ তা জানার সুবাদেই বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণ পেয়ে গেলেন সোদপুরের বাবলি দাস।
রান্নাঘরের এলপিজি সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করায় সোদপুরের স্কুল রোডের বাসিন্দা বাবলিদেবীর স্বামী সুনীত দাস (৪৫) ও শ্বশুর সনৎ দাস (৮৩) মারা গিয়েছিলেন। ঘটনার এক বছর বাদে বিমা সংস্থা সেই দুর্ঘটনার জন্য ১১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে বাবলিদেবীকে। সংশ্লিষ্ট গ্যাস সংস্থাটির দাবি: পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম এক জন এ জাতীয় দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। বাবলিদেবীকে ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণের চেক পাঠানো হয়েছে বলে বিমা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।
বস্তুত রান্নাঘরে গ্যাস দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ-বিমার ব্যবস্থা যে রয়েছে, অধিকাংশ মানুষই তা জানেন না। এমনকী, ওই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য বিমার প্রিমিয়াম গ্রাহককেও দিতে হয় না, তার দায় সংশ্লিষ্ট গ্যাস সংস্থার। যা গত ১৫ বছর ধরে তারা দিয়ে আসছে।
তথ্যটা বাবলিদেবীরও জানা ছিল না। সোদপুরের এক সংগঠন তাঁর সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল। তাদের মারফতই বাবলিদেবী খবরটি পান। ওই সংগঠনের সম্পাদক বিষাদ বসু জানিয়েছেন, “এক বছর ধরে বিস্তর ছোটাছুটি করতে হয়েছে। পাঁচ রকমের ফর্ম ভরতে হয়েছে। ফর্মগুলো আবার আনাতে হয়েছে বিমা কোম্পানির কাছ থেকেই!” বিমার টাকা পাওয়ার জন্য মৃত সনৎবাবু-সুনীতবাবুর ময়নাতদন্ত ও সুরতহালের রিপোর্টও জমা দিতে হয়েছে।
গ্যাস ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজনবিহারী বিশ্বাস জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা-বিমা সব ডিলারেরই থাকে। তাতে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে গ্রাহক সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পেতে পারেন। অন্য দিকে ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত গ্যাস ও হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম--- এই তিন গ্যাস প্রস্তুতকারী সংস্থা ও ডিলারেরা মিলিত ভাবে যে বিমা করেছে, তাতে গ্যাস-দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ লক্ষ এবং চিকিৎসা-খরচ বাবদ এক লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। সম্পত্তি নষ্ট হলে তার ক্ষতিপূরণও গ্রাহক পেতে পারেন।
রাজ্যে এর আগে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। যদিও গত পনেরো বছরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কোনও গ্রাহক ওই বিমার টাকা পাননি। অথচ দেশের সব গ্যাস-গ্রাহকের জন্য এ বছরে বিমা সংস্থাকে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে গ্যাস সংস্থাগুলোর দাবি। ইন্ডিয়ান অয়েলের চিফ ম্যানেজার (এলপিজি) অভিজিৎ দে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে বাবলিদেবীই প্রথম এই বিমার অর্থ পাচ্ছেন। তাঁর আক্ষেপ, “নিয়ম হল, ডিলার তাঁর প্রত্যেক গ্রাহকের বাড়িতে বছরে এক বার লোক পাঠিয়ে যাচাই করবে, রান্নাঘরে সব ঠিকঠাক রয়েছে কি না। কিন্তু কার্যত তা হয়ে ওঠে না। এটা করা থাকলে বিমার টাকা পেতে আরও সুবিধা হতে পারে।”
পরিদর্শন নিয়মিত হয় না কেন?
বিজনবাবুর বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে ডিলারদের অনীহা রয়েছে। তবে ইদানীং কাজ হচ্ছে। |
|
|
|
|
|