|
|
|
|
প্রশ্ন ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে |
মধ্যস্থদের প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার এবং মাওবাদীদের কাছে কয়েক দফা প্রস্তাব পাঠালেন সরকার-নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারীরা। তবে সরকারের তরফে এই পদক্ষেপকে মোটেই ভাল চোখে দেখা হচ্ছে না। বরং এর মধ্যে দিয়ে মধ্যস্থতাকারীরা নিজেদের ‘নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি’ নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন বলে মনে করছে মহাকরণ।
সোমবারই মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব আসে রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষের কাছে। একই দিনে প্রস্তাবটি পাঠানো হয় মাওবাদীদের কাছেও। তাতে বলা হয়: মাওবাদীদের অস্ত্রের প্রদর্শন, হুমকি ও খুন বন্ধ করতে হবে। জঙ্গলমহলে কোনও গোষ্ঠীর কাছেই যাতে অস্ত্র না থাকে, তা নিশ্চিত করতে অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করতে হবে। যৌথ বাহিনীর সক্রিয়তা বন্ধ রাখতে হবে। নিরীহ গ্রামবাসীদের উপরে পুলিশি হানা বন্ধ রাখতে হবে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, মধ্যস্থতাকারীদের এই কয়েক দফা প্রস্তাবের সঙ্গে দু’পক্ষই নিজেদের মতো করে কিছু সংশোধন বা সংযোজন করতে পারে। তার পরেই তিন পক্ষের মধ্যে আলোচনায় বসা সম্ভব হবে।
সরকার-নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব নিয়ে মাওবাদীদের বক্তব্য জানা যায়নি। কিন্তু রাজ্য সরকার একে মোটেই ভাল চোখে দেখছে না। উল্টে মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকা নিয়ে সরকারের মনোভাব অত্যন্ত কঠোর। মঙ্গলবার সরকারের এক শীর্ষ কর্তা মন্তব্য করেন, “উপদেশ বা পরামর্শ দেওয়া মধ্যস্থতাকারীদের কাজ নয়। তাদের কাজ হল, একের বক্তব্য অপরের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং আলোচনার পরিস্থিতি তৈরি করা।”
গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাওবাদীদের তরফে এক মাসের জন্য পারস্পরিক অস্ত্র সংবরণের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও হিংসা থামেনি বলে সরকারের বক্তব্য। ১৫ অক্টোবর ঝাড়গ্রামে গিয়ে অস্ত্র সংবরণের জন্য মাওবাদীদের সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবিষ্যতে কড়া পদক্ষেপ করারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সেই সময়সীমা অতিবাহিত হওয়ার পরেও মাওবাদীরা অস্ত্র সংবরণের ব্যাপারে আর কিছু জানায়নি। পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর অভিযান নতুন করে শুরু না হলেও রাজ্যও তার বক্তব্য থেকে সরে আসেনি। মহাকরণের মতে এখন এই অবস্থায় অভিযান বন্ধ রাখা, পুলিশি হানা স্থগিত রাখা, অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার মতো প্রস্তাবের আড়ালে কার্যত সরকারকেই সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মধ্যস্থতাকারীরা। সরকারের ওই মুখপাত্র বলেন, “প্রস্তাবে মাওবাদীদের দাবি মতো যৌথ বাহিনীর অভিযান বন্ধ রাখা, গ্রামে পুলিশি হানা স্থগিত রাখার উল্লেখ রয়েছে। সেই সঙ্গে যে কোনও গোষ্ঠীর হাতে থাকা অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার কথা বলে মধ্যস্থতাকারীরা মাওবাদীদের সঙ্গে অন্যদের এক বন্ধনীতে ফেলতে চাইছেন। কার্যত বোঝাতে চাইছেন, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে জঙ্গলমহলে যে রাজনৈতিক শক্তি (যেমন তৃণমূল) রয়েছে, তারাও সশস্ত্র।” এই কারণেই মধ্যস্থতাকারীদের ‘নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি’ অটুট আছে বলে মনে করছে না সরকার। বরং তাঁরা খানিকটা মাওবাদীদের মতোই কথা বলছেন বলে মন্তব্য করেন মুখপাত্রটি।
মাওবাদীরা বাস্তবিকই এখন তৃণমূলের ভৈরব বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ আনছে। তারা দাবি করছে যে, সিপিএমের ‘হার্মাদ’দের টাকার বিনিময়ে দলে নিয়ে ‘ভৈরব বাহিনী’ গড়ছে তৃণমূল। দিন তিনেক আগেই গোয়ালতোড়ের পিংবনিতে এক জনসভায় মাওবাদীদের সঙ্গে সিপিএমের ‘হার্মাদ বাহিনী’র যোগসাজশ নিয়ে সরব হয়েছিলেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী। এ দিন সংবাদমাধ্যমে চার পাতার বিবৃতি পাঠিয়ে তারই ‘জবাব’ দিয়েছে মাওবাদীরা। সেখানে সিপিআই (মাওবাদী)-র পক্ষে লালগড় জোনাল কমিটির নেতা রিলামালা বেসরা অভিযোগ করেন যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার এবং বন্দিমুক্তির ব্যাপারে নির্বাচন-পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতি রাখেনি তৃণমূল। যৌথ বাহিনী ও ‘ভৈরব বাহিনী’র মাধ্যমে সন্ত্রাস চালানো হলে তৃণমূলের পরিণতি সিপিএমের মতোই হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
|
কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ থানায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোয়ালতোড় |
আবার জনগণের কমিটির ‘উৎপাত’ শুরুর অভিযোগ জমা পড়েছে গোয়ালতোড় থানায়। মঙ্গলবার এই অভিযোগ জমা পড়ে। জামিনে মুক্ত কমিটির পাটাশোল অঞ্চলের নেতা গোপাল পাণ্ডের নেতৃত্বে এলাকাবাসীর কাছ থেকে মোটা টাকা চাঁদা দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের পক্ষে ডিএসপি অনীশ সরকার অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। |
|
|
|
|
|